সাইবার হামলা: চীনা কোম্পানি ও ব্যক্তি বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা যুক্তরাষ্ট্রের

চীনের একটি সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ক কোম্পানি এবং তাদের এক গবেষকের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ২০২০ সালের এক সাইবার হামলা চালিয়ে একটি কম্পিউটার সফটওয়্যারকে ঝুঁকিপূর্ণ করার চেষ্টা করা হয়েছিল। এর মধ্য দিয়ে সিস্টেমকে অচল করে দিয়ে ‘মৃত্যু’ ঘটানোর চেষ্টা করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয় এক ঘোষণায় একথা বলেছে। যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ কোম্পানিগুলোর অবকাঠামোকে নিরাপত্তা দিচ্ছিল এমন প্রতিষ্ঠানের কম্পিউটারকে টার্গেট করেছিল কতিপয় ফায়ারওয়াল। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা।

এতে আরও বলা হয়, সিচুয়ান সাইলেন্স ইনফরমেশন টেকনোলজি কোম্পানির একজন কর্মী গুয়ান টিয়ানফেং ২০২০ সালের এপ্রিলে  ৮১,০০০ ফায়ারওয়ালে বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ কোম্পানি পরিচালিত কমিউটারে ম্যালিসিয়াস বা দূষণকারী সফটওয়ার পাঠিয়েছিলেন। অর্থ মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বলেছে, এর মধ্যে ২৩,০০০ সফটওয়্যার ব্যবহার করে টার্গেট করা হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রকে। এই সাইবার হামলায় ভূমিকা থাকার কারণে মঙ্গলবার গুয়ান টিয়ানফেং-এর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের আইন মন্ত্রণালয়। সিচুয়ান সাইলেন্স বা গুয়ান সম্পর্কে কোনো রকম তথ্য দিতে পারলে এক কোটি ডলার পুরষ্কার ঘোষণা করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। চীনের কেন্দ্রীয় অংশ চেংডু শহরে অবস্থিত সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ক সিচুয়ান সাইলেন্স নামের সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ক সরকারি কন্ট্রাক্টর। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয় বলেছে, তাদের মূল ক্লায়েন্ট হলো চীন সরকারের গোয়েন্দা সার্ভিসগুলো। এসব ক্লায়েন্টকে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক তছনছ করা, ইমেইল মনিটরিং, পাসওয়ার্ড ক্র্যাক করে সংগ্রহ করার মাধ্যমে সেবা দিয়ে থাকে সিচুয়ান সাইলেন্স। এ ছাড়া তারা স্পর্শকাতর পণ্য ও সেবার মাধ্যমে জনগণের সংবেদনশীলতাকে দমিয়ে রাখে। যুক্তরাষ্ট্রে দীর্ঘদিন ধরে সাইবার গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ আছে চীনের বিরুদ্ধে। ধারাবাহিক এমন সব অভিযোগের মধ্যে এই নিষেধাজ্ঞা দিলো যুক্তরাষ্ট্র্ গত সপ্তাহে সাইবার গুপ্তচরবৃত্তির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের বিপুল সংখ্যক মেটাডাটা চুরি করার জন্য চীনা হ্যাকারদের দায়ী করেছে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা। তারা বলেছে, এর মাধ্যমে তারা যুক্তরাষ্ট্রের টেলিযোগাযোগ বিষয়ক কমপক্ষে আটটি প্রতিষ্ঠানকে টার্গেট করেছিল। একই সঙ্গে কয়েক ডজন দেশে তারা এই আক্রমণ চালায়।

নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, চীন সংশ্লিষ্ট হ্যাকাররা- যাদেরকে সল্ট টাইফুন নামে আখ্যায়িত করা হয়েছে, তারা বড় রকমের সাইবার হামলা চালিয়েছে। বহু টেলিযোগাযোগ বিষয়ক কোম্পানিকে তারা টার্গেট করেছে। এর মধ্য দিয়ে সরকারে এবং রাজনীতিতে যুক্ত মার্কিন এমন কর্মকর্তাদের তথ্য চুরি করতে চেষ্টা করেছে তারা। সেপ্টেম্বরে এফবিআই বলেছে, ফ্ল্যাক্স টাইফুন নামে চীনা হ্যাকিং গ্রুপ তৎপর রয়েছে। তবে সাইবার হামলা বা এ সংক্রান্ত যেকোনো অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে চীন সরকার। সর্বশেষ সিচুয়ান সাইলেন্স যে মেলওয়্যার ব্যবহার করেছে তা দিয়ে ডাটা চুরি করাই উদ্দেশ্য ছিল বলে বলা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ব্যবহারকারীর ইউজার নাম এবং পাসওয়ার্ড।

error: