আল জাজিরার ‘বিভ্রান্তিমূলক অপপ্রচারের’ নেপথ্যে দেশ-বিদেশে কারা জড়িত, তা খুঁজে বের করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘অতীতেও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও গুজব ছড়ানো হয়েছিল, যা বাস্তবে মিথ্যা প্রমাণিত হয়। আল জাজিরার এই আজগুবি রিপোর্টও মিথ্যা বলে প্রতিপন্ন হবে।’
শুক্রবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকালে ওবায়দুল কাদের তার সরকারি বাসভবনে ব্রিফিংকালে এসব কথা বলেন।
দেশে-বিদেশে একটি রাজনৈতিক স্বার্থান্বেষী মহল সরকার ও আওয়ামী লীগের ঐক্যে ফাটল ধরানোর জন্য সুগভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে—অভিযোগ করে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের মাটি ও মানুষের দল, এর শেকড় অনেক গভীরে প্রোথিত। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সুদৃঢ়ভাবে ঐক্যবদ্ধ ও শক্তিশালী। এই ঐক্যে ফাটল ধরানোর কোনও ষড়যন্ত্রই কাজে আসবে না।’
১১ ফেব্রুয়ারি বসুরহাট পৌর মেয়র মির্জা কাদেরের গাড়িতে হামলার ঘটনায় চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি, সিএমপি কমিশনার ও ফেনীর পুলিশ সুপারের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়েছে উল্লেখ করে কাদের বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বিষয়টি তদন্ত করছে। তদন্ত করার মাধ্যমে সঠিক তথ্য উদঘাটন করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সম্প্রতি আওয়ামী লীগ অফিসে নেতাকর্মীকে পুলিশ দিয়ে ডাকানোর বিষয়ে মিডিয়ায় প্রকাশিত খবর প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদেরের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ একটি রাজনৈতিক দল। দলীয় অফিসে কোনও নেতাকর্মীকে পুলিশ দিয়ে ডাকার দৃষ্টান্ত নেই। কাউকে সাংগঠনিক প্রয়োজন হলে অফিস থেকে এসএমএস অথবা ফোন করে ডাকা হয়।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক জানান, সংগঠনের যেসব শাখায় সাংগঠনিক সংকট রয়েছে, ২১ ফেব্রুয়ারির পর অনুষ্ঠেয় কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভায় সেসব সংকট নিরসনে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
সাম্প্রতিক পৌরসভা নির্বাচনগুলোতে বিএনপির পরাজয় হয়েছে তাদের অপরাজনীতির জন্য উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সামনের নির্বাচনগুলোতেও পরাজয় নিশ্চিত জেনে নিজেদের রক্ষা করার জন্য অপপ্রচারে নেমেছে বিএনপি। নেতিবাচক রাজনীতির জন্যই আন্দোলন ও নির্বাচনে বিএনপি বারবার প্রত্যাখ্যাত ও পরাজিত হয়েছে। অপরদিকে, শেখ হাসিনার অভূতপূর্ব উন্নয়নে জনগণ খুশি, এটাই বিএনপির অন্তর্জ্বালার কারণ।’
দেশে-বিদেশে এখন বিএনপি অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র করছে মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, ‘কর্মীদের রোষানল থেকে বাঁচার জন্য বিএনপি নেতারা হাঁকডাক দিচ্ছে। কিন্তু তাদের আন্দোলনের ডাকে জনগণের পক্ষ থেকে কোনও সাড়া নেই।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘টেমস নদীর ওপার থেকে ডাকা আন্দোলনে পদ্মা-মেঘনা-যমুনায় জোয়ার আসবে না। বাংলাদেশে এই মুহূর্তে আন্দোলনের কোনও বস্তুগত পরিস্থিতিও বিরাজমান নেই।’
তিনি বলেন, ‘সরকার শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে স্বাগত জানাবে। সেটা রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করবে। কিন্তু রাজনৈতিক আন্দোলনে অতীতের মতো সহিংসতা যুক্ত হলে, জনগণের জানমাল রক্ষায় তা কঠোরভাবে দমন করা হবে।’
কাদের বলেন, ‘বিএনপি নেতারা করোনার টিকা নিয়ে নানা অপপ্রচার চালিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত টিকা প্রদান কার্যক্রম উৎসবে রূপ নিয়েছে। এখন তারাও টিকা গ্রহণের জন্য লাইনে দাঁড়াচ্ছেন। বিএনপি সবকিছু আসলে দেরিতে বোঝে।’
বিএনপি নেতাদের ‘সরকারের পদত্যাগ’ দাবি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘গত একযুগ ধরে তাদের এ দাবি শুনছি। তাদের রাজনীতি এখন ফেসবুকনির্ভর। তাদের আন্দোলন এখন জনগণ দ্বারা প্রত্যাখ্যাত। আর সরকারের পদত্যাগ নয়, বরং বিএনপির মতো দলকে জনবিচ্ছিন্ন করার জন্য তাদের শীর্ষ নেতাদের টপ টু বটম পদত্যাগ করা উচিত।’