দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে খোলামেলা কথা বলতে বিএনপিকে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াতের নায়েবে আমীর ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী বিএনপি’র সঙ্গে কোনো বিরোধ বা ঝগড়ায় লিপ্ত হতে চায় না। যতই উস্কানি দেয়া হোক, যাই করছেন এবার বন্ধ করুন। আসুন আমরা একসঙ্গে বসি। দেশের এই পরিস্থিতি নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করি। এতে জাতি স্বস্তি পাবে। আমরা আলোচনা করবো- কীভাবে সত্যিকার অর্থে একটা স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ তৈরি হবে। রোববার রাজধানীর মগবাজার আল-ফালাহ মিলনায়তনে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের এসব কথা বলেন। জামায়াতের নায়েবে আমীর বলেন, রাজনীতির অনেক খেলা আছে, আমরা খেলতে চাই না। সোমবার জামায়াতের দলীয় বৈঠক রয়েছে। সেখানে আমাদের পরবর্তী কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হবে।
বিএনপিকে আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা এই আহ্বান এখন মিডিয়ার মাধ্যমে দিচ্ছি। দেখি তারা কাল মিডিয়ায় কী প্রতিক্রিয়া দেখায়। ’৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে বিএনপি নেতাদের বক্তব্যকে আওয়ামী লীগের ন্যারেটিভ প্রচার বলে মন্তব্য করে আব্দুল্লাহ তাহের বলেন, তারা একেকজন একেক চ্যাপ্টার নিয়েছে জামায়াতের বিরুদ্ধে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন- আমরা মিথ্যা বলেছি। তাকে স্পষ্ট করার আহ্বান জানাচ্ছি যে, আমরা কোন পয়েন্টে মিথ্যা বলছি সেগুলো যেন প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, উনাদের আরেক নেতা বলেছে, জামায়াতে ইসলামীকে ব্যান করা উচিত। জামায়াতে ইসলামীকে যদি ১৯৯১ সালে বিএনপি ব্যান করতো তাহলে তারা সরকার গঠন করতো কীভাবে। আমরা তাদের থেকে এই ক্ল্যারিফিকেশন চাচ্ছি।
১৯৯১ সালে আমরা ১৮ আসন পেয়েছিলাম। এরপর বেগম খালেদা জিয়া আমাদের আহ্বান করেন তাদের সমর্থন দিয়ে সরকার গঠনে সহযোগিতা করতে। তারপর আমরা চিঠি দিয়ে তাদের সহযোগিতা ও সমর্থন করেছি। তিনি বলেন, জামায়াতকে নিয়ে বিএনপি’র নেতারা এমন সব কথা বলেন যেগুলো সত্যি হলে তারা নিজেরাই বেকায়দায় পড়ে যেতো। আমরা সিভিলাইজড পলিটিক্যাল পার্টি। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে সকল আন্দোলন সংগ্রামে আমরা ছিলাম। তাদের উপকার করেছি। যার ফলে আমাদের নেতাকর্মীদের ফাঁসি দিয়েছে। তাদের তো কোনো সিনিয়র নেতাকর্মীর ফাঁসি দেয়নি। ক্ষতি আমাদের হয়েছে কিন্তু ফল ভোগ করছে তারা।
বিএনপি আওয়ামী লীগের ন্যারেটিভ দিচ্ছে। বিএনপি ততক্ষণ বিএনপি থাকে যতক্ষণ আওয়ামী লীগ ও বিএনপি’র বিরোধ থাকে। যখন এই বিরোধ আমাদের সঙ্গে হয় তখন তারা আওয়ামী লীগের চেয়ারে বসে বিরোধিতা করে। এটা রাজনৈতিক সততার অভাব। গণভোট নিয়ে বলেন, গণভোট ইস্যুতে বিএনপি বলেছে দুই নির্বাচন একদিনে হবে। কিন্তু দুটো ভোটের চরিত্র ভিন্ন। গণভোট থেকে জাতীয় নির্বাচন অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, কোনো কোনো মহল বলেন যে, গণভোটে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন। তাদের জবাবে বলতে চাই, জাতীয় সংকট থেকে উত্তরণের জন্য গণভোটে যে টাকা খরচ হবে জাতীয় প্রয়োজনে এটা কিছুই নয়। ফ্যাসিবাদীরা দেশের যে টাকা বিদেশে পাচার করেছে তা দিয়ে এক হাজারটি গণভোট করা সম্ভব।