আকস্মিক বন্যায় সিলেটের ৫টি উপজেলার ৩৬ টি ইউনিয়নের ৩ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে পরিস্থিতির অবনতি হলেও বিকেলের দিকে উন্নতি হতে থাকে। তবে এখনো বানভাসি লোকজন আশ্রয় কেন্দ্রেই অবস্থান করছেন। উজানে বৃষ্টিপাত না হলে আজ শুক্রবার পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে বলে আভাস দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। অন্যদিকে সিলেটের নদ নদীর সবকটা পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। বিপদসীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। বানভাসি লোকজনকে স্থানীয়দের সহায়তায় আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়েছে। সুরমা নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে নগরীর তালতলাসহ বিভিন্ন এলাকায় পানি উঠার খবর পাওয়া গেছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য বলা হয়েছে। সেনাবাহিনী প্রস্তুত রাখা হয়েছে। মেডিকেল টিমও গঠন করেছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান গতকাল জৈন্তাপুরে বন্যার্তদের মধ্যে রান্না করা খাবার ও পানি বিতরণ করেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে জেলার সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ধীরে ধীরে উজানের ঢল নেমে গিয়ে অন্য জেলার অন্য উপজেলাগুলোতেও পানি বাড়ছে। প্রশাসনসহ সামাজিক ও ব্যক্তি উদ্যোগে বন্যা কবলিত এলাকায় ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রমতে, জেলার গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কোম্পানীগঞ্জ, কানাইঘাট ও জকিগঞ্জ উপজেলায় ৩ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছেন। এখানকার বেশিরভাগ এলাকার ঘরবাড়ি বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। অনেকের ঘরের ভিতরে কোমর সমান পানি আবার অনেকের ঘর একেবারে ডুবে গেছে। প্রধান প্রধান সড়কগুলোতে পানি উঠে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। মানুষজন কোথাও বের হতে পারছেন না। নষ্ট হচ্ছে ঘরবাড়ির মালামাল। অনেকে ঘরের মালামাল ও গবাদি পশু রেখে আশ্রয়কেন্দ্রেও যাচ্ছেন না। ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে যাওয়াতে রান্নাবান্নারও সুযোগ নেই। নেই শুকনো খাবারও। মানুষের বাড়িঘরে দ্রুত পানি ঢুকে পড়ায় অনেক মানুষ ঘরবন্দি হয়ে পড়েছেন। পর্যাপ্ত নৌকার অভাবে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে বেগ পোহাতে হয় বানবাসীদের। সীমান্তবর্তী এলাকাগুলো থেকে পানি কমতে শুরু হলেও সিলেট সদর উপজেলাসহ বিভিন্ন এলাকায় পানি বাড়ছে।
অন্যদিকে বুধবার রাতে জৈন্তাপুর উপজেলায় অনেকের ঘরবাড়ি ডুবে এক আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছিল সেখানে। যার কারণে মানুষজন আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে চাইলে মধ্যরাতে পর্যাপ্ত নৌকার অভাবে যেতে পারেননি। পরে সকালে অনেকে যান। আর গোয়াইনঘাট উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নই প্লাবিত হয়েছে। উপজেলার অধিকাংশ এলাকার মানুষজন আশ্রয়কেন্দ্রে আছেন।