টেমসসুরমাডেক্স: ব্রিটেনে বাংলাদেশী কারী ইন্ড্রাস্ট্রির বৃহত্তম সংগঠন বাংলাদেশ ক্যাটার্রাস অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএ) আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের বার্ষিক অ্যাওয়ার্ডস সিরিমনি চালু করেছে। চলতি বছরের ২৮ অক্টোবর বিসিএ অ্যাওয়ার্ডসের অনুষ্ঠানে সকল শাখার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা ও অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হবে। এ উপলক্ষে গত সেপ্টেম্বর দুপুর ১টায় সেন্ট্রাল লন্ডনের মিলিনিয়াম হোটেলে বিসিএ এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সবাদ সম্মেলনে বিসিএ অ্যাওয়ার্ডসের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন- প্রেস ও পাবলিকেশন সেক্রেটারী নাজ ইসলাম। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন বিসিএর প্রেসিডেন্ট ওলি খান এমবিই, জেনারেল সেক্রেটারী মিঠু চৌধুরী, চিফ ট্রেজারার টিপু রহমান , অর্গানাইজিং সেক্রেটারী ফরহাদ হোসেন টিপু।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন শেফ ও দ্যা ইয়ার এর কনভেনার আতিক রহমান ও বিসিএর সাবেক প্রেসিডেন্ট কামাল ইয়াকুব, ভাইস প্রেসিডেন্ট ফায়জুল হক ও সৈয়দ হাসান , অর্গানাইজিং সেক্রেটারী ফরহাদ হোসেন টিপু, বিবিসিআই এর প্রেসিডেন্ট রফিক হায়দার, জেষ্ঠ্য সাংবাদিক নবাব উদ্দিন, লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক তাইছির মাহমুদ ও শেফ ও দ্যা ইয়ার এর হেড শামসুল আলম খান, কোবরা বিয়ার এর রিপ্রেজেন্টেটিভ ররি ন্যালোর, কিং ফিশার বিয়ার এর মিস্টার সানদ্বীপ, গোয়াভা পে এর সৈয়দ বুকারী প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয় , আজ ৫ সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৪ সালের কার্যক্রমটি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে যুক্তরাজ্যের সেরা রেস্টুরেন্ট, টেকওয়ে ও সেরা শেফদের খুঁজে বের করার উদ্যোগটি আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো। আগামী ২৮ অক্টোবর বিসিএ অ্যাওয়ার্ডস ২০২৪ এর অনুষ্ঠানে সকল শাখার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা ও অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হবে। বর্ণাঢ্য এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন বৃটেনের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা ও বিশিষ্টজনেরা। ১৭তম বিসিএ এওয়ার্ডস এর শ্লোগান হচ্ছে-‘ইউনিটিং হেরিটেজ উইথ ফ্রেশ পার্সপেক্টিভ’।
বৈশ্বিক অর্থনীতি ও নানাবিদ পরিবর্তনের এই সময়ে বিসিএ বৃটেনের কারী ইন্ড্রাস্ট্রির বিস্তীর্ণ ভবিষ্যত চিন্তাকে গুরুত্ব দিয়ে বিশেষ করে মহিলা ও তরুণ শেফদের জন্য একটি উত্তরাধিকারী , যোগ্যস্থান নিশ্চিত করতে চায়। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে কারি ইন্ড্রাস্ট্রির তরুণ প্রতিভাবানদের উৎসাহিত ও তাদের কর্মের স্বীকৃতি দেয়ার জন্য বিসিএ এই প্রথমবারের মতো চালু করেছে- ইউকে দ্যা বেস্ট ইয়াং কারী শেফ অ্যাওয়ার্ড। আমরা সচেতনভাবে বিশ্বাস করি, এটি হবে অত্যন্ত ইতিবাচক, চমকপ্রদ- যা কারী ইন্ড্রাস্ট্রির জন্য একটি উজ্জ্বল বার্তা বহন করবে। ১৯৬০ সালে প্রতিষ্ঠিত বিসিএ একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। যুক্তরাজ্যে প্রায় ১২০০০ রেস্টুরেন্ট ও টেকওয়ে এর প্রতিনিধিত্বশীল এই প্রতিষ্ঠানটি বৃটেনের বাংলাদেশী রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ীদের সুনিদৃষ্ট দাবী-দাওয়া, সমস্যা ও সম্ভাবনার দিকগুলো সরকারের উচ্চ পর্যায়ে ধারাবাহিকভাবে তুলে ধরছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, সম্প্রতি বৃটেনে একটি গুণগত বড় পরিবর্তনের সময় এসেছে। বিসিএ নতুন প্রধানমন্ত্রী স্যার কেয়ার স্টারমারকে স্বাগত জানিয়েছে ও যুক্তরাজ্যের কারি শিল্পকে প্রভাবিত করে এমন চিহ্নিত সমস্যাগুলি তুলে ধরে নতুন সরকারের সাথে কাজ করার জন্য বিশেষভাবে আগ্রহী। যদিও নতুন চ্যান্সেলর যুক্তরাজ্যকে একটি বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতামূলক কর ব্যবস্থায় পরিণত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে বিসিএ মনে করে, তিনি এটি অর্জনের জন্য সুনিদৃষ্ট দুটি প্রবৃত্তির শাখা- লোয়ার ভিএটি ও বিজনেস রেইট রিলিফ প্রবৃত্তিশক্তিকে উপেক্ষা করেছেন। চ্যান্সেলর যেসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান টিকে থাকতে প্রতিনিয়ত সংগ্রম করছে, তাদের সহায়তায় আরও জোরালো ভূমিকা নিতে পারতেন । যা বিশেষ করে হসপিটালিটি খাতের জন্য এই সময়ে অত্যন্ত প্রয়োজন।
সম্প্রতি বাংলাদেশ ক্যাটারার্স এসোসিয়েশন (বিসিএ) এর নির্বাচন হয়েছে। এবং এরই ধারাবাহিকতায় বিসিএর নতুন জাতীয় নির্বাহী কমিটি (এনইসি) নির্বাচিত হয়েছেন। আমরা এনইসি সদস্যদের সমর্থন ও সার্বিক সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞ । সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে আমরা বিসিএর প্রাতিষ্ঠানিক কর্মপরিধি ও সম্মান বৃদ্ধিতে নিরলসভাবে কাজ করছি।
বিসিএর সভাপতি ওলি খান এমবিই বলেন, বৃটেনের বাংলাদেশী মালিকানাধীন রেস্টুরেন্ট ও টেকওয়েগুলো বৃটেনের কারী লাভার্সসহ লোকাল কমিউনিটিতে সামাজিক,সাংস্কৃতিক ,ঐতিহ্য ও মানবিক কাজের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। মাল্টিকাচারাল বৃটেনের খাবার সংস্কৃতিতে বাংলাদেশী কারী ব্রান্ডিং-এ বিসিএ-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। যে কারণে আমাদের এওয়ার্ডসগুলো গুরুত্বপূর্ণ। বিসিএ এওয়ার্ডস যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশি ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি মিশেল খাবার সহ ব্যবসার সাফল্যকে মূলধারায় প্রচার করে। ‘সবার জন্য সাফল্য‘– এই প্রত্যয়ে বিসিএ কার্যকরি কমিটি- ন্যাশনাল এক্সিকিউটিভ কমিটি (এনইসি) সকল সদস্যদের নিয়ে সমন্বিতভাবে কারী শিল্পের সাফল্য তুলে ধরতে কাজ করবে।
বিসিএ এর সেক্রেটারী জেনারেল মিঠু চৌধুরী বলেন, আমি বিশ্বাস করি এনইসির সকল সদস্য এই প্রতিযোগিতায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করবেন। এবারের বিসিএ এওয়ার্ডস নানা কারণে অত্যন্ত আকর্ষণীয় – অন্যতম হচ্ছে এই প্রথমবারের মতো তরুণ মেধাবী শেফদের আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানীত করা হবে। এবং এরাই হবেন কারী ইন্ড্রাস্ট্রির ভবিষ্যত। বিসিএ এওয়ার্ডস অনুষ্ঠানটি হলো- আমাদের কঠোর পরিশ্রম উদযাপনের আনন্দময় সময়। বাংলাদেশী কারী শিল্পের প্রতিনিধিত্বশীল সংগঠন হিসাবে বিসিএ লোকাল কমিউনিটির অর্থনীতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ।
বিসিএর চীফ ট্রেজারার টিপু রহমান বলেন, বিসিএ এওয়ার্ডস এর মূল লক্ষ্য হলো- কারী ইন্ড্রাস্ট্রির নানা শাখার মেধাবী ও প্রতিশ্রুতিশীল কর্মীদের খুজে বের করা। তাদের কাজের স্বীকৃতি দান ও এই শিল্প সংশ্লিষ্ট সেরা ও প্রতিশ্রুতিশীলদের মূলধারায় তুলে ধরা। তারা কারি ইন্ড্রাস্ট্রিতে হাজার হাজার কর্মীর কাজের সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে বৃটেনের অর্থনীতিতে উজ্জ্বলভাবে অবদান রাখছেন। এবারের বিসিএ এ্যাওয়ার্ডস অনুষ্ঠানে তাদের মেধা, শ্রমলব্দ অর্জন ও বৃটেনের খাবার সংস্কৃতিতে জায়গা করে নেয়া বাংলাদেশীদের আলোকিত অবদানকে বর্ণাঢ্য আয়োজনে তুলে ধরবে।