নেদারল্যান্ডসকে বিদায় করে ইউরোর ফাইনালে ইংল্যান্ড

ম্যাচের শুরুতেই নিজেদের জাল থেকে বল কুড়িয়ে আনার ধাক্কা দ্রুত সামলে নিল ইংল্যান্ড। পাল্টা জবাব দেওয়ার পর গতিময় ফুটবল আর ধারাল আক্রমণে বারবার ভীতি ছড়াল দলটি। সেই তারাই আবার দ্বিতীয়ার্ধে ছন্দ হারিয়ে ধুকতে থাকল। দলকে পথে ফেরাতে দারুণ দুটি পরিবর্তন আনলেন গ্যারেথ সাউথগেট এবং কাজে লেগে গেল সেটাই। শেষ সময়ে দারুণ এক গোলে ব্যবধান গড়ে দিলেন ওলি ওয়াটকিন্স। নেদারল্যান্ডসকে বিদায় করে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠল গতবারের রানার্সআপরা।

ডর্টমুন্ডের সিগন্যাল ইদুনা পার্কে নেদারল্যান্ডসকে ২-১ গোলে হারিয়েছে ইংল্যান্ড। ম্যাচটিতে ইংলিশদের হয়ে একটি করে গোল করেছেন হ্যারি কেইন ও ওলি ওয়াটকিনসন। আর ডাচদের হয়ে গোল করেছেন জাভি সিমোন্স।

এদিন ৫৯ শতাংশ বল দখলে রেখে ৯টি শট নেয় ইংল্যান্ড। যার মধ্যে লক্ষ্যে ছিল ৫টি। অন্যদিকে ৪১ শতাংশ বল নিয়ন্ত্রণে রেখে ৭টি শট নেয় নেদারল্যান্ডস, যার দুটি ছিল লক্ষ্যে।

ম্যাচের সপ্তম মিনিটেই জাভি সিমোন্সের গোলে লিড নেয় ডাচরা। বক্সের সামান্য দূর থেকে দুর্দান্ত শটে ইংলিশদের জাল কাঁপিয়ে দেন তিনি। তার নেয়া শটটি আটকানোর চেষ্টা করেছিলেন ইংলিশ গোলরক্ষক পিকফোর্ড। কিন্তু বলের গতির কাছে পরাস্ত হন তিনি।

১৩তম মিনটে ডাচদের গোলপোস্টে কোনাকুনি শট নেন হ্যারি কেইন। কিন্তু নেদারল্যান্ডসের গোররক্ষক সেটি ফিরিয়ে দেন। পরের মিনিটেই ডাচদের ভুলে দুর্দান্ত সুযোগ তৈরি করে ইংলিশরা। কিন্তু বক্সে ঢুকেও জটলার কারণে সফলতা পায়নি গ্যারেথ সাউথগেটের শিষ্যরা।

১৫তম মিনিটে বক্সের মধ্যে কেইনকে ফাউল করেন ডাচ ডিফেন্ডার ডামফ্রিস। শুরুতে অবশ্য রেফারি ফাউল না দিলেও পরে ভিএআর চেকে পেনাল্টি পায় ইংল্যান্ড। স্পটকিক থেকে কোনাকুটি শটে দলকে সমতায় ফেরান কেইন।

ম্যাচের ২৩তম মিনিটে নেদারল্যান্ডস গোলরক্ষকে বোকা বানিয়ে বল পাঠিয়ে দেন গোলপোস্টে। কিন্তু গোল লাইন থেকে বলটি ফিরিয়ে দেন ডাচ ডিফেন্ডার।

ম্যাচের ৩০তম মিনিটে কর্নার থেকে নেয়া শটে দারুণ হেড নেন ডামফ্রিস। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে ক্রসবারে লেগে বলটি ফেরত চলে আসে। এর মিনিট দুয়েক পরই সাকার পাস থেকে বাঁ-পায়ের বাঁকানো শটে ডাচ গোলপোস্টে বল পাঠানোর চেষ্টা করেন ফোডেন। তবে তার শটটি গোল বার ঘেষে বেরিয়ে যায়।

৩৯তম মিনিটে ফোডেনের কোনাকুনি শট আটকে দেন ডাচ গোলরক্ষক। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে (৪৫+৩) আক্রমণে ওঠে ডাচরা। কিন্তু জটলার ইংলিশদের ডেডলক ভাঙতে পারেনি তারা। শেষ পর্যন্ত গোল না হওয়ায় ১-১ সমতায় বিরতিতে যায় দুই দল।

দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণে ধার বাড়ায় ডাচরা। একের পর এক আক্রমণে ওঠে দলটি। তবে ইংলিশদের ডেডলক ভাঙতে না পেরে কাঙ্ক্ষিত লিডের দেখা পাচ্ছিল না তারা।

ম্যাচের ৬৪তম মিনিটে সিমোন্সকে ফাউল করেন গুয়েহি। এতে ডাইরেক্ট ফ্রি কিক পায় ডাচরা। সেই সুযোগে ভারম্যানের ফ্রি কিক নিয়ে ইংলিশদের গোলপোস্ট লক্ষ্য করে শট নেন ভন ডাইক। তবে দারুণ বুদ্ধিমত্তায় সেই শটটি ফিরিয়ে দেন পিকফোর্ড।

ম্যাচের ৭৭তম মিনিটে ইংলিশদের আরেক দফা রক্ষা করেন পিকফোর্ড। সিমোন্সের নেয়া ভলি তালুবন্দী করেন এই ইংলিশ গোলরক্ষক। ৭৯তম মিনিটে পাল্টা আক্রমণে উঠে ডাচদের জাল কাঁপিয়ে দেন বুকায়ো সাকা। কিন্তু অফসাইড হওয়ার কারণে তার গোলটি বাতিল হয়ে যায়। 

অতিরিক্ত সময়ে (৯০+১) কোল পালমারের ডিফেন্স চেরা পাস থেকে কোনাকুনি শটে বল জালে জড়িয়ে দেন ওলি ওয়াটকিনস। তার গোলেই ইংলিশদের জয় নিশ্চিত হয়। এই জয়ে দ্বিতীয় দল হিসেবে চলমান ইউরোর ফাইনালে জায়গা করে নিলো গ্যারেথ সাউথগেটের শিষ্যরা।

আগামী ১৫ জুলাই ইউরোর ফাইনালে মুখোমুখি হবে স্পেন ও ইংল্যান্ড।

error: