সিরিয়ার বাশার আল আসাদের পতনের পর প্রথমবারের মতো দামেস্ক সফর করেছেন জার্মানি এবং ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। শুক্রবার দেশটির নতুন নেতা আহমেদ আল শারার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন তারা। ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের পক্ষ থেকে সিরিয়ার ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়াকে শান্তিপূর্ণ করার আহ্বান জানিয়েছেন উভয় মন্ত্রী। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
এতে বলা হয়, গত ৮ ডিসেম্বর সিরিয়ার রাজধানীতে প্রবেশ করে বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল শাম। সেসময় দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ। তিনি এবং তার পরিবার বর্তমানে রাজনৈতিক আশ্রয়ে মস্কোতে অবস্থান করছেন। দীর্ঘ ১৩ বছরের গৃহযুদ্ধের পর নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থা পুনর্গঠনের সুযোগ পেয়েছে সিরিয়াবাসী। সে সুযোগ যেন হাত ছাড়া না হয় সে বিষয়টির ওপর জোর দিয়েছেন জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক এবং ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী নোয়েল ব্যারোট। এছাড়া ইউরোপের সঙ্গে সিরিয়ার সম্পর্ক পুনর্গঠনের ওপরও জোর দিয়েছেন তারা।
দামেস্ক ছাড়ার আগে জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, আমার আজকের সফর…সিরিয়াবাসীর জন্য একটি স্পষ্ট সংকেত। এর মাধ্যমে উভয় দেশের মধ্যে নতুন রাজনৈতিক সম্পর্কের সূচনা তৈরি করা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি। সার্বভৌম, স্থিতিশীল এবং শান্তিপূর্ণ সিরিয়ার জন্য আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তিনি। দামেস্কে অবস্থিত ফরাসি দূতাবাসও পরিদর্শন করেন জার্মানির ওই মন্ত্রী। প্রসঙ্গত ২০১২ সাল থেকে দামেস্কে নিজেদের কার্যক্রম স্থগিত রেখেছিল ফ্রান্স।
আসাদের পতনের পর দেশটির নেতৃত্বে এসেছে হায়াত তাহরির আল শাম নামের বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি। আরব দেশ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবহিত করার চেষ্টা করছে যে তারা সিরিয়াকে ‘ইসলামি রাষ্ট্র’ বানাবে না। আসাদ সরকার পতনের পর এ বিষয়ে বেশ উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে পশ্চিমা এবং আরব দেশগুলো। তবে বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি তাদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করছে যে এমন কিছুই তারা করবে না। মূলত এর পরিপ্রেক্ষিতেই হায়াত তাহরির আল শাম নেতৃত্বাধীন সরকারের সঙ্গে আলাপ আলোচনার পথ খুলছে পশ্চিমা সরকারগুলো। বিদ্রোহী গোষ্ঠীটির বিরুদ্ধে অভিযোগ হচ্ছে তাদের সঙ্গে ‘সন্ত্রাসী’ তালিকাভুক্ত সংগঠন আল কায়েদার যোগশাজশ রয়েছে তাদের। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করে গোষ্ঠীটি। মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিতে আসাদের পতনে দুর্বল হয়েছে রাশিয়া। অন্যদিকে নিজেদের ভিত্তি মজবুত করেছে তুরস্ক।