গত সরকারের সময়ের ফ্যাসিবাদের দোসররা এখনও বিভিন্ন জায়গায় বহাল তবিয়তে উল্লেখ করে নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসিরউদ্দিন পাটোয়ারী বলেছেন, তাদের সেসব (প্রশাসনের) জায়গা থেকে পরিহার করতে হবে। যদি খুনি ও খুনের হুকুমদাতারা তাদের স্কিলের কারণে থেকে যান, তাহলে আমরা আরেকটি যুদ্ধ ঘোষণা করতে বাধ্য হবো। সেখানে ছাত্ররাই দেশ পরিচালনা করবে, ছাত্ররাই নীতিনির্ধারক হবে।
শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) গণঅভ্যুত্থানের ১০০ দিন উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘জুলাই গণহত্যার জন্য দায়ী আওয়ামী লীগের বিচার এবং শহীদ পরিবার ও আহতদের পুনর্বাসনের’ দাবিতে আয়োজিত নাগরিক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
নাসিরউদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, জুলাই বিপ্লবে জনমানুষের আকাঙ্ক্ষার বাইরে গিয়ে যারা উপদেষ্টা পরিষদ বর্ধিত করেছে, তাদের কাছে আমরা সুস্পষ্ট বক্তব্য চাইছি। উপদেষ্টা পরিষদের বর্ধিত করার বিষয়ে তাদের বক্তব্য স্পষ্ট করতে হবে।
রাজনৈতিক দলগুলোকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো টাকা বা মামলার বিনিময়ে আপনার রাজনৈতিক সেটেলমেন্টে গিয়েছেন, সেটা জনগণের কাছে স্পষ্ট। আওয়ামী লীগের শিক্ষক, ব্যবসায়ী, বুদ্ধিজীবীদের আশ্রয় দেওয়ার চেষ্টা করছেন। আপনাদের উদ্দেশে বলতে চাই— এধরনের শিশুসুলভ আচরণ আপনারা করবেন না। আগামীতে যদি আরও প্রকটভাবে আমরা বিষয়গুলো দেখতে পাই, তাহলে আপনাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও রাজনৈতিক কলাকৌশল ছাত্র-জনতা নিতে বাধ্য হবে। এই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সংস্কারের যেই আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে, সেটিকে যদি আপনারা বাধাগ্রস্থ করার চেষ্টা করেন, তাহলে আগামী নির্বাচনে ছাত্র-জনতা ব্যালট বিপ্লবের মাধ্যমে আপনাদের কবর রচনা করবে।
‘আন্দোলনে আহতদের অনেকে এখনও চিকিৎসাধীন। অনেক রাজনৈতিক দল টাকা দিয়ে তাদের পকেটস্থ করার চেষ্টা করছে’, অভিযোগ করে তিনি বলেন, আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে বলতে চাই, আন্দোলনে আহত ও শহীদদের নিয়ে রাজনীতি করবেন না। আমরা শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, আপনারা সেই অপচেষ্টা ভন্ডুল করে দিন।
গণকমিশন গঠন করে আওয়ামী লীগের বিচার দাবি করে তিনি আরও বলেন, সরকার এবং দায়িত্বশীলদের বলছি, দ্রুতই গণকমিশন গঠন করে অপরাধী আওয়ামী লীগের নেত্রী খুনি হাসিনা ও তার দোসরদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসুন এবং আন্দোলনে আহত ও শহীদদের পুনর্বাসনের চেষ্টা করুন। আর তরুণদের প্রতি আহ্বান, আগামী নির্বাচনে ব্যালট বিপ্লবের জন্য প্রস্তুত থাকুন।
এসময় আরেও বক্তব্য দেন মায়ের ডাকের সংগঠক সানজিদা ইসলাম তুলি, নাগরিক কমিটির সদস্য আকরাম হোসেন, আন্দোলনে আহত সায়মন চৌধুরী, রাশেদা আলী, নাগরিক কমিটির সদস্য নিজাম উদ্দিন, আকরাম হোসাইন, যাত্রাবাড়ী থানার প্রতিনিধি সদস্য ইয়াসমিন জাহান, কাফরুল থানা প্রতিনিধি সাদমান সৌমিক, সায়েন্সল্যাব জোনের প্রতিনিধি শাহাদাত ফরাজি সাকিব, ভাটারা থানার প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর হোসেন ও কামরাঙ্গীর চর থানা প্রতিনিধি সালাহ উদ্দিনসহ আরও অনেকে।
সূত্র: ঢাকা ট্রিভিউন।