আদানির বকেয়া দ্রুত সময়ের মধ্যে পরিশোধ করবে সরকার

৭ই নভেম্বরের মধ্যে বকেয়া পরিশোধ না করলে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ পাঠাবে না বলে আদানির যে সংবাদ প্রচার হচ্ছে সে সম্পর্কৃত বিস্তারিত চিঠি সরকারের কাছে আসেনি বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, এটি যদি সত্য হয়ে থাকে তবে তা দুঃখজনক। সরকার দ্রুত সময়ের মধ্যে আদানির বকেয়া পরিশোধ করবে। গতকাল সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। শফিকুল আলম বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশে রেমিট্যান্সের গতি বেড়েছে। ফলে এখন সেন্ট্রাল রিজার্ভে হাত না দিয়েই আন্তর্জাতিক পেমেন্টগুলো করতে পারছি। ভারতের আদানি গ্রুপের বকেয়া পেমেন্ট দেয়ার গতি বেড়েছে। সামনে আরও বাড়বে। সেই সক্ষমতা সরকারের আছে। তিনি বলেন, বিদ্যুৎ আমদানির জন্য ভারতের আদানি গ্রুপ টাকা পায় এটা সত্য। তাদের পেমেন্ট দেয়ার ক্ষেত্রে গতি বাড়িয়েছি। পূর্বের যে বিল বাকি আছে সেটার জন্য মূলত দায়ী পূর্ববর্তী আওয়ামী লীগ সরকার। তারা বিশাল ফাইল অব বেকলট রেখে গিয়েছিল। আদানি গ্রুপকে গত মাসে আমরা ৯ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলার পেমেন্ট করা হয়েছে। যেটা আগস্ট বা আগের মাসের চেয়ে দ্বিগুণ। আমাদের তরফ থেকে সর্বোচ্চ পেমেন্ট আরও দ্রুত করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। শফিকুল আলম বলেন, দেশের রিজার্ভ বাড়া শুরু হয়েছে। আন্তর্জাতিক পেমেন্টগুলো রিজার্ভে হাত না দিয়েই করতে পারছি। পেমেন্ট ৭০০ মিলিয়ন ডলার বাকি আছে। সেটিও দ্রুত সময়ের মধ্যে করে দিতে পারবো। তিনি বলেন, আমরা কারও দ্বারা পাওয়ার হোস্টেজ (জ্বালানি নির্ভরতা) হবো না। নিজেরাই স্বয়ংসম্পূর্ণ হবো। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বছরে ১৬ থেকে ১৮ বিলিয়ন ডলার বিদেশে পাচারের অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় টাকা পাচারের এক ধরনের প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছিল। সেই টাকা ফিরিয়ে আনতে সরকার কাজ করছে। কতো টাকা পাচার হয়েছে, তা বের করতে উচ্চ পর্যায়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেই শ্বেতপত্র কমিটির প্রতিবেদনে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে। এ সময় সাত কলেজের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ বলেন, এটি নিয়ে দুই উপদেষ্টাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আশা করছি তারা একটি বেস্ট সলিউশন বের করতে পারবেন। জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে ভাঙচুরের প্রশ্নে তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এটি দেখছে। এ সরকার কোনো ধরনের রাজনৈতিক সহিংসতায় বিশ্বাস করে না। জাতীয় পার্টির রাজনীতির বিষয়টি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত, সেটি দেশের রাজনৈতিক দলগুলো সিদ্ধান্ত নেবে। কিন্তু তাদের কার্যালয়ে হামলায় কতোজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে সে তথ্য আমাদের কাছে নেই। এটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলতে পারবে। এ সময় ৩রা নভেম্বরের জেল হত্যা দিবস সম্পর্কেও কথা বলেন শফিকুল আলম। বলেন, আমাদের সরকার চার নেতার অবদানকে স্মরণ করে। এতদিন আওয়ামী লীগ দেখাতে চেয়েছে এক হাতেই সব হয়েছে। কিন্তু আমরা জানি এখানে অনেকের অবদান রয়েছে। বিশেষ করে এ ৪ জনের। আমরা তাদের স্বরণ করি। শিল্পকলা একাডেমিতে নাটক বন্ধের প্রশ্নে তিনি বলেন, এখানে অনেক ঘটেছে এমন না। একটা ঘটনা ঘটেছে সেটাকে সরকার নিন্দা জানায়। আমরা আশা করি শিল্পকলার যে ডিজি রয়েছেন তিনি এ বিষয়ে তদন্ত করবেন। সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীরও উপস্থিত ছিলেন। 
 

error: