ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার পেছনে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ জড়িত বলে দাবি করছে পাকিস্তানের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম। মূলত, সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপ্লিকেশন টেলিগ্রামে ‘ফাঁস হওয়া’ এক গোপন নথির উদ্ধৃতি দিয়ে এমন চাঞ্চল্যকর দাবি করছে তারা।
তবে ওই নথিটি আসল কি-না, তা স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি। টেলিগ্রামে ফাঁস হওয়া গোপন নথিটির বরাতে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোতে বলা হয়েছে, পেহেলগামের ওই ঘটনাটিকে ‘অমুসলিম জনগোষ্ঠীকে লক্ষ্য করে চালানো হামলা’ হিসেব প্রচারের সুস্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
শুক্রবার (২ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইকে জড়িয়ে প্রোপাগান্ডা ছড়াতে ভুয়া অ্যাকাউন্ট ব্যবহারের পরিকল্পনার কথাও উল্লেখ রয়েছে ওই নথিতে।
বেশ কয়েকটি সূত্রের বরাতে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ফাঁস হওয়া নথিটি প্রমাণ করে যে স্বয়ং ভারত সরকারও পেহেলগাম হামলায় জড়িত। নথিতে দেওয়া নির্দেশনা এবং পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মধ্যে যে গড়মিল হয়েছে, তা থেকেই এই “ফলস ফ্ল্যাগ” হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
অর্থাৎ, নথির তথ্য অনুযায়ী, ভারত নিজেই এই হামলা সাজিয়েছে, যেন পাকিস্তানের ওপর দোষ চাপানো যায়।
নথিতে আরও বলা হয়েছে, হামলার ৩৬ ঘণ্টা পরে পাকিস্তানবিরোধী প্রচার চালানোর জন্য মিডিয়াকে নির্দেশনা দেওয়া হবে। তবে, হামলার সঙ্গে সঙ্গেই পাকিস্তানকে দায়ী করে বসে ভারতীয় মিডিয়া, যার ফলে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থার পরিকল্পনা ভেস্তে যায়।
সূত্রগুলো বলছে, এই নথি এবং তাতে থাকা বৈপরীত্য প্রমাণ করে যে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-কেও অন্য কোনো মহল থেকে কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।
এদিকে কীভাবে এই নথি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফাঁস হলো তা খুঁজে বের করতে ভারত সরকার তদন্ত করছে বলেও এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে।
ফাঁস হওয়া নথি বলছে, সাজানো এই অপারেশনটি পরিকল্পনা করা হয়েছিল এমন সময়ে যখন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স ভারতে সফরে ছিলেন, যাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সন্ত্রাসবিরোধী ঐক্যের আহ্বান জানানো যায়।
গত ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হয়। ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর কাশ্মীরে এটিই সবচেয়ে বড় হামলা। পরোক্ষভাবে পাকিস্তান এ হামলায় জড়িত, এমন অভিযোগ তুলে বুধবার দেশটির সঙ্গে ১৯৬০ সালের সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করে ভারত। পাশাপাশি আরও বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয় দেশটি। জবাবে সিমলা চুক্তি স্থগিত ও ভারতীয় বিমানের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা দেয় পাকিস্তান। স্থগিত করে দেওয়া হয় ভারতের সঙ্গে সবরকম বাণিজ্যও।
এছাড়াও পাল্টাপাল্টি অভিযোগ আর হুমকি-ধমকিতে ক্রমেই দুদেশের মধ্যকার উত্তেজনার পারদ আরও চড়ছে। এরই মধ্যে কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখায় (এলওসি) টানা ৮ রাত গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে ভারত-পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে।