টেমসসুরমানিউজডেক্স: ইসলামফোবিয়া অ্যাওয়ারনেস মান্থ (নভেম্বর) উপলক্ষে ইস্ট লন্ডন মসজিদের উদ্যোগে ও মুসলিম কাউন্সিল অব বৃটেনের সহযোগিতায় এক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে । গত ২৯ নভেম্বর সোমবার সন্ধ্যায় লন্ডন মুসলিম সেন্টারের নিচ তলায় অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে যুক্তরাজ্যস্থ বসনিয়ান রাষ্ট্রদূত ভানিয়া ফিলিপোভিচ এবং মিডল ইস্ট আই’র পুরস্কার বিজয়ী সাংবাদিক, লেখক ও কলামিস্ট পিটার ওবোর্ন উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া ভিডিও বার্তায় বক্তব্য রাখেন মুসলিম কাউন্সিল অব বৃটেনের সেক্রেটারি জেনারেল জারা মোহাম্মদ এবং লেখক ও গবেষক ডক্টর জেরেমি হেনজেল-থমাস।
ইস্ট লন্ডন মসজিদের ট্রাস্টি ড. আব্দুল্লাহ ফলিকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে বসনিয়ান রাষ্ট্রদূত বলেন, ৯০ এর দশকে আমরা যারা বেঁচেছিলাম তাঁরা বসনিয়ার বর্তমান পরিস্থিতি দেখে বুঝতে পারছি সামনে ঝড় আসছে । সাম্প্রতিক সময়ে রাজনৈতিক বিভেদ ও জাতিয়তাবাদের উত্থান ভবিষ্যতে একটি কনফ্লিক্টের আভাস দিচ্ছে । ঘৃণা ও বিভেদ সৃষ্টিকারি বক্তব্য গত ১৫ বছর ধরে সাধারণ পর্যায়ে চলমান থাকলেও তা এখন রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে চলে গেছে । ফলে বসনিয়ার কষ্টার্জিত শান্তি হুমকীর সম্মুখিন হয়ে পড়েছে ।
রাষ্ট্রদূত আরো বলেন, বিগত ২৬ বছর বসিনয়ায় গণতন্ত্র সক্রিয় থাকার একমাত্র কারণ হচ্ছে সেখানে আন্তর্জাতিক কমিউনিটির উপস্থিতি । ‘ডেয়টন পিস’ চুক্তির মাধ্যমে এটা সম্ভব হয়েছিলো । কিন্তু যেসব কারণে ৯৫ সালে বসিনয়ায় গণহত্যা সংঘটিত হয়েছিলো সে কারণগুলো এই চুক্তির মাধ্যমে এখন পর্যন্ত তুলে ধরা সম্ভব হয়নি।
বিশিষ্ট সাংবাদিক পিটার ওবোর্ন সতর্ক করে দিয়ে বলেন, স্রেব্রেনিসা গণহত্যা থেকে শিখতে হবে । তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মানিতে ঘটে যাওয়া নৃশংসতার উদাহরণ দেন এবং কিভাবে তারা হলোকাস্টের সময় সংঘটিত জঘন্য অপরাধের প্রায়শ্চিত্ত এবং সংশোধন করেছিল তা তুলে ধরেন ।
ড. আব্দুল্লাহ ফলিক বলেন, আমি বিগত দুই দশক ধরে স্রেব্রেনিসা গণহত্যা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করে আসছি। কিন্তু বর্তমানে বসনিয়া-হার্জেগোভিনায় যা ঘটছে তা নিয়ে গুরুতর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ।
গোলটেবিল বৈঠকটি প্রশ্নোত্তর পর্বের মাধ্যমে শেষ হয় । এতে বসনিয়া-হারজোগোবিনার ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা বন্ধ করতে কী করা যেতে পারে-তা নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন উত্থাপিত হয় । শেষে রাষ্ট্রদূতের সম্মানে বিশেষ নৈশভোজ অনুষ্ঠিত হয় । এতে রাষ্ট্রদূত ছাড়াও দূতাবাসের কর্মকর্তা, কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও মিডিয়াকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন । নৈশভোজ শেষে ইস্ট লন্ডন মসজিদের সদ্যনির্বাচিত চেয়ারম্যান আইয়ুব খান রাষ্ট্রদূতের হাতে মসজিদের পক্ষ থেকে বিশেষ উপহার সামগ্রী তুলে দেন।