ভারতে জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন পাওয়া কোভ্যাক্সিন টিকার পরীক্ষা বাংলাদেশে পরিচালনার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছে এর প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ভারত বায়োটেক। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছেন সরকার পরিচালিত বাংলাদেশ মেডিক্যাল রিসার্চ কাউন্সিলের পরিচালক মাহমুদ-উজ-জামান। তিনি জানান, ভারত বায়োটেকের আবেদনটি খতিয়ে দেখবে কাউন্সিলের এথিকস কমিটি। তবে এর বেশি জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন তিনি।
এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসের কোনও টিকা পরীক্ষা চালানোর অনুমতি দেয়নি বাংলাদেশ। এদিকে, ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ-এর সহায়তার ভারত বায়োটেকের উদ্ভাবিত টিকা কোভ্যাক্সিন এই মাসে ভারতে জরুরি ব্যবহারের অনুমতি পেয়েছে। তবে টিকাটি এখনও ব্যাপক পরিমাণ পরীক্ষায় কার্যকারিতা প্রমাণ করতে পারেনি। তবে প্রাথমিক পরীক্ষাগুলোতে দেখা গেছে, টিকাটি নিরাপদ এবং মানুষের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে সক্ষম।
রয়টার্স জানিয়েছে, ভারত বায়োটেকের হয়ে বাংলাদেশে কোভ্যাক্সিনের পরীক্ষা চালানোর অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছে ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ডাইরিয়াল ডিজেস রিসার্চ, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর,বি)। তবে এ বিষয়ে সরাসরি মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে আইসিডিডিআর,বি এবং ভারত বায়োটেক।
এর আগে চীনা কোম্পানি সিনোভ্যাক বায়োটেকের করোনা টিকার চূড়ান্ত ধাপের পরীক্ষার জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে আলাপ আলোচনা শুরু করে। তবে চীনা কোম্পানিটি বাংলাদেশকে অর্থায়নের প্রস্তাব দিলে তা প্রত্যাখ্যান করে ঢাকা। ফলে টিকা বাংলাদেশের জন্য অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
গত বছরের নভেম্বরে নিজ দেশে কোভ্যাক্সিনের চূড়ান্ত ধাপের পরীক্ষা শুরু করে ভারত বায়োটেক। ওই সময়ে ভারতের একজন শীর্ষ টিকা কর্মকর্তা বিনোদ কুমার পাল রয়টার্সকে জানান, এক থেকে দুই হাজার মানুষের ওপর একই আকারের একটি পরীক্ষা বাংলাদেশেও চালানো হতে পারে।
এদিকে বৃহস্পতিবার থেকে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভাবিত টিকা কোভিশিল্ড ভারতের কাছ থেকে গ্রহণ করা শুরু করেছে বাংলাদেশ। টিকাটি প্রস্তুত করেছে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট। তবে ভারতের কাছ থেকে কোভ্যাক্সিন নেওয়ার তাৎক্ষণিক কোনও পরিকল্পনা বাংলাদেশের নেই।
বাংলাদেশের স্বাস্থ্য সচিব আবদুল মান্নান রয়টার্সকে বলেন, ‘আমাদের টিকা কেনার প্রক্রিয়া ভালোভাবেই এগুচ্ছে। ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকেই আমরা টিকা প্রদান শুরু করবো। এই মুহূর্তে ভারত বায়োটেকের টিকা কেনার কোনও পরিকল্পনা নেই।’
এখন পর্যন্ত একমাত্র দেশ হিসেবে ব্রাজিলই কোভ্যাক্সিন টিকা ভারতের কাছ থেকে কেনার কথা প্রকাশ্যে স্বীকার করেছে। এছাড়া কোম্পানিটি ফিলিপাইনে জরুরি ব্যবহারের অনুমতি চেয়ে বৃহস্পতিবার আবেদনপত্র জমা দিয়েছে।