বাংলাদেশের বাইরে প্রথম ও পুরোনো বাংলাদেশী সাংবাদিকদের সংগঠন লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাব তাদের ক্রয়কৃত প্রপার্টির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছে মঙ্গলবার ৬ জুলাই। এর মাধ্যমে ক্লাবের ২৮ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে কাঙিক্ষত কাজটি বাস্তবে পরিণত হলো। প্রায় দুশ’হাজার পাউন্ড ক্যাশ দিয়ে কেনা হলো এই প্রোপার্টি। ক্লাব প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ এমদাদুল হক চৌধুরী এর আনুষ্ঠানিক ফিতা কাটেন, সাথে ছিলেন ক্লাব সেক্রেটারী মুহাম্মদ জুবায়ের ও ট্রেজারার আ স ম মাসুমসহ ইসি কমিটি এবং সাবেক শীর্ষ নেতৃবৃন্দ।
করোনা পরিস্থিতির বিধি নিষেধের কারনে বর্তমান ইসি কমিটির সাথে শুধুমাত্র ক্লাবে দায়িত্বপালনকারী সকল প্রেসিডেন্ট, সেক্রেটারী, ট্রেজারার, ভাইস প্রেসিডেন্ট উপস্থিত থেকে প্রোপার্টির উদ্বোধন করেন।
গ্রাউ-ফ্লোরে ফ্রন্ট গার্ডেন ও পার্কিং সুবিধা সমৃদ্ধ এই প্রোপার্টির মাধ্যমে বছরে ভাড়া ও মূল্যবৃদ্ধি সূত্রে অন্তত ১৫ হাজার পাউ- আয় করবে ক্লাব। পূর্ব ল-নের বার্কিং-এ প্রোপার্টি ক্রয় এবং ক্রয় পরবর্তী মেরামতসহ প্রায় ২০০ হাজার পাউ- খরচ হয়েছে। এই পুরো অর্থই গত ২০০৩ সাল থেকে ২০২১সাল পর্যন্ত ১৮ বছরে অন্তত চারটি ছোট বড় ফা-রেইজিং কার্যক্রমের মাধ্যমে উত্তোলিত হয়। কমিউনিটির বিভিন্ন পর্যায়ের শীর্ষ নেতৃবন্দ ও ব্যবসায়ীরা লাইফ মেম্বার হিসাবে অন্তর্ভূক্ত হয়ে এই সহযোগিতা করেন। লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবে সারা যুক্তরাজ্যে কর্মরত সাংবাদিক, মিডিয়া কর্মী মিলিয়ে ৩১৭ জন মেম্বার রয়েছেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি মহিব চৌধুরী, সাবেক সভাপতিবৃন্দ যথাক্রমে মোহাম্মদ বেলাল আহমেদ, সৈয়দ নাহাস পাশা, সাবেক সেক্রেটারী নজরুল ইসলাম বাসন, সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট মাহবুব রহমান ও আমিরুল চৌধুরী, সাবেক কোষাধ্যক্ষ মুসলেহ উদ্দিন, বর্তমান সভাপতি এমদাদুল হক চৌধুরী, সেক্রেটারী মুহাম্মদ জুবায়ের, কোষাধ্যক্ষ আ স ম মাসুম, ভাইস প্রেসিডেন্ট ব্যারিষ্টার তারেক চৌধুরী, এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারী মতিউর রহমান চৌধুরী, কমিউনিক্যাশন সেক্রেটারী মোহাম্মদ আব্দুল কাইয়ূম, আইটি সেক্রেটারী সালেহ আহমেদ, ইভেন্ট সেক্রেটারী রেজাউল করিম মৃধা, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবদুল কাইয়ূম, পলি রহমান, রুপি আমিন ও শাহনাজ সুলতানা।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্যে লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি মহিব চৌধুরী বলেন, জীবনে ব্যাক্তিগতভাবে নানা প্রোপার্টি ক্রয় করেছি। কিন্তু সম্মিলিতভাবে এই কাজটির আমার নেতৃত্বে শুরু করেছিলাম, সেটা আজ বাস্তবায়ন হলো যেটা আমার জীবনের অন্যতম বড় তৃপ্তি। এছাড়া একটি সংগঠনে বিশেষ করে প্রেসিডেন্ট, সেক্রেটারী ও ট্রেজারার ঐক্যবন্ধ থাকলে যে অনেক কিছু অর্জন করা যায়-তার প্রমান হচ্ছে এই সফলতা।
সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ বেলাল আহমেদ বলেন, আজ একটি কমিটম্যান্ট পূর্ণ হলো। এই নিজস্ব প্রোপাটি শুধুমাত্র প্রেস ক্লাবের জন্য নয় কমিউনিটির অন্যান্য সংগঠনের জন্য একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
সাবেক সভাপতি সৈয়দ নাহাস পাশা বলেন, প্রথম যখন ফা-রেইজিং শুরু হয় তখন মাইলের পর মাইল ড্রাইভ করে বৃটেনের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে গিয়েছি। এতো বছর ধরে রক্ষিত সেই অর্থগুলো সঠিকভাবে কাজে লেগেছে এটা বিশাল অর্জন। আগামীতে এই স্বপ্ন আরো বড় হবে আরো বিশাল হবে এবং এরও একদিন বাস্তবায়ন হবে।
ক্লাবের বর্তমান সভাপতি এমদাদুল হক চৌধুরী বলেন, এই অর্জন প্রেসক্লাবে শুরু থেকে এখন পর্যন্ত যারা দায়িত্বে আছেন ও ছিলেন তাদের। আমরা বর্তমান কমিটি এর চুড়ান্ত বাস্তবায়ন করেছি, কিন্তু এর পেছনে ভুমিকা আছে সকল নেতৃবৃন্দের। আমরা কৃতজ্ঞ তাদের সকলের প্রতি।
বর্তমান সেক্রেটারী মুহাম্মদ জুবায়ের বলেন, আমরা বিশেষ ভাবে কৃতজ্ঞ আমাদের ডোনার ও লাইফ মেম্বারদের প্রতি। সর্বশেষ ৩০ হাজার পাউ- সংগ্রহে ব্যক্তিগত ভাবে ৫ হাজার পাউ- দানকারী কর্পোরেট মেম্বাররা ছিলেন বিশেষ সহায়ক। দাতারা এবং সবাই বাংলা মিডিয়াকে সম্মানের চোখে দেখেন বলেই প্রেসক্লাব কমিউনিটির মধ্যে অন্যতম মর্যাদাশীল সংগঠনে পরিণত করেছে।
বর্তমান কোষাধ্যক্ষ আ স ম মাসুম বলেন, ডোনার ও সাধারণ মেম্বারদের প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। এই প্রপার্টি কেনার মধ্য দিয়ে ল-ন বাংলা প্রেসক্লাবের আর্থিক নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত হলো। এখান থেকে বছরে যে ভাড়া আসবে সেটা দিয়ে ব্রিকলেনের অফিসের খরচ চলবে, সেই সাথে ক্লাবের সদস্য ফি, প্রেস-কনফারেন্স ফিসহ অন্যান্য যেসব আয় আছে সেগুলো দিয়ে এখন ক্লাবের এক্টিভিটিস ভালোভাবে চলবে।