যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে ঘিরে তীব্র আকার ধারণ করেছে রাজনৈতিক উত্তেজনা। দেশজুড়ে বিরাজ করছে টানটান উত্তেজনা। দেখা দিয়েছে নজিরবিহীন সহিংসতা, দাঙ্গা-হাঙ্গামা ও লুটপাটের আশঙ্কা।
অনেক দোকান-পাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এখন থেকেই ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছেন। তারা পিজবোর্ড দিয়ে দোকানের সামনের অংশ ঢেকে দিচ্ছেন সম্ভাব্য সহিংসতা এবং হামলা থেকে বাঁচতে।
এরকম বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আছে স্যাকস, ফিফথ এভিনিউ, নোরডস্ট্রম এবং ফার্মেসি চেইন সিভিএস।
ইতোমধ্যে কয়েকটি শহরে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সমর্থক ও বিরোধীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ভোটের দিন ও পরবর্তী দিনগুলোয় জ্বালাও-পোড়াও ও ভাংচুরের ভয়ে ঘরবাড়ি ছাড়ছে সাধারণ মার্কিনিরা।
ওয়ালমার্ট গত সপ্তাহে জানিয়েছিল, তারা তাদের স্টোরে সাময়িকভাবে আগ্নেয়াস্ত্র এবং গুলি, খোলা জায়গায় প্রদর্শন বন্ধ রাখছে, কারণ তারা ‘গণ অসন্তোষের’ আশংকা করছে। তবে একদিন পর তারা সেই সিদ্ধান্ত বদল করে।
এদিকে সহিংসতা মোকাবেলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করছে বিভিন্ন রাজ্য সরকার। রাজ্যে রাজ্যে, শহরে শহরে ব্যাপক তৎপরতা শুরু করেছে পুলিশ।
এএফপি জানিয়েছে, রাজধানী ওয়াশিংটনের বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ করে হোয়াইট হাউস ও এর আশপাশের এলাকাগুলোতে সহিংসতা ও ভাংচুর থেকে নিজেদের সম্পদ সুরক্ষার জন্য দিনরাত কাজ করছেন ব্যবসায়ীরা। ভোটের দিন সামনে করে গত কয়েকদিন ধরে রাস্তার ধারের দোকানপাট ও ভবনগুলোর জানালা-দরজায় ও দেয়ালে দোকানিদের কাঠ ও বোর্ড লাগাতে দেখা গেছে।
শেষ পর্যন্ত নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হবে কিনা এবং ফলাফল গৃহীত হবে কিনা- তা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে ভোটাররা। ইউএসএ টুডে ও সাফোক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক যৌথ জরিপ মতে, চারজন ভোটারের মধ্যে তিনজনেরই আশঙ্কা নির্বাচন ঘিরে সহিংসতা চলবে। ফ্লোরিডার পিটার্সবুর্গের এক রেজিস্টার্ড নার্স এ জরিপে অংশ নেন। ৭২ বছর বয়সী এ মার্কিন নাগরিক বলেন, ‘এ মুহূর্তে খুব চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। আমি আমার পুরো জীবনে এমন ভীতিকর পরিস্থিতি দেখেছি ১৯৬২ সালে জন এফ কেনেডির প্রেসিডেন্ট হওয়ার সময় এবং কিউবার ক্ষেপণাস্ত্র সংকট মুহূর্তে।’
এ ছাড়া নির্বাচনের ভুয়া খবর ছড়িয়ে সহিংসতা হতে পারে বলে উদ্বেগ জানিয়েছেন ফেসবুক প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকারবার্গ। মার্কিন প্রশাসনকে সতর্ক করে তিনি বলেন, ‘ভোট নিয়ে যথেষ্ট উদ্বেগে আছি। যুক্তরাষ্ট্রের ভোটারদের মধ্যে মেরুকরণ হয়ে গেছে। চূড়ান্ত ফল বের হতে কয়েকদিন এমনকি কয়েক সপ্তাহও লাগতে পারে। এ অবস্থায় সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টির সম্ভাবনা থেকে যাচ্ছে।’