জুবায়ের আহমেদ: ছাত্রদের নেতৃত্বে সফল গন অভূত্থানে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।ফ্যাসিস্ট পরবর্তি বাংলাদেশ এখন খুবই অস্থির পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।চারিদেকে নৈরাজ্য,ডাকাতি চলছে,দেশের আইনশৃংখলা রক্ষায় পুলিশ ব্যর্থ হওয়ায় সেনা বাহিনী দিয়ে থানা পাহারা বসানো হচ্ছে।
দেশ স্বাধীনের পর এমন করুন সময় বাংলাদেশ জন্য আর আসেনি।হাজার বছরের সাম্প্রদায়িক সম্প্রতির বাংলাদেশে জাতিগত সংঘাত লাগাতে হিন্দুদের বাড়ি-ঘরে আগুন লাগিয়ে দিচ্ছে স্বার্থশ্রেনী গুষ্টি।জ্বালিয়ে দেয়া হচ্ছে ভিন্ন মতাবলম্বিদের বাড়ি-ঘর। আইনশৃংখলার অবনতির সুযোগে খুন করা হচ্ছে মতবিরোধ থাকা ব্যক্তিদেরও।
অন্তর্বর্তীকালিন সরকার ক্ষমতায় আসার প্রায় এক মাস হতে চলল কিন্তু দেশ স্বাভাবিক হওয়ার কোন লক্ষন নেই। মানবাধিকার লংঘন হচ্ছে চরমভাবে। ১৫ আগষ্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীরা ধানমন্ডি ৩২ নং বাড়ির সামনে অবস্থান নিয়ে শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আসা তার বক্তদের শোক প্রকাশ করতে দেয়া হল না সেটা কি ঠিক? অন্যের মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে শ্রদ্ধা নাকরা বা প্রকাশ করতে না দেয়াই তো বৈষম্য।এখানে আসা সবার মোবাইল চেক করে করে দেখা হল তারা আওয়ামীলীগ করে কি না।(“কাউকে সন্দেহ হলেই জেরা করা হচ্ছে, তল্লাশি করা হচ্ছে মোবাইল ফোন, সামাজিক মাধ্যমের অ্যাপ”: ১৫ আগষ্ট,বিবিসি বাংলা)।
মানুষের ব্যক্তিগত বিষয়ে হাত দেয়ার অধিকার এদের কে দিয়েছে?তারা তো দেশের আইনশৃংখলা বাহিনীর কোন সদস্য না? এসব কাজের মাধ্যমে এরা কি বার্তা দিতে চায়? তারা সাংবাদিকদেরও ফটো তুলতে নিষেধ করেছে।এটা চরম প্রাইভেসি লঙ্ঘন।(“ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন এমন বেশ কয়েকজন সাংবাদিক জানিয়েছেন, সকাল থেকে মোবাইল ফোনে ছবি ও ভিডিও ধারণে আপত্তি শুরু করেন সেখানে উপস্থিত ছাত্ররা। এ বিষয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা কাটাকাটিও হয় তাদের। পরে হ্যান্ড মাইকে ঘোষণা করা হয়, ‘কোনও ছবি তোলা যাবে না, ভিডিও ধারণ করা যাবে না”: ১৫ আগষ্ট,বাংলা ট্রিবিউন)।
এক ফ্যাসিস্ট হটিয়ে আমরা কি আরেক ফ্যাসিস্ট নিয়ে এসেছি সে ব্যাপারে দেশের জনগনকে সজাগ থাকতে হবে।দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে কলেজের ভিসি,অধ্যক্ষদের পদত্যাগ করতে বাধ্য করছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীরা, দেশের বিভিন্ন শহরে ব্যবসা প্রতিষ্টানে গিয়ে চাঁদা দাবী করছে তারা। প্রশাসনের লোকদের কে হুমকি-দমকি দিচ্ছে, তাহলে হাসিনাকে হটিয়ে মানুষের লাভ হল কোথায়? যদি আরেকটা দানব এসে জুড়ে বসে? প্রশাসনের কোন লোক না হয়েও সব সময় সচিবালয়ে যাওয়া আসা করতে দেখা যায়, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্নয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলমকে। কাকে কোথায় নিয়োগ করতে হবে তা নির্ধারণ করে তারা, ভয়ে কেউ মুখ খোলতে পারে না।তাদের এ রকম যাওয়া-আসা আমলাদের উপর প্রেসার তৈরি করছে।অবিলম্বে এ সব বন্ধ করতে হবে।অনথায় যেই লাউ সেই কদু।
জুবায়ের আহমেদ
সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী