কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরায় প্রকাশিত ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টার’স মেন’ শীর্ষক প্রতিবেদনটির জন্য রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে ব্রিটিশ সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যান, হাঙ্গেরি প্রবাসী শায়ের জুলকারনাইন সামিসহ চার জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করা হয়েছে। বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট মশিউর মালেক বাদী হয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আশেক ইমামের আদালতে মামলাটির আবেদন করেন।
বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে আদালত বাদীর জবানবন্দি রের্কড করে আদেশ পরে দেবেন বলে জানান।
মামলার অপর আসামিরা হলেন-ইন্ডিপেন্ডেন্ট ওয়ার্ল্ড রিপোর্ট এর সম্পাদক তাসনিম খলিল ও আল জাজিরা টেলিভিশনের ডিরেক্টর জেনারেল মোস্তফা স্যোউয়াগ।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে একই উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ সরকার ও রাষ্ট্রের সুনাম হানি করে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে অপপ্রচার চালিয়েছে। তারা রাষ্ট্রদ্রোহিতা মূলক অপরাধে লিপ্ত আছে। তারা যৌথভাবে তাদের অজ্ঞাতনামা সহযোগীদের নিয়ে ভুয়া মিথ্যা তথ্য দিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করে গত ১ ফেব্রুয়ারি রাতে ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টার্স মেন (All The Prime Minister’s Men)’ নামে বাংলাদেশ রাষ্ট্র ও সরকার বিরোধী একটি প্রতিবেদন প্রচার করে এবং ওই প্রতিবেদন ইউটিউবেও ব্যাপকভাবে প্রচার করে। যা পরেরদিন বিভিন্ন মুদ্রিত ও অনলাইন পত্রিকায়ও প্রচারিত হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যদের জন্য ইসরায়েল থেকে কিছু সামরিক ব্যবহার্য গোয়েন্দা সরঞ্জাম কেনা হয়েছে যাতে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। এ ক্রয়ের সঙ্গে জড়িত সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ দুর্নীতি করেছেন এবং তিনি প্রধানমন্ত্রীর লোক, তার মাধ্যমে বর্তমান সরকার দেশে গণবিরোধী ও দুর্নীতি কার্যক্রম চালিয়ে জনগণকে সে ব্যাপারে কথা বলতে না দিয়ে জোর করে ক্ষমতায় টিকে আছে। আসামিরা ওই প্রতিবেদনে কোনও সুনির্দিষ্ট ও সুস্পষ্ট কোনও বক্তব্য না দিয়ে এবং তথ্য-উপাত্ত বা দলিলাদি উপস্থাপন না করেই ষড়যন্ত্রমূলক ও উদ্দেশ্যে প্রণোদিতভাবে শুধু কিছু ব্যক্তিগত ও পারিবারিক অনুষ্ঠানাদি ও সাক্ষাৎকারের ছবি ব্যবহার করেছে। তারা কণ্ঠস্বর সম্পাদনা করে একটি কাল্পনিক, ভুয়া, মিথ্যা ও সাজানো কল্পিত তথ্যচিত্রের প্রতিবেদন তৈরি করে তথ্য প্রযুক্তির অপব্যবহারের মাধ্যমে আল জাজিরা টেলিভিশনসহ ইউটিউবের মাধ্যমে সমগ্র বিশ্বে অপপ্রচার করেছে। যা দেশে-বিদেশে বাংলাদেশের সরকার ও রাষ্ট্রের সুনাম ও মর্যাদার হানি ঘটিয়েছে।
এতে বলা হয়, গত ২ ফেব্রুয়ারি জাতিসংঘের মহাসচিব এন্তোনিও গুতেরেস এর মুখপাত্র এত্তেফান দুজারিচ বলেছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আল জাজিরার ওই প্রতিবেদনে উল্লেখিত ধরনের সামরিক গোয়েন্দা নজরদারিমূক কোনও সরঞ্জাম ব্যবহার করে না। এ ধরনের অভিযোগ কেন হয়েছে তা তদন্ত করা হবে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে এ জাতীয় যে সব সরঞ্জাম হাঙ্গেরির সরবরাহকারীর মাধ্যমে কেনা হয়েছিল সে সময়ে সেনাপ্রধানের দায়িত্বে আজিজ আহমেদ ছিলেন না। তিনি দায়িত্বপ্রাপ্ত হওয়ার পরে প্রতিবেদনে উল্লেখিত এ ধরনের সরঞ্জাম কেনা হয়নি। আসামিরা তাদের ষড়যন্ত্রমূলক অবৈধ কার্যক্রমের দ্বারা দেশের অত্যন্তরে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে বৈধভাবে প্রতিষ্ঠিত সরকারকে উৎখাত করার ষড়যন্ত্র করেছে, যে ষড়যন্ত্র এখনও চলমান।