ইতালিতে প্রবাসী বাংলাদেশী খুনের ঘটনায় ১৮ বছর বয়সী এক ইতালিয়ান যুবকে আটক করেছে স্থানীয় প্রশাসন, যার বিরুদ্ধে এর আগেও বিভিন্ন অপরাধের রেকর্ড রয়েছে প্রশাসনের হাতে। ইতিমধ্যে পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে খুনের কথা স্বীকার করেছে। স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাতে জানা গেছে অভিযুক্ত লাতিনার সিস্তার্না এলাকায় বসবাস করনে সেখানে এক বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয় তাকে। বর্তমানে ভেলেত্রি কারাগারে রাখা হয়েছে।
এসময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ১৬ সেমি লম্বা রক্তমাখা একটি ছুরি উদ্ধার করেছে পুলিশ। খুনের সময় ব্যবহৃত মটরসাইকেল জঙ্গলে নিয়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় অভিযুক্ত। যেটি ঘটনার দুই দিন আগে রোম থেকে চুরি করা হয়েছিল বলে জানাই সেই।
গত ২৭ মে কয়েকজন মুখোশধারী ডাকাত বেলা ১২:০০ টার দিকে ভায়া ডেলে পিনেটের টর সান লরেঞ্জো এলাকায় পেট্রোল পাম্পে ঢুকে টাকা-পয়সা লুটের চেষ্টা করে। এ সময় তাদেরকে নাহিদ মিয়া বাধা দিলে ডাকাতরা তাকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় নাহিদ মিয়াকে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার পরপরই তদন্ত শুরু করে স্থানীয় পুলিশ।
আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজে দেখে তিন জন কে শনাক্ত করা হয়। তবে পুলিশ জানাই ৩ জনকে শনাক্ত করা হলেও তারা হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিল না। মূলত অভিযুক্ত এই মোটরবাইক চুরি করেছিল ওই ৩ জনের মধ্যে একজনের কাছ থেকে। হত্যাকারী সম্পূর্ণ কালো পোশাক ও হেলমেট পরে এসেছিল ঘটনাস্থলে। পরবর্তীতে ভিডিও ফুটেজ দেখে এবং মোবাইল ডাটা ব্যবহার করে রাস্তা ট্র্যাক করে শনাক্ত করে তাকে গ্রেফতার করা হয়। বর্তমানে Velletri কারাগারে রাখা হয়েছে।
সংবাদ মাধ্যম আরো জানাই পেট্রোল স্টেশনে কাজ করার সময় মাত্র ৫৭০ ইউরোর জন্য খুন করা হয় নাহিদ মিয়াকে।
এদিকে গত ৩০ মে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করে আরডেয়া কমুনের জনগন, যেখানে নাহিদ মিয়া পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন। এসময় সভায় উপস্থিত ছিলেন একই শহরের মেয়র, ইতালিয়ান নাগরিক ভারতীয়, মরক্কান এবং অন্যান্যদেশের অভিবাসী কমিউনিটির প্রতিনিধিসহ বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি। সকলের অংশগ্রহণে প্রতিবাদ সভাটি এক সংহতির বার্তা হয়ে উঠেছে—ন্যায়বিচারের জন্য। প্রতিবাদ সভা থেকে নাহিদ হত্যার নায্য বিচার ও নিরাপদ কর্মপরিবেশের দাবি করেন বিক্ষোভকারীরা।