বিদ্রোহী গ্রুপগুলোর সঙ্গে আলোচনায় প্রস্তুত মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সিনিয়র জেনারেল মিং অং হ্লাইং। চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং-এর সঙ্গে আলোচনায় তিনি এমন কথা জানিয়েছেন। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্ত অঞ্চলের বিদ্রোহী গ্রুপগুলোর সঙ্গে এই আলোচনার প্রস্তাব তিনি এবারই প্রথম দিলেন না। এর আগেও দিয়েছেন। কিন্তু তাতে সাড়া মেলেনি। চীন সফরে গিয়ে সেখানে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা জানান অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও বাণিজ্যের জন্য স্থিতিশীলতা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এ খবর দিয়েছে অনলাইন রেডিও ফ্রি এশিয়া। এতে বলা হয়, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতা দখল করার পর প্রথমবার এ সপ্তাহে চীনের কুনমিং সফরে গিয়েছেন সামরিক জান্তা মিন হ্লাইং। তার অভ্যুত্থানের ফলে সামরিক শাসনের উপযোগিতা ও স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে এবং দেখা দিয়েছে সশস্ত্র বিদ্রোহ। মিয়ানমারে ব্যাপক অর্থনৈতিক স্বার্থ আছে চীনের। এর মধ্যে আছে জ্বালানি বিষয়ক পাইপলাইন। এর মধ্য দিয়ে তারা ভারত মহাসাগর থেকে চীনের দক্ষিণে ইউনান প্রদেশে গ্যাস নিয়ে যায়। এ জন্য তারা মিয়ানমারের উত্তাল অবস্থার ইতি চায়। সেনাবাহিনী পরিচালিত গ্লোবাল নিউ লাইট অব মিয়ানমার জেনারেল মিন অং’কে উদ্ধৃত করে বলেছে, যদি (বিদ্রোহীরা) প্রকৃত শান্তি চায় তাহলে সবসময় (আমার) দরজা উন্মুক্ত।
বুধবার চীনের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন। চীনের সঙ্গে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্ত শান রাজ্যে বিদ্রোহীদের একটি জোট গত বছর ২৭শে অক্টোবর থেকে আক্রমণ চালিয়ে কমপক্ষে ৫টি বড় বাণিজ্যিক ক্রসিং পয়েন্ট নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। মিয়ানমারের অন্য স্থানগুলোতে যেসব বিদ্রোহী মিত্ররা আছে তারাও আক্রমণাত্মক। তাদের সবার পক্ষ থেকে অপ্রত্যাশিত চাপে রয়েছে সামরিক জান্তা।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই বিরোধ মিটাতে ব্যর্থতার কারণে জান্তা সরকারের ওপর হতাশ হয়ে পড়েছে চীন। এ জন্য তারা জান্তা সরকারের সঙ্গে যেমন, তেমনি দেশের উত্তরাঞ্চলে ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে জান্তাবিরোধী বিদ্রোহী গ্রুপগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। উভয় পক্ষকে সমঝোতার আহ্বান জানাচ্ছে। যুদ্ধ বন্ধের জন্য বিদ্রোহীদের ওপর চাপ দিচ্ছে চীন। সীমান্তের ক্রসিং পয়েন্ট বন্ধ করে দিচ্ছে তাদের ওপর চাপ বৃদ্ধির জন্য। কোনো কোনো স্থানে যুদ্ধের কারণে পলায়নরত সাধারণ মানুষদের জন্য সীমান্তের অনেক পয়েন্ট বন্ধ করে দিয়েছে চীন। চীনের বার্তা সংস্থা সিনহুয়ার মতে প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং বলেছেন, রাজনৈতিক পুনরেকত্রীকরণ ও পরিবর্তনে সমর্থন করে চীন। চায়না-মিয়ানমার ইকোনমিক করিডোর নির্মাণে প্রস্তুত তারা।