জাতিকে সামনে এগিয়ে নিতে সীসাঢালা প্রাচীরের ঐক্য লাগবে-ডা. শফিকুর রহমান

টেমসসুরমাডেক্স: দেশকে সামনে এগিয়ে নিতে সীসাঢালা প্রচীরের মতো ঐক্য লাগবে জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আমি বিনয়ের সাথে বলবো এমন কোন হটকারী কাজ করবেন না; যার কারণে আমাদের জাতীয় ঐক্য নষ্ট হয়। আমরা যেন কেউ চুরি-চামারি না করি। চাঁদাবাজি না করি, দখল বাণিজ্য না করি, মামলা বাণিজ্য না করি। ফ্যাসিস্টদের যেন কোনরকম আশ্রয়-প্রশ্রয় প্রদান না করি।

২৪ জানুয়ারি শুক্রবার কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ মাঠে কুড়িগ্রাম জেলা জামায়াত আয়োজিত বিশাল কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। কর্মী সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন জেলা আমীর মাওলানা আবদুল মতিন ফারুকী। জেলা সেক্রেটারি মাওলানা নিজাম উদ্দিনের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চল পরিচালক মাওলানা আবদুল হালিম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের সহকারী পরিচালক অধ্যক্ষ মাওলানা মমতাজ উদ্দিন, অঞ্চল টিম সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল, কুড়িগ্রাম জেলার সাবেক আমীর আজীজুর রহমান, ব্যারিস্টার মাহবুব আলম সালেহী ও রংপুর মহানগর আমীর এটিএম আজম খান। এর আগে ক্বারী আব্দুল্লাহ আল আমীনের অর্থসহ কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে সম্মেলন শুরু হয়। সংগীত পরিবেশন করে ধরলা শিল্পী গোষ্ঠি ও কুড়িগ্রাম কালচার‌্যাল একাডেমি।

হাড় কাঁপানো শীত আর কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়া উপেক্ষা করে ভোর থেকেই দলে দলে লোকজন আসতে থাকে কর্মী সম্মেলনে। মানুষের স্রোত আসতে থাকে কুড়িগ্রাম সরকারী কলেজ মাঠের দিকে। এদিন ‘নারায়ে তাকবির আল্লাহু আকবার’ ধ্বনিতে মুখরিত হয় মাঠ-ঘাট রাস্তা অলিগলি। আমীরে জামায়াত মঞ্চে উঠার আগেই সম্মেলনস্থল উপচে পড়ে। আশপাশের এলাকা মানুষে মানুষে সয়লাব হয়ে যায়। দুপুর পর্যন্ত সূর্যের দেখা না মিললেও ডা. শফিকুর রহমানের বক্তব্য শোনার জন্য বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেয় হাজারো মানুষ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত দীর্ঘ পরিক্রমায় বিভিন্ন ধর্মের মানুষের ওপর কারা জুলুম অত্যাচার করেছে, কারা তাদের জমিগুলো দখল করেছে, ভিটে মাটি থেকে উচ্ছেদ করেছে, সম্পদ লুণ্ঠন করেছে, তাদের ইজ্জতে হাত দিয়েছে, এই দুষ্কৃতিকারীদের তালিকা করে জনগণের সামনে প্রকাশ করে দেওয়া হোক। আমার দ্বারাও যদি এ কাজ সংঘটিত হয়ে থাকে, তবে আমার নামও প্রকাশ করা হোক। বাংলাদেশের জনগণ জানুক এরা কারা। আপনাদের বৃহত্তর রংপুরের পীরগঞ্জের মৎস্যপল্লীতে গরু চুরি করে কারা ঘরবাড়িতে আগুন দিয়েছিল, তা আপনারা জানেন। যুবলীগ নেতার নেতৃত্বে এই অপকর্ম করা হয়েছিল। দিনাজপুরের সাঁওতাল পল্লী, বি-বাড়িয়ার অমুসলিম ভাইদের ওপর হামলা, ঘরবাড়ি লুণ্ঠন এবং অগ্নিসংযোগ, রামুতে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মঠ ভাঙচুর করা, ঘরবাড়িতে হামলা এবং অগ্নিসংযোগ করা; এই সকল অপকর্মের সাথে আওয়ামী লীগের দুর্বৃত্তরা জড়িত ছিল। কিন্তু সব কিছুর জন্য জামায়াতে ইসলামীকে দায়ি করা হয়। আপনারাই সাক্ষী- গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের সাবেক এমপি লিটনকে তার বাড়ির কাছে কে বা কারা শুট করে হত্যা করল। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী সংসদে দাঁড়িয়ে বললেন, একাজ জামায়াত-শিবির করেছে। সেখানে তান্ডব চালানো হলো। আমাদের নিরীহ নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিয়ে শারীরিক, মানসিক, আর্থিক নির্যাতন করা হলো। আমরা বললাম এ ধরনের নাপাক কাজ আমরা করি না, আমরা করি নাই। দিন শেষে দেখা গেল একাজের সাথে জামায়াতে ইসলামীর কোনো ধরনের সম্পর্ক ছিল না। বরঞ্চ তাদেরই ক্ষমতার পার্টনার একজন সাবেক কর্নেল ঐ আসনের যিনি সাবেক এমপি ছিলেন তিনি তার ভবিষ্যত রাস্তা পরিষ্কার করার জন্য একাজ করেছেন। বিচারে প্রমাণিত হলো তিনিই খুনি।

আমরা আর পিছনে তাকাতে চাই না। জাতি সামনে আগাতে চায়। জাতিকে সামনে এগুতে হলে জাতির সীসাঢালা প্রাচীরের ঐক্য লাগবে। তিনি জাতিকে আশ্বস্ত করে বলেন, আমরা প্রতিহিংসার পক্ষে না। তবে খুনীদের মাফ নাই। প্রত্যেকটা খুনের বিচার হতে হবে।

তিনি উদাহরণ টেনে বলেন, আল্লাহর রাসূল (সা.) মক্কা বিজয়ের সময় সমস্ত দুশমনদের ক্ষমা করে দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, আজকে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা হলো। কিন্তু যারা নিরীহ মানুষকে খুন করেছে, রাসূল (সা.) তাদের দশ বা তেরজনের নাম উল্লেখ করে বলেছিলেন, এদের যেখানে পাও সেখনেই খুন করো। খুন কখনো মাফ হয় না। আমরা বাংলাদেশের প্রত্যেকটা খুনের বিচার চাই। শুধু আমাদের নেতা কর্মী না। অন্যায়ভাবে যত মানুষ খুন করা হয়েছে, আমরা সব খুনের বিচার চাই।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, বৃহত্তর রংপুরবাসী আপনারা অনেক কারণেই গর্বিত। অথচ আপনারা বঞ্চিত। এই রৌমারীর বড়াই বাড়িতে যে যুদ্ধটা আপনারা অন্ধকারে করে শিক্ষাটা দিয়েছিলেন; সেই যুদ্ধের প্রতিশোধ নেওয়া হয়েছে বিডিআরের পিলখানা হত্যাকা-ের মাধ্যমে।

দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছরে ফ্যাসিজমকে বিদায় করতে গিয়ে একজন মানুষ শুধু বাংলাদেশের ইতিহাসে নয়, বিশে^র ইতিহাসে তার সোনালি নামটা লেখা হয়ে গেছে। এই সন্তানটাও বৃহত্তর রংপুরের। তিনি উপস্থিত জনতার দিকে প্রশ্ন রেখে বলেন, তার নাম কি? মাঠ থেকে জবাব আসে ‘আবু সাঈদ’। সে এখন আমাদের বিপ্লবের আইকন। আমাদের প্রতীক, আমাদের সিপাহশালার। আমাদের বীর সেনাপতি। তার রাস্তা ধরে যারাই জীবন দিয়েছে তাদের শহীদ হিসেবে কবুলের দোয়া করি। তাদেরকে যেন আমরা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করতে পারি, সম্মানের সাথে বুকে ধারণ করতে পারি। শহীদ এবং পঙ্গুদের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। এ ঋণ পরিশোধ করার শক্তি এ জাতির নেই। তবে যে কারণে তারা শহীদ হয়েছেন, আমরা তাদের আমাদের প্রিয় সংগঠনের পক্ষ থেকে কথা দিচ্ছি, একটা দুর্নীতি মুক্ত, সুষম বৈষম্যহীন-মানবিক বাংলাদেশ না গড়া পর্যন্ত আমাদের লড়াই অব্যাহত থাকবে ইনশা আল্লাহ। তিনি আবারো উচ্চারণ করেন, ‘আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’। যুদ্ধ সেদিন শেষ হবে মানবিক বাংলাদেশ যেদিন প্রতিষ্ঠিত হবে। তার আগ পর্যন্ত যুদ্ধ চলবে। আমরা সমাজে অনাচার দেখলে প্রতিবাদ করবোই।

তিনি বলেন, এটা আমার বিরুদ্ধে হলেও আমি প্রতিবাদ করবো। অনাচার যিনি করবেন তার ব্যাপারে আমরা মুখ বন্ধ করে থাকবো না। সেজন্যই আমরা রাজনীতি করি। আমরা ন্যায়ের পক্ষ নেবো, অন্যায়ের প্রতিবাদ করবো। যদি অন্যায় নিরবে হজম করি তাহলে আমিও অন্যায়কারীর মদদদাতা হয়ে গেলাম। আমরা এই অপকর্মের দায় নিতে চাই না। এমনকি আমাদের দলের কেউ যদি এমনটা করে তাহলে বলবো তাদেরকে ধরেন, ছাড় দিবেন না। আমাদেরকে খবর দিবেন প্রশাসনকেও খবর দিবেন। এদের ব্যাপারে আমাদের জিরো টলারেন্স।

তিনি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলেন, আপনারা সাক্ষী ৫ আগস্ট থেকে আজকে জানুয়ারি মাসের ২৪ তারিখ পর্যন্ত দীর্ঘ ৬ মাসের পথ পরিক্রমায় জামায়াতের লোকেরা চাঁদাবাজি করে নাই। দখল বাণিজ্য করেনি। শত শত মানুষকে মামলায় ফেলে তাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করেনি। ঘুষের ভাগাভাগি করেনি।

তিনি সবাইকে অনুরোধ করে বলেন, দয়া করে শহীদদের আকাক্সক্ষার বিরুদ্ধে যায় এমন কাজ করবেন না। তিনি বন্ধু, দোস্ত সম্বোধন করে বলেন, দয়া করে চাঁদাবাজি দখলবাজি করবেন না। এরপরও যদি কেউ অপকর্ম অব্যাহত রাখেন; মনে রাখবেন আমাদের লড়াইও অব্যাহত থাকবে।

তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামের মুক্তির দাবি জানিয়ে বলেন, আইনের মাধ্যমেই তাঁকে বের করতে চাই। কিন্তু আইনের মারপ্যাঁচে তাঁকে আটকে রাখবেন না। নইলে রাস্তায় নামতে বাধ্য হবো। তাঁর প্রতি ন্যূনতম ন্যায়বিচার করা হলেও তিনি সম্মানের সাথে মুক্ত হবেন বলে আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।

কুড়িগ্রাম জেলা কঙ্কালে পরিণত হয়েছে উল্লেখ করে জামায়াতের আমীর বলেন, এই জেলায় মাংস চামড়া নাই। ভোটের সময় বাবা ডাকবেন। পার হয়ে গেলে শালাও ডাকবেন না। এটাতো হতে পারে না। তিনি প্রশ্ন রাখেন তিস্তা প্রকল্প কেন শুরু হলো না? এটা ফ্যাসিস্ট সরকারের কারণে হয়নি। এই জেলার মানুষের অনেকগুলো ন্যায্য দাবি আছে। তারা কী পাপ করেছেন যে, ন্যায্য পাওনাগুলো পাচ্ছেন না। আমি পরিস্কার বলতে চাই, আমাদেরকে দেশের খেদমতের দায়িত্ব দিলে প্রেসিডেন্ট-প্রধানমন্ত্রীর মুখ দেখে উন্নয়ন হবে না। বরং এগিয়ে যাওয়া এলাকা একদিকে রেখে, বঞ্চিত এলাকার উন্নয়নে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

তিনি এও বলেন, দোয়া করবেন ন্যায়ের পথে যতদিন পাবেন, ভালবাসবেন, দেশ গড়ার পথে পাশে থাকবেন। ইনসাফের দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়ার দাওয়াত নিয়ে ঘরে ঘরে পৌঁছে যাবেন। নেতাকর্মীদের প্রতি তিনি এই আহ্বান জানান।

মাওলানা আব্দুল হালিম বলেন, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বাসন্তি জাল পড়েছিল কাপড় পড়েনি। আওয়ামী লীগ দুর্ভিক্ষ উপহার দিয়েছে। গুম করেছে, খুন করেছে। দুপুরের রান্না করা খাবার ফেলে রেখে ভারতে পালিয়েছে। তারা আমাদের ৫০০ নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। তবুও আমরা পালিয়ে যাইনি। নতুন প্রেক্ষাপট হচ্ছে বৈষম্য বিরোধী বাংলাদেশ। অনেকের কথা অতীত স্বৈরাচারকে উৎসাহিত করছে। বিচার সম্পন্ন করা ছাড়া আওয়ামী লীগকে সুযোগ দেওয়া যাবে না। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে এগিয়ে যেতে হবে। কেউ কেউ বলে কোরআনে রাজনীতি নেই। বলতে চাই, কোরআনের রাজনীতি পছন্দ না করলেও অস্বীকার করা যাবে না। দেশের মানুষ ইনসাফের রাজনীতি চায়। দেশ গড়তে চায় ইনসাফের ভিত্তিতে। তিনি ন্যায়-ইনসাফের দেশ গড়তে জামায়াতে ইসলামীকে সমর্থন দেওয়ার আহ্বান জানান।

অধ্যক্ষ মাওলানা মমতাজ উদ্দিন বলেন, বৈষম্যহীন ও সাম্যের দেশ গড়তে জামায়াতের ৩ দফা দাওয়াত এবং ৪ দফা কর্মসূচি নিয়ে প্রতিটি ঘরে যেতে হবে। সকল মানুষকে এই কাজে এগিয়ে আনতে হবে। এবার দেশের মানুষ জামায়াতে ইসলামীকে বেছে নিবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল বলেন, এদেশ ৫ আগস্ট নতুন করে স্বাধীন হয়েছে। বাংলার মাটিতে খুনি, লুটপাটকারী, হত্যাকারী লুন্ঠনকারীদের বিচার হবে। আগামির দেশ হবে মানবিক দেশ, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ। যেখানে গণহত্যা হবে না, গুম হবে না। তিনি মজলুম জননেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের মুক্তি দাবি করেন।

ব্যারিস্টার মাহবুব আলম সালেহী বলেন, কুড়িগ্রামের মানুষের শতকরা ৭১ জন দারিদ্রসীমার নিচে বাস করে। মুক্তিযুদ্ধে কুড়িগ্রামের উল্লেখযোগ্য অবদান ছিল। কিন্তু আমাদের অবস্থা হলো বাসন্তীকে জালের নিচে দেখা গেলো, সীমানার কাঁটাতারের বেড়ায় ফেলানীর লাশ। আমরা মনে করি, সমৃদ্ধ কুড়িগ্রামের সমৃদ্ধির জন্য ইপিজেড দরকার, ট্রেন যোগাযোগ দরকার, দরকার যুবকদের কর্মসংস্থান। বৈষম্যহীন সমৃদ্ধশালী কুড়িগ্রামের দাওয়াত নিয়ে সবার ঘরে ঘরে নিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

স্বাগত বক্তব্যে কুড়িগ্রাম জেলা আমীর মাওলানা আবদুল মতিন বলেন, কুড়িগ্রামে বড় কোন কারখানা নাই। একটা মিল ছিল বন্ধ রয়েছে, বিশ^বিদ্যালয় নাই। চরাঞ্চলগুলোতে কোন উন্নয়ন নাই। বর্ডার থাকার কারণে সীমান্ত হত্যা আছেই। অসংখ্য সমস্যা নিয়ে বাস করছি। পিছিয়ে পড়া জেলা হিসেবে কুড়িগ্রামকে আমীরে জামায়াতের নির্দেশনা নিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাবো, ইনশাআল্লাহ।

লালমনিরহাট জেলা আমীর এডভোকেট আবু তাহের বলেন, আওয়ামী লীগকে বলে দিতে চাই আপনারা ইসলামী আন্দোলনকে শেষ করে দিতে চেয়েছিলেন। আজকের জনস্রোত দেখে যান আপনারা শেষ করে দিতে পারেননি। আগামির দিন হবে ইসলামের বাংলাদেশ।

কুড়িগ্রাম জেলা রামকৃষ্ণ মিশনের সেক্রেটারি উদয় সংকর চক্রবর্তী বলেন, বিশাল সমাবেশ দেখে মনে হয় হিন্দু মুসলমান বৌদ্ধ খ্রীস্টানের বাংলাদেশ। দুর্গাপূজাকে নির্বিঘ্নে করতে জামায়াতে ইসলামের ভাইয়েরা সহায়তা দিয়েছে। এদেশের হিন্দুরা আপনাদের আমানত। আপনাদের মাধ্যমে এদেশ সুজলা সুফলা হয়ে উঠবে।

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগরী পূর্বের সেক্রেটারি আসিফ আব্দুল্লাহ বলেন, সীমান্তে ফেলানীসহ ৫৮৮ জনকে বিএসএফ গুলি করে হত্যা করেছে। এসব হত্যাকান্ডের বিচার করতে হবে। ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চলবেই। তাদের সাথে কথা হবে চোখে চোখ রেখে।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লিগ্যাল সেলের সদস্য শামছুদ্দোহা শাকিল বলেন, মামলা বাণিজ্যের নামে যেন কোন নিরীহ মানুষকে হয়রানি করা না হয়। সেই লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় লিগ্যাল সেল কাজ করছে।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা কমিটির আহ্বায়ক আবদুল আজিজ নাহিদ বলেন, আগামির বাংলাদেশ হবে সাম্যের দেশ, বৈষম্যমুক্ত দেশ। কিন্তু কেউ কেউ তাতে বাধাগ্রস্ত করতে চায়। আকাশে কালোমেঘ। আমাদের কালো মেঘ দূর করতে হবে। নয়তো আবার ফ্যাসিবাদের কবলে পড়ে যাবো। ইসলামের নৈতিক শক্তিতে সবাইকে বলিয়ান হতে হবে। নয়তো আবার হারতে হবে। আমরা আর হারতে চাই না।

আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির জেলা শাখার সভাপতি মুকুল হোসেন, জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা আব্দুল হামিদ মিয়া ও মুহাম্মদ শাহজালাল সবুজ, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের জেলা সভাপতি ও কুড়িগ্রাম-২ আসনের এমপি প্রার্থী এডভোকেট ইয়াসিন আলী সরকার, জেলা মজলিসে শূরা সদস্য অধ্যাপক আবদুল জলিল সরকার, রাজীবপুর উপজেলা আমীর, মাওলানা আব্দুল লতিফ, রৌমারি উপজেলা আমীর অধ্যাপক হায়দার আলী, উলিপুর উপজেলা আমীর অধ্যাপক মাওলানা মশিউর রহমান, রাজারহাট উপজেলা আমীর কফিল উদ্দিন, ফুলবাড়ি উপজেলা মাওলানা আব্দুল মালেক, কচাকাঁটা থানার আমীর মাওলানা এনামুল হক, সদর উপজেলা আমীর শামসুল হুদা মিঠু, কুড়িগ্রাম পৌর আমীর আব্দুস সবুর খান, রৌমারি উপজেলা শাখার সাবেক আমীর ও কুড়িগ্রাম-৪ আসনের এমপি প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান। উপস্থিত ছিলেন কুড়িগ্রাম জেলার সাবেক আমীর আজীজুর রহমান, চিলমারি উপজেলা আমীর, অধ্যাপক নূরে আলম মুকুল, ভুরুঙ্গামারী উপজেলা আমীর বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন।

নদী বিচ্ছিন্ন নাগেশ্বরী উপজেলার আমীর মাওলানা আবদুল মান্নান, দুধকুমার নদীর উপর সেতু নির্মাণের দাবি করেন। বক্তারা কুড়িগ্রামের শহীদ রফিকের হত্যার বিচার দাবি করেন।

error: