কাগজে কলমে ‘ছোট’ দল হলেও অর্জনের পাল্লা বিশাল ভারী নেদারল্যান্ডসের। প্রতি আসরেই নানা চমক নিয়ে হাজির হয় দলটা। এবার অবশ্য করতে পারেনি তেমন কিছু, তবে আজ না করলেই হয়। ডাচদের প্রতিপক্ষ যে বাংলাদেশ।
বিশ্বকাপে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে আজ মাঠে নামবে বাংলাদেশ। সেন্ট ভিনসেন্টে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে খেলবে টাইগাররা। বলা যায় বাংলাদেশের সুপার এইটে যাওয়ার পথে গলার কাঁটা হয়ে আছে এই ডাচরা। বৃহস্পতিবার খেলা শুরু রাত ৮টায়।
এবারের বিশ্বকাপে বাংলাদেশ আছে গ্রুপ অব ডেথ খ্যাত ‘ডি’ গ্রুপে। যেখান থেকে টানা তিন জয়ে সবার আগে সেরা আট নিশ্চিত করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। তেমনি বিদায় ঘণ্টা বেজে গেছে শ্রীলঙ্কার। তবে মধ্যবর্তী থাকা তিন দেশ- বাংলাদেশ, নেদারল্যান্ডস ও নেপাল এখনো ধরে রেখেছে সম্ভাবনা।
প্রোটিয়ারা সুপার এইট নিশ্চিত করায় এই গ্রুপ থেকে আর মাত্র একটা দল সুযোগ পাবে সুপার এইটে। যেই লড়াইয়ে নেপাল খানিকটা পিছিয়ে থাকলেও মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডসের মাঝে। সেই প্রতিদ্বন্দ্বিতার ইতি হতে পারে আজই, মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডস।
ম্যাচটা বাংলাদেশের জন্যে ‘ডু অর ডাই‘। সুপার এইটের আশা বাঁচিয়ে রাখতে হলে আজ নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে জয় পেতেই হবে টাইগারদের। হেরে গেলে যদিও সম্ভাবনা থাকবে, তবে থাকবে অনেক যদি-কিন্তুর হিসাব। একই সমীকরণ অবশ্য নেদারল্যান্ডসের জন্যেও।
এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপে সমানে সমান বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডস। দু’টি করে ম্যাচ খেলে সমান একটা করে জয় উভয়ের, পয়েন্টও সমান। দুই দলই হেরেছে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে। তাই ম্যাচটা বেশ চ্যালেঞ্জিং হতে যাচ্ছে। যেখানে সুপার এইটের দৌড়ে এগিয়ে যাবে যেকোনো এক দল।
হয়তো বাঘ-ভাল্লুক নয়, তবে নেদারল্যান্ডসকে বরাবরই একটু সমীহ করেই চলতে হয়। বিশেষ করে ২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ও ২০২৩ ভারত বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারানোর পর যেকোনো দলকেই ভাবতে হয় তাদের নিয়ে। বাংলাদেশকে তো একটু বেশিই!
এই নেদারল্যান্ডসের কাছে হেরেই তো গত ভারত বিশ্বকাপে ব্যর্থতার ষোলকলা পূর্ণ করেছিল বাংলাদেশ। নিজেদের সবচেয়ে বড় শক্তির জায়গা ওয়ানডেতেও হেরে যায় অনেকটা আত্মসমর্পণ করে, যা বিশ্ব ক্রিকেটে লজ্জায় ডুবায় টাইগারদের।
টি-টোয়েন্টিতেও নেদারল্যান্ডসের কাছে হারের রেকর্ড আছে বাংলাদেশের। ২০১২ সালে তামিম, সাকিব মাহমুদউল্লাহদের নিয়েও ডাচদের কাছে হারতে হয় ১ উইকেটে। যদিও সব মিলিয়ে সাফল্যের পাল্লা বাংলাদেশের দিকেই ভারী বেশ।
এখন পর্যন্ত চার দেখায় ৩টাতেই জিতেছে বাংলাদেশ। বিশ্বকাপেও দেখা হয়েছে দু’বার, ২০১৬ ও ২০২২ বিশ্বকাপে। দু’বারই জিতেছে বাংলাদেশ, তবে বেশ কষ্ট করেই। একবার ৮ ও অন্যবার ৯ রানে জয় পায় বাংলাদেশ।
প্রোটিয়াদের হারাতে পারলে অবশ্য এতো ভাবতে হতো না, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে হাতের নাগালেই ছিল জয়টা। যদিও শেষ মুহূর্তে হয়েছে হাতছাড়া। সেটা আসলে এখন নিশ্চিন্তেই থাকা যেত অনেকটা। ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে দেখা যেত নির্ভার বাংলাদেশকে। তবে যা হয়নি, তা নিয়ে আর কথা বলেই লাভ কী!