ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ কী অত্যাসন্ন?

সামরিক সংঘাতের পথেই কি চলছে ভারত? প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সেনাবাহিনীকে পাকিস্তানে হামলার স্বাধীনতা দেয়ার পর এমন প্রশ্ন উঠেছে সব মহলে। অবশ্য পাকিস্তানের পক্ষ থেকে সমান হুঙ্কার ছাড়া হয়েছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ জানিয়ে দিয়েছেন, ভারতের যেকোনো আগ্রাসনের বিরুদ্ধে শক্তিশালী জবাব দেবে পাকিস্তান। তার সেনাবাহিনী এ জন্য প্রস্তুত বলে শীর্ষ স্থানীয় কর্মকর্তারা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। কারাগারে রয়েছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। সেখান থেকেই তিনি মোদির যুদ্ধংদেহী মনোভাবের নিন্দা জানিয়েছেন। ফলে যেকোনো সময় পারমাণবিক শক্তিধর এ দু’টি দেশের মধ্যে যুদ্ধ শুরুর ভয়াবহ এক আশঙ্কা বিরাজ করছে। পাকিস্তানের বার্তা সংস্থা এপিপি জানিয়েছে, বিরাজমান উত্তেজনার মধ্যে ভারতীয় বিমান বাহিনীর চারটি রাফায়েল যুদ্ধবিমান ভারতশাসিত কাশ্মীরে টহল দিচ্ছিল মঙ্গলবার রাতে। কিন্তু দ্রুতই তাকে শনাক্ত করে পাকিস্তান বিমান বাহিনী।

 নিরাপত্তা সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে রিপোর্টে বলা হয়, পাকিস্তান বিমান বাহিনীর গৃহীত পদক্ষেপে তারা পিছু হটতে বাধ্য হয়। উত্তেজনা তুঙ্গে থাকা অবস্থায় উদ্বেগ প্রকাশ করে দুই দেশের সঙ্গে কথা বলেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস। বুধবার পাকিস্তান ও ভারতের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে উত্তেজনা নিরসনে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্ক রুবিও কথা বলার কথা। এমন অবস্থায় পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার বলেছেন, ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে ভারত সামরিক অভিযানে নামবে বলে গোয়েন্দা সূত্রে খবর পেয়েছেন। বুধবার পর্যন্ত ছয় রাত ধরে দুই দেশের মধ্যে গুলিবিনিময় চলছে। ছোট অস্ত্রে চলছে এই গুলিবিনিময় সেকথা ভারতের সেনারাই জানিয়েছেন। তবে ভারতের উচ্চপর্যায়ে তৎপরতা তুঙ্গে। সাড়ে পাঁচ বছর পর সুপার কেবিনেটের বৈঠক হয়েছে বুধবার। রাজনীতিবিষয়ক কেবিনেট কমিটিকেই সুপার কেবিনেট হিসেবে ধরা হয়। গুরুত্বপূর্ণ সব মন্ত্রীরাই এই কমিটির সদস্য। ২০১৯ সালে পুলওয়ামায় হামলার পরে সর্বশেষ বসেছিল সুপার কেবিনেটের বৈঠক। তারপরই পাকিস্তানের ভেতরে হয়েছিল ভারতের সার্জিক্যাল স্ট্রাইক।

বুধবার সারা দিনই ভারতের শীর্ষ নেতারা ব্যস্ত ছিলেন একের পর এক বৈঠকে। মাত্র চারদিন আগে হওয়া নিরাপত্তা সংক্রান্ত কেবিনেট কমিটির বৈঠক হয়েছে। বুধবার ফের বসেছিল সেই বৈঠক। এ ছাড়াও অর্থনীতি বিষয়ক কেবিনেট কমিটিরও বৈঠক হয়েছে বুধবার। সবক’টি বৈঠকেই সভাপতিত্ব করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। উপস্থিত ছিলেন রাজনাথ সিং, নির্মলা সীতারমন, অমিত শাহ, জেপি নাড্ডা, নীতিন গড়কড়ি সহ শীর্ষ মন্ত্রীরা। সংবাদ সংস্থা সূত্রের খবর, সব বৈঠকের আলোচ্য বিষয় ছিল নিরাপত্তা পরিস্থিতি এবং সামরিক প্রস্তুতি। সাত বছর পরে নিরাপত্তা উপদেষ্টা পর্ষদ পুনর্গঠন করেছে মোদি সরকার। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের নেতৃত্বাধীন ‘জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ’ সুরক্ষা সংক্রান্ত মূল পদক্ষেপের দায়িত্বে রয়েছে। ভারতীয় গুপ্তচর সংস্থা ‘র’-এর সাবেক ডিরেক্টর অলোক যোশীকে উপদেষ্টা পর্ষদের প্রধান করা হয়েছে। ছয় সদস্যের জাতীয় নিরাপত্তা পর্ষদে রয়েছেন সাবেক কূটনীতিক বি ভেঙ্কটেশ বর্মা, ভারতীয় বিমান বাহিনীর পশ্চিমাঞ্চলীয় কমান্ডের সাবেক প্রধান এয়ার মার্শাল পিএম সিংহ, স্থলসেনার দক্ষিণাঞ্চলীয় কমান্ডের সাবেক জিওসি লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) একে সিংহ এবং নৌসেনার অবসরপ্রাপ্ত রিয়ার অ্যাডমিরাল মন্টি খান্না। দুই অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস অফিসার রাজীব রঞ্জন বর্মা এবং মনমোহন সিংহও রয়েছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পর্ষদে।

সূত্র:মানবজমিন।

error: