টেমসসুরমাডেক্স: বৃটেন ও ফ্রান্স’কে সংযোগকারী ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন তিনজন। এই চ্যানেল পাড়ি দিতে গিয়ে প্রাণ হারানোর ঘটনা এবারই প্রথম না। প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অবৈধভাবে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেয়ার চেষ্টা করে। তবুও থেমে নেই উন্নত জীবনের আশায় অবৈধ উপায়ে এক দেশ থেকে অন্য দেশে পাড়ি জমানোর ধারাবাহিকতা।
সম্প্রতি এমন একটি হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে। রোববার সকালে একটি ছোট্ট নৌকায় করে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেয়ার সময় অতিরিক্ত ঠাণ্ডায় মারা যান ওই তিন ব্যক্তি। এ সময় উদ্ধার করা হয়েছে ৪৫ জনকে। তাদেরকে সমুদ্রতীরে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। উদ্ধার করা এসব মানুষের বেশির ভাগই হাইপারথার্মিয়ায় ভুগছেন। এসব ব্যক্তি কোন দেশের নাগরিক সে সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। খবরটি নিশ্চিত করে ফ্রেঞ্চ কোস্টগার্ড। রোববার স্থানীয় সময় সকাল ছয়টায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। ক্যালে’র কাছে স্যানগেটে সমুদ্রতীরে ওঠার চেষ্টা করছিলেন নৌকার মানুষগুলো। কিন্তু শেষমেষ পানিতে থাকা অবস্থায়ই মৃত্যুবরণ করতে হয় তিনজনকে। পরে হেলিকপ্টারে করে উদ্ধার করা হয় ওই তিন জনের মৃতদেহ। দুর্ঘটনার চারদিন আগে ১৪৮৫ জন যাত্রী নিয়ে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেয়ার চেষ্টা করে একটি নৌকা। ২০১৮ সালের পর থেকে অবৈধভাবে চ্যানেল পাড়ি দেয়া ব্যক্তিদের হিসাব রাখা শুরু করা হয়। তার মধ্যে এ বছরটিই এই চ্যানেলে সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা গেছেন। এ বছর ৩৬ হাজারের বেশি মানুষ অবৈধ উপায়ে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়েছেন। যা ২০২৩ সালের তুলনায় অনেক বেশি। ২০২৩ সালে মোট ২৯ হাজার ৪৩৭ জন অবৈধভাবে এই চ্যানেল পাড়ি দেন। অবৈধভাবে চ্যানেল পাড়ি দিতে গিয়ে প্রাণ হারান- এমন মানুষদের হিসাব রাখে জাতিসংঘের সংস্থা দ্য ইন্টারন্যাশনাল অর্গাাইজেশন ফর মাইগ্রেশন (আইওএম)। এ সংস্থার তথ্য অনুযায়ী এ বছর চ্যানেল পাড়ি দিতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৭৭ জন।
ফ্রান্সের সীমান্ত নিরাপত্তা ও আশ্রয় বিষয়ক মন্ত্রী ডেম অ্যাঞ্জেলা ইগল বলেন, কিছু অপরাধী সমুদ্রে যাওয়ার অযোগ্য এমন যান ব্যবহার করে অতিরিক্ত মানুষ একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে পারাপার করছে। ফলশ্রুুতিতে, প্রতিনিয়ত প্রাণ হারাচ্ছে অসংখ্য মানুষ। তিনি আরও বলেন, সরকার ইতিমধ্যে এসব অপরাধীর গ্যাং নির্মূল করতে ফরাসী কর্র্তৃপক্ষকে সাহায্য করছে। স্যানগেটের মেয়র গাই অ্যালেমান্ড বার্তা সংস্থা এএফপি’কে জানান, ঝুঁকিপূর্ণ উপায়ে চ্যানেল পাড়ি দেয়ার প্রতিযোগিতা থামছেই না। প্রতিনিয়ত এমন ঘটনা ঘটছে একের পর এক। প্যাস ডে ক্যালে রাজ্যের এমপি পিয়েরে-হেনরি ডামন্ট বলেন, এভাবে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেয়া খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। বিশেষ করে বছরের এ সময়ে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেয়া অন্যান্য যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্র্ণ বলে মন্তব্য করেন তিনি। আরও বলেন, যদিও উদ্ধারকারী দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পদক্ষেপ গ্রহণ করার সামর্থ রাখে। কিন্তু এমন প্রতিকূল অবস্থায় সেখানে কয়েক মিনিট অবস্থান করা হতে পারে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ।