এসাইলাম হোটেলে বিলিয়ন পাউন্ড অপচয়: হোম অফিসের তীব্র সমালোচনা এমপিদের

ব্রিটেনের হোম অফিস আশ্রয়প্রার্থীদের থাকার ব্যবস্থা করতে গিয়ে বিলিয়ন পাউন্ড অপচয় করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে সংসদের হোম অ্যাফেয়ার্স কমিটির এক প্রতিবেদনে। কমিটি বলেছে, ত্রুটিপূর্ণ চুক্তি ও অদক্ষ ব্যবস্থাপনার কারণে বিভাগটি আশ্রয়প্রার্থীদের সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে খাপ খাওয়াতে ব্যর্থ হয়েছে এবং হোটেলগুলোকে সাময়িক সমাধানের বদলে স্থায়ী ব্যবস্থা হিসেবে ব্যবহার করছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৯ থেকে ২০২৯ সালের মধ্যে আশ্রয়প্রার্থীদের থাকার জন্য নির্ধারিত ব্যয় তিনগুণ বেড়ে ১৫.৩ বিলিয়ন পাউন্ডে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে কিছু বেসরকারি ঠিকাদার এখনো অতিরিক্ত মুনাফার অর্থ ফেরত দেয়নি, যা সরকার আদায় করতেও ব্যর্থ হয়েছে।

বর্তমানে যুক্তরাজ্যে প্রায় এক লাখ তিন হাজার আশ্রয়প্রার্থীকে সরকার আশ্রয় দিচ্ছে, যার মধ্যে প্রায় বত্রিশ হাজার মানুষ ২১০টি হোটেলে অবস্থান করছে। এই হোটেল ব্যবস্থাকে এমপিরা ব্যয়বহুল, স্থানীয় সম্প্রদায়ের কাছে অজনপ্রিয় এবং আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য অনুপযুক্ত বলে বর্ণনা করেছেন। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, কনজারভেটিভ সরকারের সময় বেসরকারি ঠিকাদারদের সঙ্গে করা আবাসন চুক্তিগুলো ত্রুটিপূর্ণ ছিল এবং হোম অফিস যথাযথ তদারকি করতে ব্যর্থ হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে সেবা ব্যর্থতা সত্ত্বেও ঠিকাদারদের কোনো আর্থিক জরিমানা করা হয়নি এবং অতিরিক্ত মুনাফা এখনো ফেরত নেওয়া হয়নি।

কমিটি বলেছে, এই অর্থ জনগণের সেবায় ব্যয় হওয়া উচিত ছিল, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে নয়। হোম অ্যাফেয়ার্স কমিটির চেয়ার ডেম কেরেন ব্র্যাডলি বিবিসি রেডিও ৪-কে বলেন, চুক্তিগুলো যত সংখ্যক মানুষকে রাখার সক্ষমতা ছিল, বাস্তবে তার চেয়ে অনেক বেশি মানুষ আশ্রয় চেয়েছে। ফলে ব্যয় কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। তিনি বলেন, সরকার এখন মাত্র শুরু করেছে অতিরিক্ত মুনাফা ফেরত আনার ও নিরীক্ষা করার কাজ। ব্র্যাডলি আরও বলেন, নেতৃত্বের ব্যর্থতা এবং দক্ষতার অভাবের কারণে হোম অফিস পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ নিতে পারেনি এবং তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ার ওপর নির্ভর করেছে।

এদিকে হাউজিং সেক্রেটারি স্টিভ রিড পূর্ববর্তী কনজারভেটিভ সরকারকে দোষারোপ করে বলেছেন, তারা করদাতাদের অর্থ অপচয় করেছে। তিনি জানান, বর্তমান লেবার সরকার অচল সামরিক ঘাঁটিগুলোতে আশ্রয়প্রার্থীদের রাখার পরিকল্পনা করছে, যা হবে সবচেয়ে কম ব্যয়বহুল বিকল্প। বর্তমানে এসেক্সের প্রাক্তন আরএএফ ঘাঁটি এমডিপি ওয়েদার্সফিল্ড এবং কেন্টের ন্যাপিয়ার ব্যারাকে আশ্রয়প্রার্থীদের রাখা হচ্ছে। ডেম কেরেন ব্র্যাডলি সরকারের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও তিনি সতর্ক করে বলেন, অতীতের মতো তাড়াহুড়ো করে মানুষ স্থানান্তরিত করলে নতুন সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।

error: