টিকা দেয়া হলেও ইসরাইলে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ

করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে ত্রিশ লাখের বেশি নাগরিককে ভাইরাস প্রতিরোধী টিকা দিয়েছে ইসরাইল। কিন্তু বিপুল টিকা সরবরাহের পরেও দেশটিতে বেড়ে চলছে ভাইরাস সংক্রমণ।
জেরুসালেমের কালালিত হেলথকেয়ারের করোনাভাইরাস প্রতিকার ও টিকা সরবরাহ বিষয়ক প্রধান ইয়ান মিসকিন সোমবার বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সিকে এক সাক্ষাতকারে এই কথা জানান।
মিসকিন বলেন, ইসরাইলে করোনাভাইরাস সংক্রমণের পরিস্থিতি এখনো জটিল।

তিনি বলেন, ব্রিটেনে করোনাভাইরাসের রূপান্তরিত ধরন হয়তো ইসরাইলে করোনা সংক্রমণের বেড়ে যাওয়ার পেছনে মূল কারণ হতে পারে।

মিসকিন বলেন, ‘ডিসেম্বরের শেষে যখন টিকা সরবরাহ শুরু হয়, তখনকার ভাইরাস সংক্রমণের ৩০ থেকে ৪০ ভাগ নতুন ধরনের ভাইরাস। বর্তমানে, ভাইরাস আক্রান্তের ৮০ ভাগের বেশি ব্রিটিশ রূপান্তরিত ধরনে সংক্রমিত।’

শিশুরাও ব্রিটেনের রূপান্তরিত ধরনের ভাইরাসে সংক্রমিত হচ্ছে জানান মিসকিন।

ইসরাইলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, দেশটিতে ৩০ লাখের বেশি লোককে কোভিড-১৯ টিকার প্রথম ডোজ দেয়া হয়েছে।

এছাড়া, ১৭ লাখ ইসরাইলির দ্বিতীয় ডোজের টিকা গ্রহণের কথা জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। মিসকিন বলেন, ৬০ বছরের বেশি বয়সী প্রায় ৯০ ভাগ ইসরাইলি করোনা প্রতিরোধে টিকা নিয়েছেন।

সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, ‘দ্বিতীয় ধাপে ৪০ থেকে ৫০ বছর বয়সী ইসরাইলিদের টিকা দেয়া হবে। তাদের টিকা দেয়া শেষ করতে আমাদের দুই থেকে তিন সপ্তাহ সময় প্রয়োজন।’

তিনি বলেন, ‘এক মাসের মধ্যেই, ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে ইসরাইলের বেশিরভাগ মানুষকেই টিকা দেয়া হবে।’

করোনাভাইরাস সংক্রমণ নজরদারি করা জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটারসের তথ্যানুসারে, বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা পর্যন্ত ইসরাইলে করোনাভাইরাস সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছেন ছয় লাখ ৬৮ হাজার আট শ’ ৭৪ জন। ভাইরাস সংক্রমণে মৃত্যু হয়েছে চার হাজার নয় শ’ ৪৮ জন।

করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে ইসরাইল সরকার দেশটিতে কঠোর লকডাউন দেয়। পাশাপাশি বেনগুরিয়ান বিমানবন্দর ও সীমান্তের টার্মিনাল বন্ধ করে দেয়া হয়।

এ দিকে, রোববার ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনজামিন নেতানিয়াহু এক বক্তব্যে মার্চে দেশটির পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার আশা প্রকাশ করেন।
আগামী ২৩ মার্চ ইসরাইলে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে অংশ নেয়া দলগুলো তাদের প্রচারণায় মহামারী নিয়ন্ত্রণ ও টিকা সরবরাহকে কেন্দ্র করেই তাদের প্রচারণা চালাচ্ছে।

ইসরাইলে করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধের ব্যর্থতায় নেতানিয়াহু বিপুল সমালোচনার শিকার হয়েছেন। ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে নেয়া ব্যবস্থাপনা মানতে অস্বীকারকারী বিভিন্ন ইসরাইলি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে জোরালো পদক্ষেপ না নেয়ায় তাকে দোষারোপ করা হচ্ছে।

ইয়ান মিসকিন বলেন, ইসরাইল আরো দীর্ঘ সময় করোনা মহামারীর ভেতর দিয়ে যাবে।

তিনি বলেন, ‘এটি যুদ্ধ, কিন্তু আমরা এতে জয়ী হবো।’

সূত্র : মিডল ইস্ট মনিটর

error: