চিকিৎসা সরঞ্জামের সংকট প্রকট

দেশে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে মারাত্মক সংক্রমণ চলছে। এর মধ্যেই হাসপাতালগুলোতে কোভিড রোগীদের চিকিৎসা সরঞ্জামের সংকট দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে অক্সিজেন সিলিন্ডার, হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা, অক্সিজেন কনসেনট্রেটর, আইসিইউ শয্যার তীব্র সংকট সৃষ্টি হয়েছে।

এমনকি হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের পিপিই (পার্সোনাল প্রোটেকশন ইক্যুইপমেন্ট) ও মাস্কেরও ঘাটতি দেখা দিয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অবিলম্বে যদি এসব সরঞ্জামের সরবরাহ নিশ্চিত করা না হয়, তাহলে কোভিড আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে। ঝুঁকিতে পড়বেন চিকিৎসকরাও।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে রাজধানীসহ দেশের সব বিভাগ থেকে পাঠানো তালিকায় দেখা গেছে, দ্রুততম সময়ের মধ্যে কোভিড আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় রেমডিসিভির ইনজেকশনের চাহিদা রয়েছে ৬ লাখ ৩৩ হাজার ৬৫৯টি। এছাড়া আরটিপিসিআর কিটসের চাহিদা রয়েছে ১০ লাখ ৫৯ হাজার ৮১৪টি, কাভার অলসহ পিপিই ২০ লাখ ৩১ হাজার ৩৯৫টি, মাস্কের চাহিদা রয়েছে ২৩ লাখ ২৩ হাজার ৮১৬টি, হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা ৩০১৯টি, অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ২২১৬টি, মনিটরসহ আইসিইউ শয্যা ৯৩৭টি, ভেন্টিলেটর ৭৩৬টি এবং অক্সিজেন সিলিন্ডার ২১ হাজার ২৭৯টি।

অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, দেশের আটটি বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে বর্তমানে ৭২৩টি হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা সচল রয়েছে। এছাড়া ৮৩৫টি অক্সিজেন কনসেনট্রেটর, ৬৬৬টি মনিটরসহ আইসিইউ শয্যা, ৫৭৭টি ভেন্টিলেটর এবং ২৫ হাজার ১৪৭টি অক্সিজেন সিলেন্ডার কোভিড আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিকসমূহ) ডা. ফরিদ হোসের মিঞা যুগান্তরকে বলেন, রাজধানীসহ সারাদেশে কোভিড চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের চাহিদা আমরা পেয়েছি। ইতিমধ্যে চাহিদার তালিকা সিএমএসডিতে (সেন্ট্রাল মেডিকেল স্টোরস ডিপোর্ট) পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে জানিয়েছে, এসব জীবন রক্ষাকরী সরঞ্জামের বিভিন্ন উপাদান স্বল্প পরিমাণে তাদের কাছে সংরক্ষিত আছে।

সেগুলো দুই-একদিনে গুরুত্ব বিবেচনায় বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হবে। এছাড়া যেগুলো নেই সেগুলো দ্রুততার সঙ্গে কিনতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ক্রয় প্রক্রিয়াও ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। আশা করছি স্বল্প সময়ে হাসপাতালগুলোর চাহিদা অনুযায়ী চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহ করা সম্ভব হবে। এর মধ্যে ঢাকা মহানগরীতে অবস্থিত কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালগুলোতে ৯৬ হাজার রেমডিসিভির ইনজেকশনের চাহিদা রয়েছে ।

আরটি পিসিআর কিটসের চাহিদা রয়েছে দুই লাখ ১০ হাজার ৯৭০টি, কাভার অল পিপিই’র চাহিদা রয়েছে চার লাখ ১৩ হাজার ৬৮টি, মাস্কের চাহিদা ১১ লাখ ৫১ হাজার, হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলার চাহিদা রয়েছে ৬২০টি, অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ১১৫টি, মনিটরসহ আইসিইউ শয্যা ১৭৭টি, ভেন্টিলেটর ১৬৭টি, অক্সিজেন সিলিন্ডার ১৬৬০টি ।

error: