টেমসসুরমাডেক্স: সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার মাইজগাঁও ইউনিয়নের পিপিএম উচ্চ বিদ্যালয়ের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি মরহুম আরএস চৌধুরীর নাম প্রতিষ্ঠানের ভবন থেকে মুছে ফেলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার (০৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সিলেট মহানগরের পূর্ব জিন্দাবাজারস্থ হোটেল গোল্ডেন সিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আরএস চৌধুরীর পরিবার এই অভিযোগ করেন।
এ ঘটনায় মরহুমের স্বজনরা তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। পাশাপাশি তারা পুনরায় আরএস চৌধুরীর নামে ভবনটির নামকরণ বহাল রাখার দাবি জানিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মরহুম আরএস চৌধুরীর ছেলে হাসান উস সামাদ চৌধুরী।
এসময় উপস্থিত ছিলেন মরহুম আরএস চৌধুরীর ভাই শহিদ উস সামাদ চৌধুরী, আহমেদ উস সামাস চৌধুরী (জেপি) ও শামসুল হক চৌধুরী, মরহুমের ছোট ছেলে যুক্তরাজ্য প্রবাসী এহসান উস সামাদ চৌধুরী ও যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সিহাম উস সামাদ চৌধুরী, ভাতিজা মুশফিক উস সামাদ চৌধুরী ও যুক্তরাজ্য প্রবাসী সাকিব উস সামাদ চৌধুরী প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে মরহুম আরএস চৌধুরীর ছেলে হাসান উস সামাদ চৌধুরী বলেন, আজ একটি দু:খজনক ও ন্যক্কারজনক বিষয় আপনাদের ও প্রশাসনকে অবগত করতে আমাদের পরিবারের সদস্যবৃন্দ উপস্থিত হয়েছি। অত্যন্ত দু:খভারাক্রান্ত মনে তিনি বলেন, ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার ২নং মাইজগাঁও ইউনিয়নের পুরানবাজার এলাকায় ১৯৬৮ সালে প্রতিষ্ঠিত পিপিএম উচ্চ বিদ্যালয়ের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি ছিলেন আমার মরহুম পিতা আরএস চৌধুরী (রেজা উস সামাদ চৌধুরী)। তিনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠাসহ পরিচালনা করে গেছেন মৃত্যুর আগ পর্যন্ত। আজ সিলেটের সুনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে পিপিএম উচ্চ বিদ্যালয়। ১৯৯৮ সালে আমার শিক্ষানুরাগী পিতা মৃত্যুবরণ করেন। স্কুলে তাঁর অবদানস্বরূপ ও স্মৃতি রক্ষায় স্থানীয়দের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৯ সালে উনার নামে (আরএস চৌধুরী) একটি ভবন নির্মাণ করা হয়। তৎকালীন স্থানীয় সাংসদ আমার চাচা মরহুম মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর প্রচেষ্টায় সরকারি অর্থায়নে ওই ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছিল। ভবনটির উপরের দিকে বড় করে ‘আর এস চৌধুরী’ লেখা ছিল। সম্প্রতি কে বা কারা স্কুল ভবন থেকে আমার মরহুম বাবার (আরএস চৌধুরী) নামটি মুছে ফেলেছে।
আমরা সবাই প্রবাসে থাকি উল্লেখ করে তিনি বলেন, গত ২১ জানুয়ারি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিদ্যালয়ের ভবন থেকে বাবার নাম মুছে ফেলায় ছবি দিয়ে মানুষজন প্রতিবাদ জানিয়ে পোস্ট দিতে থাকলে বিষয়টি আমাদের নজরে আসে৷ এমন ন্যক্কারজনক ঘটনায় আমরা হতভম্ব হয়ে যাই। বিষয়টি নজরে আসার পরই আমরা একে অন্যের সাথে যোগাযোগ করি। এর মধ্যে আমার ছোট চাচা, চ্যানেল এস এর চেয়ারম্যান আহমেদ উস সামাদ চৌধুরী (জেপি) বর্তমানে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন। আমার দুই চাচা শহিদ উস সামাদ চৌধুরী ও আহমেদ উস সামাদ চৌধুরী দুজনেই বিষয়টি মাইজগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জুবেদ আহমেদ চৌধুরী শিপুকে অবগত করে সুরাহা দাবি করেন। কিন্তু দু:খজনকভাবে তার কাছ থেকে কোনো সুরাহা পাওয়া যায়নি। এমন কি আজ পর্যন্ত আমাদের কোনো কিছুই জানানো হয়নি। যে কারণে আমরা যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য থেকে বাড়িতে চলে এসেছি।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে থেকে তার বাবার নাম মুছে ফেলার ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে হাসান উস সামাদ চৌধুরী বলেন, এব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে আমাদের শুভাকাঙ্ক্ষীরা বিভিন্ন পরামর্শ দিলেও আমরা আপাতত সংবাদ সম্মেলন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
গণমাধ্যমকর্মীদের সহযোগিতা চেয়ে তিনি আরও বলেন, আমরা আপনাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। পাশাপাশি পুনরায় আরএস চৌধুরীর নামে ভবনটির নামকরণ বহাল রাখার দাবি জানাই।