জুবায়ের আহমেদ
৫ই আগস্টের পটপরিবর্তনের পর থেকে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকজন বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, উপসানালয়ে হামলা হয়েছে অসংখ্য।যার ফলে দেশের
গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের পতনের পর সর্বজন শ্রদ্ধেয় নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড.মোহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের প্রায় সাড়ে ৪ মাস অতিবাহিত হচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়ে এই অল্প সময়ে বেশ কিছু ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন সাধন তথা সাফল্য অর্জন করেছেন-এটা অস্বীকারের উপায় নেই। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এ সরকারের সাফল্য এখনো দৃশ্যমান হয়নি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ধর্মীয় উগ্রবাদ তথা চরমপন্থা দমনে তৎপরতা।
স্বৈরাচার হাসিনার পতনের পর সকল দল ও মতের লোকজন মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও সভা-সমাবেশের অবাধ সুযোগ গ্রহণ করছেন। এ সুযোগে ধর্মভিত্তিক একাধিক দল, বিচ্ছিন্ন গোষ্ঠী ও উগ্র মানসিকতার কিছু ব্যক্তি যে আস্ফালন দেখাচ্ছেন- তাতে আমরা উদ্বিগ্ন না হয়ে পারছি না। বাংলাদেশে ছিনতাইসহ অন্যান্য সন্ত্রাসের বিস্তার থাকলেও আমরা স্বভাবতই ধর্মভিত্তিক উগ্রপন্থা বা চরমপন্থা নিয়ে বেশি উদ্বিগ্ন থাকি। তার কারণ, এটি মতাদর্শের ভিত্তিতে সংগঠিত হয়।
খোদ যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের সর্বদলীয় গ্রুপ (এএপিজি) বাংলাদেশে ইসলামপন্থীদের উত্থান নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে। বাংলাদেশে বেড়ে চলা রাজনৈতিক অস্থিরতা ও ইসলামি চরমপন্থার সম্ভাব্য উত্থান নিয়ে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামির কাছে পেশ করা এক প্রতিবেদনে এএপিজি এই সতর্কতা জারি করেছে।
এতে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশে দ্রুত অস্থিতিশীলতার কারণে যুক্তরাজ্য আরেকটি বৈশ্বিক সংঘাতের মুখোমুখি হতে পারে। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর বাংলাদেশে ইসলামপন্থী চরমপন্থীদের উত্থান ঘটে চলেছে।’
প্রতিবেদনে যুক্তরাজ্যের প্রেক্ষাপট নিয়ে বলা হয়,‘বাংলাদেশে অস্থিরতা বাড়লে এর প্রভাব যুক্তরাজ্যেও পড়তে পারে। ২০২১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে ৬ লাখ ৪৪ হাজার ৮৮১ জন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বাস করেন। এটি মোট জনসংখ্যার ১ দশমিক ১ শতাংশ।’
এএপিজি চেয়ারম্যান ও কনজারভেটিভ পার্টির এমপি অ্যান্ড্রু রোসিন্ডেল বলেছেন, ‘কমনওয়েলথ অংশীদারদের সমস্যা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির একটি পদক্ষেপ এই প্রতিবেদন।’
তিনি আরো জানান, প্রতিবেদনটি সরকার,দাতব্য সংস্থা এবং বাংলাদেশ ও কমনওয়েলথ সংশ্লিষ্ট অন্য অংশীদারদের সঙ্গে শেয়ার করা হবে। তিনি মনে করেন, ওয়েস্টমিনস্টার ও হোয়াইট হলে এই বিষয়গুলো গুরুত্ব পাবে এবং প্রতিবেদনটি সংসদ সদস্য ও নীতি নির্ধারকদের সহায়তা করবে।
জুবায়ের আহমেদ
সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মী