ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের গণকমোড়া গ্রামে এক বিয়ের অনুষ্ঠানে টক দই দেওয়াকে কেন্দ্র করে শুরু হয় বর ও কনেপক্ষের হাতাহাতি। পরে এর জের ধরে বরযাত্রীরা হামলা চালালে কনের বাবা ইকবাল হোসেন (৫০) মারা যান। এ ঘটনায় আরও চারজন আহত হয়েছেন। বুধবার (৬ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঘটনাটি ঘটে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) দুপুরে একই ইউনিয়নের বিষ্ণুউড়ী গ্রামের দুলাল মিয়ার ছেলে পারভেজের সঙ্গে গণকমোড়া গ্রামের ইকবাল হোসেনের মেয়ে কারিমার বিয়ে হয়। ওই দিন দুপুরে কনের বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠানে বরের বাড়ির লোকসহ কনেপক্ষের অতিথিরাও অংশ নেন। খাবারের শেষ পর্যায়ে দই নিয়ে সমস্যা বাধে। তীব্র গরমের কারণে দই টক হয়ে যায়। ওই দই দেওয়াকে কেন্দ্র করে কনের বাড়ির লোকজনের সঙ্গে বরপক্ষের বাদানুবাদ হয়। এক পর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে সালিশি বৈঠকে কনেপক্ষের লোকজন বরপক্ষের কাছে ক্ষমা চেয়ে ঘটনাটি শেষ করেন। কিন্তু ঘটনার জের ধরে গতকাল বুধবার রাতে বিষ্ণুউড়ী গ্রামে ১৫ থেকে ২০ জনের একটি দল স্থানীয় বাজারের একটি চায়ের দোকানে হামলা চালিয়ে কনের বাবা ইকবালকে আহত করেন। পরে আহত ইকবালকে কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে নেওয়ার পর তিনি মারা যান।
পরে এ নিয়ে উত্তেজনার সৃষ্টি হলে স্থানীয়রা ঘটনাটি কসবা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাড. রাশেদুল কাওছার ভূইয়া জীবনকে জানালে তিনি পুলিশে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে নিহতের লাশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায় কসবা থানা পুলিশ।
ঘটনার বিষয়ে কসবা থানার ওসি মো. আলমগীর ভূইয়া জানান, ‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, দুই পক্ষের উত্তেজনা চলাকালে ধাক্কা খেয়ে স্ট্রোক করে ইকবাল হোসেনের মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। কারণ তার বাইপাস সার্জারি করা হয়েছিল। তার হার্টে তিনটি রিং পরানো ছিল। তারপরও যেহেতু অভিযোগ আছে, আমরা লাশের ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছি। রিপোর্ট পেলে প্রকৃত তথ্য জানা যাবে। পরে প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
তিনি আরও জানান, নিহতের স্ত্রী জোৎসনা বেগম বাদী হয়ে স্বামীর হত্যার বিচার চেয়ে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিছুর রহমার জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। তবে বিষয়টি তদন্ত করে প্রকৃত কারণ অনুসন্ধান করা হচ্ছে।