ভারতে উত্তরাখন্ডের চামোলি জেলায় নন্দাদেবী শিখরের কাছে একটি গ্লেসিয়ার বা হিমবাহ ধসে গিয়ে ভাটির বিস্তীর্ণ এলাকাকে ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। এতে এক শ’ থেকে দেড় শ’ মানুষ নিহত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। রোববার সকালে এ ঘটনা ঘটে।
নির্বাচনী প্রচারণায় এদিন আসামে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
সেখান থেকেই তিনি টুইট করে জানিয়েছেন, ‘উত্তরাখন্ডের এই দুর্ভাগ্যজনক পরিস্থিতির আমি প্রতিনিয়ত নজর রাখছি।’
এই বিপদে সারা ভারত উত্তরাখন্ডের পাশে আছে বলেও তিনি মন্তব্য করেছেন।
এদিকে উত্তরাখন্ড রাজ্যের মুখ্য সচিব ওম প্রকাশ বার্তা সংস্থা এএনআই-কে বলেছেন, অ্যাভালাঞ্চ বা হিমবাহ ধসের পর যে জলোচ্ছ্বাস ও বন্যা হয়েছে তাতে কমপক্ষে এক শ’ থেকে দেড় শ’ মানুষ মারা গেছেন বলে তারা আশঙ্কা করছেন।
‘ফ্ল্যাশ ফ্লাডে’ আরো কয়েক শ’ মানুষ আটকা পড়ে আছেন বলে কর্তৃপক্ষ ধারণা করছে। বহু লোকের খোঁজ মিলছে না।
হিমালয়ের নন্দাদেবী শৃঙ্গের কাছে একটি হিমবাহ বিষ্ফোরিত হওয়ায় তীব্র জলরাশি অলকানন্দা ও ধৌলিগঙ্গা নদীতে আকস্মিক বন্যা ডেকে আনে।
ওই নদী দুটিতে পানির স্তর হঠাৎ করেই বেশ কয়েক মিটার বেড়ে যায়।
ভাটিতে যে ঋষিগঙ্গা বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে, বন্যার প্রথম আঘাতটা সেখানেই পড়ে।
উত্তরাখন্ডের স্টেট ডিজ্যাস্টার রেসপন্স ফোর্সের (রাজ্য দুর্যোগ মোকাবেলা বাহিনী) ডিআইজি ঋধিম আগরওয়ালকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, ওই বিদ্যুৎকেন্দ্রের দেড় শ’রও বেশি কর্মীর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
আগরওয়াল পিটিআই-কে জানান, ‘ওই বিদ্যুৎকেন্দ্রের কর্তৃপক্ষ আমাদের বলেছেন প্রোজেক্ট সাইটে কর্মরত দেড়শোর মতো কর্মীর সাথে তারা যোগাযোগই করতে পারছেন না।’
চামোলি জেলার ওই অঞ্চলে অনেকগুলো রেলপথ ও সড়ক নির্মাণ প্রকল্পেরও কাজ চলছে।
সেখানে যে সব শ্রমিক ও কর্মচারীরা রয়েছেন, তাদের সুরক্ষা নিয়েও প্রবল উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।
রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা টিমের দুই শ’ কর্মী ইতোমধ্যেই ত্রাণ ও উদ্ধার অভিযানে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন।
ভারতের জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (এনডিআরএফ)-র পাঁচটি দলও ঘটনাস্থলে পৌঁছে গেছে, যার চারটি গেছে দিল্লি থেকে, আর একটি দেরাদুন থেকে।
ইন্দো-টিবেটান বর্ডার পুলিশ নামে ভারতের যে সীমান্তরক্ষী বাহিনী চীন-লাগোয়া ওই অঞ্চলটিতে প্রহরার কাজে মোতায়েন, তাদেরও দুটো দল বন্যাবিপর্যস্ত এলাকায় তল্লাসি ও উদ্ধারের কাজ শুরু করেছে।
সূত্র : বিবিসি