ইংল্যান্ডের ইয়র্কশায়ারে নিজ দাদার কাছ থেকে ৭০ হাজার পাউন্ডের বেশি অর্থ আত্মসাতের দায়ে এক নারীকে ১৮ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। অভিযুক্ত ম্যাডেলিন শ’ (৩২), বোরোবি এলাকার বাসিন্দা। তিনি তার বৃদ্ধ ও অসুস্থ দাদার আর্থিক খরচ ও সম্পত্তি ব্যবস্থাপনার পূর্ণ ক্ষমতা পেয়েছিলেন। সেই সুযোগ দুর্নীতির উদ্দেশ্যে ব্যবহার করে তিনি নিয়মিতভাবে তার ব্যাংক হিসাব থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ নিজের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করেন।
গত আগস্টে ইয়র্ক ক্রাউন কোর্টে শ’ নিজের অবস্থানের অপব্যবহার করে জালিয়াতির অভিযোগ স্বীকার করেন। আদালতের শুনানিতে প্রমাণ পাওয়া যায়, মোট ১ লাখ ২৫ হাজার পাউন্ড শ’ নিজের অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করেছিলেন। এর মধ্যে ৭১ হাজার ৬০০ পাউন্ড আত্মসাতের দায়ে তিনি অপরাধ স্বীকার করেন। বাকি ৫৩ হাজার পাউন্ড সম্পত্তি উন্নয়নের নামে ব্যয় হয়েছে বলে দাবি করলেও পরে তা নিজেই প্রতারণা বলে মেনে নেন।
আর্থিক তদন্তে দেখা যায়, ক্ষমতা পাওয়ার অল্প সময় পরেই তিনি তার দাদার অ্যাকাউন্ট থেকে ৯৯ হাজার ৫৯০ পাউন্ড তুলে নেন। এছাড়া ২০ হাজার পাউন্ড অন্য একটি অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করে পরে আবার নিজের দখলে নেন। তিনি নগদ ৪ হাজার ৪৯০ পাউন্ড উত্তোলনসহ নানা বিপণি প্রতিষ্ঠান থেকে ছোট ছোট ক্রয়ও করেন।
শ’ দাবি করেন, এসব অর্থ তার দাদার বিনোদন, ভ্রমণ ও বাড়ির উন্নয়নের কাজে ব্যয় করা হয়েছে। তবে তদন্তে তিনি কোনো রসিদ, উপকরণ, শ্রমিকের তথ্য বা কাজের প্রমাণ দেখাতে ব্যর্থ হন। বরং বিশেষজ্ঞরা জানান, প্রবীণ ব্যক্তির বাসভবনটি নিরাপত্তাজনিত কারণে ব্যাপক মেরামতের প্রয়োজন ছিল, যা কখনও বাস্তবায়ন হয়নি।
২০২১ সালে শ’-এর দাদার মৃত্যু হলে আর্থিক হিসাব-নিকাশে বড় ধরনের অমিল ধরা পড়ে। পরে নর্থ ইয়র্কশায়ার পুলিশের ইকোনমিক ক্রাইম ইউনিট তদন্ত শুরু করলে প্রতারণার পুরো চিত্র সামনে আসে। অভিযোগ রয়েছে, দাদার যত্ন ও নার্সিং হোমের খরচ পরিশোধের মতো পর্যাপ্ত অর্থ থাকা সত্ত্বেও শ’ এসব বিল পরিশোধ করেননি। যত্ন কেন্দ্রের কর্মীরা প্রয়োজনীয় টয়লেট্রিজ চাইলে তিনিও তা সরবরাহ করেননি।
অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে নথি পাওয়ার পর ‘অফিস অব পাবলিক গার্ডিয়ান’ সন্দেহজনক লেনদেন ঠেকাতে অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে দেয়। তদন্ত শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত শ’কে দণ্ড দেন।
নর্থ ইয়র্কশায়ার পুলিশের অর্থনৈতিক অপরাধ ইউনিটের কর্মকর্তা পিসি এমা হ্যারিস বলেন, “ম্যাডেলিন শ’ তার ভঙ্গুর ও অসহায় দাদার প্রতি অর্পিত আস্থা ভঙ্গ করেছেন। তার অর্থ নিজের স্বার্থে ব্যয় করেছেন। প্রমাণের মুখে তিনি অবশেষে অপরাধ স্বীকার করেছেন।”
আদালত জানিয়েছে, পরবর্তীতে প্রোসিডস অব ক্রাইম অ্যাক্ট-এর আওতায় আত্মসাৎ করা অর্থ ফেরত আনার প্রক্রিয়া শুরু হবে।