বাংলাদেশি কর্মীদের অধিকার রক্ষায় হসপিটালিটি ওয়ার্কার্স ফোরাম ইউকের আত্মপ্রকাশ

ওয়ান কমিউনিটি, ইক্যুয়াল রাইটস’-এই শ্লোগানকে সামনে রেখে যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশি হসপিটালিটি ওয়ার্কার্স ফোরাম ইউকে নামের একটি নতুন সংগঠনের আত্মপ্রকাশ হয়েছে। হসপিটালিটি ইন্ডাস্ট্রিতে কর্মরত বাংলাদেশি কর্মীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা, সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি এবং পেশাগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এ সংগঠন যাত্রা শুরু করেছে।

গত ২৭ জুন (মঙ্গলবার) এক সভায় গোলাম কবির রুমেলকে প্রেসিডেন্ট, আব্দুল মুনিম বেলালকে সেক্রেটারি জেনারেল এবং ওহিদ চৌধুরীকে ট্রেজারার করে একটি ১৫ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কার্যকরী কমিটি ঘোষণা করা হয়। বিশিষ্ট কমিউনিটি সংগঠক ও সমাজকর্মী ছরওয়ার আহমদ ও কবি, সাংবাদিক আনোয়ারুল ইসলাম অভি নির্বাচন কমিশনানের দায়িত্ব পালন করেন।

এসময় তারা সাংগঠনিক বিভিন্ন নিয়ম-নীতি ও পরিসেবার দিকগুলো তুলে ধরে বলেন, বৃটেনে বাংলাদেশীদের প্রতিষ্ঠিত অসংখ্য সংগঠন আছে। যা মূলত বাংলাদেশের নিজ নিজ অঞ্চলভিত্তিক সংগঠন। সাংগঠনিকভাবে তাদের সামাজিক ও মানবিক কাজগুলো একটি নিদৃষ্ট সীমারেখার মধ্যে আবদ্ধ। বৃটেনের মাল্টিকালচারাল সমাজের সমস্যা ও সম্ভাবনার ক্ষেত্রগুলো নিয়ে খুব কম সংখ্যক বাংলাদেশী সংগঠন কাজ করছে। যা বাংলাদেশী ডায়াসপোরা কমিউনিটির জন্য খুব হতাশা জনক।

১৫ সদস্যবিশিষ্ট এই কমিটিতে আরও যারা দায়িত্ব পেয়েছেন ভাইস প্রেসিডেন্ট-১ খলিলুর রহমান, ভাইস প্রেসিডেন্ট-২ মো. ছাইফুল আলম, অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি রাসেল চৌধুরী, অর্গানাইজিং সেক্রেটারি আবু রহমান, আইন ও মানবাধিকার সম্পাদক এডভোকেট সি. এম. কামরুজ্জামান রাসেল, প্রেস ও পাবলিকেশন সম্পাদক: মো. ইব্রাহিম, মেম্বারশিপ ও ইভেন্ট সেক্রেটারি মো. আব্দুল লতিফ, কার্যকরী সদস্য জিদ্দি চৌধুরী, জাকির হোসেন, লিয়াকত খান, ফয়ছল আহমদ, শরিফুল ইসলাম রবিন।

উল্লেখ্য, ব্রিটেনের রেস্তোরাঁ, পাব, বার, হোটেল, ইভেন্ট ও পর্যটন সেবাখাতে বাংলাদেশি-ব্রিটিশদের ১৯ শ শতক থেকেই অবদান রাখছেন। ২০২৫ সালে এই সেক্টরের বাজার মূল্য দাঁড়িয়েছে ৫৮.৮৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মাধ্যমে যুক্তরাজ্যের জিডিপিতে অবদান প্রায় ২৫২.৪ বিলিয়ন পাউন্ড এবং সরকারের কোষাগারে বার্ষিক আয় প্রায় ৫৪ বিলিয়ন পাউন্ড। এই খাতে মোট কর্মশক্তির প্রায় ৮ শতাংশ নিযুক্ত থাকলেও বর্তমানে ১১ শতাংশ পদ শূন্য রয়েছে, যা একটি চ্যালেঞ্জ। উল্লেখযোগ্য যে, যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশি মালিকানাধীন রেস্তোরাঁগুলোর ৮৫–৯০ শতাংশ পরিচালিত হয় বাংলাদেশি কর্মীদের দ্বারা। সেখানে ৮০ হাজারের বেশি কর্মী যুক্ত, যা লক্ষাধিক পরিবারকে উপকৃত করছে।

এদিকে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কেয়ার ভিসাসহ নানা কর্মসংস্থান ভিসার মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে আসা বহু কর্মী প্রতারণার শিকার হয়েছেন। তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। যা কমিউনিটিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। তাদের সমস্যা ও দাবি দাওয়া নিয়ে সাংগঠনিকভাবে কমিউনিটি সংগঠনগুলোর ভূমিকা অতি নগণ্য।

বাংলাদেশী হসপিটালিটি ওয়ার্কার্স ফোরাম ইউকের সদস্যবৃন্দ, দীর্ঘদিন থেকে কমিউনিটিতে নানা সেবামূলক কাজের সাথে সম্পৃক্ত এবং সাংগঠনিকভাবে অভিজ্ঞতালব্ধ। কমিটির সকলে হসপিটালিটি ইন্ডাস্ট্রির দাবী-দাওয়া, সাফল্য ও সম্ভাবনার দিকগুলো নিয়ে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।

কমিটির সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে কমিউনিটিতে সেবামূলক ও সাংগঠনিক কার্যক্রমে যুক্ত। তাঁরা হসপিটালিটি খাতে কর্মরত বাংলাদেশিদের অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় নিরলসভাবে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন।

error: