যুক্তরাজ্যের অভিবাসন অর্ধেকে আনার প্রতিশ্রুতি টোরি পার্টির

যুক্তরাজ্যের আসন্ন সাধারণ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দলীয় ইশতেহার প্রকাশ করেছে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টি। গতকাল মঙ্গলবার এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভবিষ্যতে ক্ষমতায় এলে অভিবাসীর সংখ্যা অর্ধেকে নামিয়ে আনার অঙ্গীকার করেছেন কনজারভেটিভ পার্টির নেতা ও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ব্রেক্সিটের কারণে এখন সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ আমাদের হাতে। কিন্তু গত কয়েক বছরে যুক্তরাজ্যজুড়ে অভিবাসীর সংখ্যা অনেক বেড়েছে। এটি কমিয়ে আনার সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা কনজারভেটিভ পার্টির রয়েছে। ইতিমধ্যে বেশ কিছু পরিবর্তনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

এসব ঘোষণার মানে দাঁড়ায়, যুক্তরাজ্যে আসতে আগ্রহী এমন ৩ লাখ মানুষ এখন আর এ দেশে আসার জন্য উপযুক্ত হিসেবে বিবেচিত হবে না। সরকার অভিবাসীর সংখ্যা বেঁধে দেবে। অর্থাৎ প্রতিবছর কতসংখ্যক মানুষ যুক্তরাজ্যে প্রবেশের সুযোগ পাবে, তা নির্ধারণ করবেন পার্লামেন্টে আপনাদের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা।’

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য সান জানিয়েছে, অনুষ্ঠানে অভিবাসীর সংখ্যা অর্ধেকে নামিয়ে আনার পরিকল্পনার রূপরেখাও তুলে ধরেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমাদের পরিকল্পনা হলো, আমরা অভিবাসীর সংখ্যা অর্ধেকে নামিয়ে আনব। মূল্যস্ফীতিও অর্ধেকে নামিয়ে আনা হবে। এরপর পর্যায়ক্রমে প্রতিবছর তা আরও কমানো হবে।’

অবৈধ অভিবাসন কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে রুয়ান্ডা স্কিম ব্যবহারের কথাও জানান ঋষি সুনাক। গত এপ্রিলে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে পাস হওয়া এ-সংক্রান্ত বিলে ইংলিশ চ্যানেল হয়ে নৌকাযোগে যারা অবৈধভাবে যুক্তরাজ্যে যাচ্ছে, তাদের মধ্য থেকে কিছু অভিবাসনপ্রত্যাশীকে আফ্রিকার দেশ রুয়ান্ডায় পাঠানোর পরিকল্পনার কথা বলা হয়। বিষয়টি নিয়ে ২০২২ সালে রুয়ান্ডার সঙ্গে একটি চুক্তিও করে যুক্তরাজ্য।

পাঁচ বছর মেয়াদি ওই চুক্তির আওতায় যুক্তরাজ্যে যাওয়া অভিবাসনপ্রত্যাশীদের আশ্রয় দেবে রুয়ান্ডা। এর বিনিময়ে অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য আফ্রিকার দেশটিকে সহায়তা দেবে লন্ডন। আর্থিক সহায়তার বাইরে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের পুনর্বাসনের জন্যও বাড়তি অর্থ পরিশোধ করা হবে।

বহুল আলোচিত রুয়ান্ডা স্কিমের বিষয়টি উল্লেখ করে ঋষি সুনাক বলেন, ‘আমাদের সীমান্তের সুরক্ষা প্রয়োজন।’ অবৈধ অভিবাসন ইস্যুতে বিরোধী দল লেবার পার্টির নেতা কাইর স্টার্মারেরও সমালোচনা করেন ঋষি সুনাক। তিনি বলেন, ‘এ-সংক্রান্ত প্রশ্নের কোনো জবাব লেবার পার্টির কাছে নেই। অন্যান্য দেশ থেকে লোকজন অবৈধভাবে যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করলে তিনি কী করবেন, সেই প্রশ্নের জবাব তিনি আপনাদের দিতে পারেননি। কেননা, এটিকে তিনি কোনো সংকট বলে মনে করেন না।’

যুক্তরাজ্যের পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন আয়োজনের জন্য আগামী জানুয়ারি পর্যন্ত সময় ছিল সুনাকের হাতে। কিন্তু আগামী ৪ জুলাই আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। তবে এর আগে পদত্যাগের কোনো পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী।

কয়েক বছরে অভিবাসীর সংখ্যা অনেক বেড়েছে। এটি কমিয়ে আনার সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা কনজারভেটিভ পার্টির রয়েছে। যুক্তরাজ্যে আসতে আগ্রহী এমন ৩ লাখ মানুষ আর এই দেশে আসার জন্য উপযুক্ত হিসেবে বিবেচিত হবে না।

সূত্রঃ দ্য সান

error: