যুক্তরাজ্যে নির্বাচন: সস্ত্রীক ভোট দিলেন সুনাক ও স্টার্মার

যুক্তরাজ্যে সাধারণ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) স্থানীয় সময় সকাল ৭টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। এদিকে ভোটগ্রহণ শুরুর পরই স্ব-স্ব স্ত্রীকে নিয়ে ভোট দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক ও লেবার পার্টির নেতা কিয়ের স্টার্মার।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এই তথ্য জানিয়েছে। 

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক নর্থ ইয়র্কশায়ারে ভোট দিয়েছেন। তিনি এবং তার স্ত্রী অক্ষতা মূর্তি ভোট শুরু হওয়ার প্রায় আধঘণ্টা পরে নর্থালারটনের একটি গ্রামের হলে তাদের ভোট কেন্দ্রে আসেন এবং ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। 

অন্যদিকে লেবার পার্টির নেতা স্যার কেয়ার স্টারমার এবং তাঁর স্ত্রী ভিক্টোরিয়া উত্তর লন্ডনে ভোট দিয়েছেন। স্কটিশ ফার্স্ট মিনিস্টার এবং এসএনপি নেতা জন সুইনি মধ্য স্কটল্যান্ডে ভোট দিয়েছেন। লিবারেল ডেমোক্র্যাট নেতা স্যার এড ডেভি এবং তার স্ত্রী এমিলি গ্যাসন দক্ষিণ-পশ্চিম লন্ডনে ভোট দিয়েছেন। 

এদিকে ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, ওয়েলস এবং উত্তর আয়ারল্যান্ডের ৪০ হাজার কেন্দ্রে ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রার্থীদের ভোট দিচ্ছেন। এবারের নির্বাচনে প্রথমবারের মতো ভোট দেওয়ার আগে ফটো আইডি বা শনাক্তকরণ ছবি দেখাতে হচ্ছে ভোটারদের। 

এ ক্ষেত্রে পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স, বয়স্ক বা অক্ষম ব্যক্তির বাস পাস এবং ওয়েস্টার ৬০+ কার্ডসহ মোট ২২ ধরনের আইডি কার্ড গ্রহণযোগ্য বলে জানানো হয়েছে। অবশ্য উত্তর আয়ারল্যান্ডে ২০০৩ সাল থেকেই ভোট দেওয়ার জন্য আইডি দেখাতে হয়। সেখানে ৯ ধরনের আইডি কার্ড দেখানো যায়। 

অন্যদিকে, যারা সঠিক আইডি ছাড়া ভোট দেওয়ার জন্য নিবন্ধন করেছেন, তারা ভোটার অথোরিটি সার্টিফিকেট নামে বিনা মূল্যের একটি নথির জন্য আবেদনের সুযোগ পেয়েছেন। 

১৯৪৫ সালের পর থেকে যুক্তরাজ্যে প্রথমবারের মতো জুলাই মাসে অনুষ্ঠিত হচ্ছে সাধারণ নির্বাচন। বৃহস্পতিবার লন্ডনের স্থানীয় সময় সকাল ৭টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। স্থানীয় বিদ্যালয়, কমিউনিটি হলের মতো ভবনগুলোকেও পোলিং স্টেশন হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। 

হাউজ অব কমনসের সাড়ে ছয় শ সদস্যকে নির্বাচনের জন্য প্রায় ৪ কোটি ৬০ লাখ ভোটার রয়েছে। প্রতিটি জায়গার ফলাফল রাতে এবং শুক্রবার সকালে ঘোষণা করা হবে। সরকার গঠনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে অর্ধেকের বেশি অর্থাৎ অন্তত ৩২৬টি আসনে জয় পেতে হবে। 

গতবার, অর্থাৎ ২০১৯ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়েছিল কনজারভেটিভ পার্টি। এবার প্রত্যাশিত সময়ের আগেই অনুষ্ঠিত হওয়া এই নির্বাচনে রেকর্ড ভাঙা জয়ের সম্ভাবনা রয়েছে বিরোধী লেবার পার্টির। 

জনমত জরিপ অনুযায়ী, ২০২১ সাল থেকে ঋষি সুনাকের কনজারভেটিভ পার্টির জনপ্রিয়তা কমছে। সারভেশনের নির্বাচন বিশ্লেষণে দেখা গেছে, পার্লামেন্টের ৬৫০টি আসনের মধ্যে অন্তত ৪৮৪ টিতে জয় পাবে লেবার পার্টি। যা ১৯৯৭ সালে টনি ব্লেয়ারের নেতৃত্বাধীন লেবার পার্টির ৪১৮টি আসনে জয়ের চেয়েও বেশি। সেই বার ব্রিটেনের ইতিহাসে সর্বোচ্চ আসনে জয়ের অনন্য কীর্তি গড়েছিল লেবার পার্টি। 

অপরদিকে কনজারভেটিভ পার্টি মাত্র ৬৪টি আসনে জয় পাবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। যদি এই ধারণা সঠিক হয় তাহলে ১৮৩৪ সালে প্রতিষ্ঠিত কনজারভেটিভ পার্টি তাদের ইতিহাসে সবচেয়ে কম আসন পাওয়ার লজ্জায় পড়বে।

error: