টেমসসুরমাডেক্স: জুলাই বিপ্লবের তীব্র আন্দোলনে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন আওয়ামী লীগের নেতারা। ক্ষমতায় থাকাকালীন বিদেশে তৈরি করা সেকেন্ড হোমে আশ্রয় নিয়েছে দলটির শীর্ষ নেতারা।সক্রিয় রাজনীতিতে ফিরতে সেখান থেকে চেষ্টা করছেন তারা। বিভিন্ন উপলক্ষে একসঙ্গে মিলিত হতে দেখা যায় তাদের।
গত রবিবার লন্ডনে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুকের ছেলে ফাইয়াজ রহমানের বিয়ের অনুষ্ঠানে দেখা গেছে পতিত আওয়ামী সরকারের সাবেক অন্তত চারজন মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীকে। যেখানে নেতার ছেলের বিয়ে উপলক্ষে একসঙ্গে মিলিত হয়ে ভুরিভোজ সারতেও দেখা গেছে তাদের।
বিয়েতে অংশ নেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী আবদুর রহমান, সাবেক নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান–বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী। সিলেট–৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিবও এই বিয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
গত বছরের ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক চার মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীকে এই প্রথম একসঙ্গে কোনো অনুষ্ঠানে দেখা মিলল তাদের। এর আগে গত বছরের ৮ ডিসেম্বর লন্ডনে শেখ হাসিনার ভার্চ্যুয়াল সমাবেশে প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে দেখা যায় সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আবদুর রহমান এবং সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরীকে।
এ বছরের ২ ফেব্রুয়ারি লন্ডনে আওয়ামী লীগের কর্মী সমাবেশে দেখা যায় সাবেক প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীকে। ৩০ মার্চ লন্ডনে ঈদের জামাতে প্রকাশ্যে আসেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। আগে থেকে গুঞ্জন ছিল তিনি বেলজিয়ামে ছিলেন। লন্ডনে অধ্যয়নরত ছেলের সঙ্গে ঈদ করতে তিনি লন্ডনে আসেন।
আওয়ামী লীগ নেতার ছেলের বিয়েতে সাবেক মন্ত্রীদের উপস্থিতিতে উষ্মা প্রকাশ করতে দেখা যায় যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যুক্তরাজ্য যুবলীগের এক নেতা জানান, দেশে আওয়ামী লীগ ও বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের লাখ লাখ নেতাকর্মীকে বিপদের মুখে ফেলে পালিয়ে এসে তারা কীভাবে এসব অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন, তা ভাবতেও লজ্জা লাগে।
এদিকে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মতো দলটির বেশিরভাগ নেতা এখন অবস্থান করছেন প্রতিবেশী দেশ ভারতে। সেখানে সংঘবদ্ধ হওয়ার চেষ্টা করছেন তারা। সেখানে থেকে বাংলাদেশে অবস্থানরত নেতাকর্মীদের বিভিন্ন দিকনির্দেশনাও দিচ্ছেন এসব নেতা। যা মেনে সম্প্রতি রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় মিছিলও করেছেন দলটির নেতাকর্মীরা।