পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ফ্রান্স সরকারের ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে যৌথ পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়ে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা বা ওআইসি’র সাথে পরামর্শ করার দায়িত্ব দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে।
ইমরান খান মন্ত্রিসভার সদস্যদের সাথে বৈঠকে বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ সা:-কে অবমাননা করে কার্টুন প্রকাশের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ফরাসি সরকারের ক্ষমা না চাওয়া এবং এ অন্যায়ের পক্ষে দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রঁর অবস্থানের কথা উল্লেখ করে প্যারিসের বিষয়ে নীতি বা করণীয় ঠিক করার বিষয়ে মুসলিম দেশগুলোর সাথে পরামর্শ করার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। এমনকি পাক প্রধানমন্ত্রী ফ্রান্সের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কোরেশিকে দায়িত্ব দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের এ নির্দেশের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওআইসি’র সদস্য দেশগুলোর সাথে পরামর্শ করে এ বিষয়ে প্রতিবেদন মন্ত্রিসভায় উত্থাপন করবেন বলে কথা রয়েছে। ইসলাম অবমাননার ঘটনার প্রতি ফরাসি প্রেসিডেন্টের সমর্থনের প্রতিক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রী পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে এ দায়িত্ব দিলেন।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রঁ বাকস্বাধীনতার দোহাই দিয়ে ইসলাম অবমাননার ঘটনার প্রতি যে সমর্থন দিয়েছেন তার বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। ফ্রান্সের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে মুসলিম কিংবা অমুসলিম দেশগুলোতে বসবাসকারী মুসলমানরা ব্যাপক বিক্ষোভ করেছে।
মুসলমানদের পক্ষ থেকে তীব্র প্রতিক্রিয়া আসার পর ফ্রান্সের কোনো কোনো কর্মকর্তা তাদের অবস্থান থেকে পিছু হটতে বাধ্য হন। ইসলাম অবমাননার ঘটনায় বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের পক্ষ থেকে তীব্র প্রতিক্রিয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন ইভ লুদ্রিয়ান বলেছেন, ‘আমি ইসলাম ধর্মকে গভীর শ্রদ্ধা করি’।
তবে ফ্রান্সের কোনো কোনো কর্মকর্তা তাদের অবস্থান থেকে পিছু হটলেও বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের ক্ষোভ একটুও কমেনি।
এদিকে, উগ্রবাদীদের মোকাবেলার অজুহাতে ফরাসি সরকার সংসদে ইসলামবিরোধী একটি প্রস্তাব উত্থাপন করা থেকে বোঝা যায়, ওই দেশটির কর্মকর্তাদের মধ্যে প্রচণ্ড ইসলামবিদ্বেষ কাজ করছে এবং তারা যে কিছুটা পিছু হটে এসেছে তারও উদ্দেশ্য রাজনৈতিক যাতে বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের ক্ষোভ প্রশমিত হয়।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রঁ দাবি করেছেন, উগ্রপন্থা মোকাবেলার জন্যই সংসদে ইসলামবিরোধী প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে। অথচ বাস্তবতা হচ্ছে, ফ্রান্স, ব্রিটেন, যুক্তরাষ্ট্র মিলে পশ্চিম এশিয়াসহ সারা বিশ্বে উগ্রবাদী গোষ্ঠী আইএস গড়ে তুলেছে। এ অবস্থায় ফরাসি কর্মকর্তারা ইসলাম অবমাননার প্রতি সমর্থন দেবেন তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। এ কারণে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ফ্রান্সের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার মতো কঠোর অবস্থান নিয়েছেন।
সূত্র : পার্সটুডে