যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার অবৈধ অভিবাসন মোকাবিলায় নতুন পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন, যার আওতায় ব্যর্থ আশ্রয়প্রার্থীদের তৃতীয় দেশে স্থাপিত “রিটার্ন হাব” বা প্রত্যাবাসন কেন্দ্রগুলিতে পাঠানো হবে। এই উদ্যোগের লক্ষ্য হলো যুক্তরাজ্যে আশ্রয় আবেদন প্রত্যাখ্যাত ব্যক্তিদের দ্রুত ও কার্যকরভাবে তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো।
প্রধানমন্ত্রী স্টারমার আলবেনিয়ার রাজধানী তিরানায় সফরকালে এই পরিকল্পনার কথা জানান। তিনি বলেন, “আমাদের যৌথ প্রচেষ্টা অবৈধ অভিবাসীদের নিরুৎসাহিত, সনাক্ত ও ফেরত পাঠাতে সহায়তা করবে, যা আমাদের সীমান্ত সুরক্ষায় সঠিক পদক্ষেপ।
এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে যুক্তরাজ্য আলবেনিয়া, সার্বিয়া, বসনিয়া এবং উত্তর মেসিডোনিয়ার মতো বাল্কান অঞ্চলের দেশগুলির সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে। এই দেশগুলিতে রিটার্ন হাব স্থাপন করে, ব্যর্থ আশ্রয়প্রার্থীদের সেখানে প্রক্রিয়াকরণ ও প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা করা হবে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (UNHCR) এই পরিকল্পনাকে সমর্থন জানিয়েছে। তারা বলেছে, এই উদ্যোগ আন্তর্জাতিক আইন মেনে পরিচালিত হলে এটি কার্যকর হতে পারে।
এই পরিকল্পনা পূর্ববর্তী সরকারের রুয়ান্ডা আশ্রয়প্রার্থী প্রক্রিয়াকরণ প্রকল্পের বিকল্প হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যা বিভিন্ন আইনি ও নৈতিক বিতর্কের কারণে বাতিল করা হয়েছিল। স্টারমার এই নতুন উদ্যোগকে “বাস্তবসম্মত ও কার্যকর সমাধান” হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
তবে, এই পরিকল্পনার সমালোচনাও হয়েছে। কিছু বিরোধী রাজনীতিবিদ ও মানবাধিকার সংগঠনরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, এই ধরনের রিটার্ন হাবগুলি আশ্রয়প্রার্থীদের অধিকার লঙ্ঘন করতে পারে এবং তাদের নিরাপত্তা ঝুঁকিতে ফেলতে পারে।
সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই পরিকল্পনার মাধ্যমে অবৈধ অভিবাসন কমিয়ে আনা, মানবপাচার রোধ এবং যুক্তরাজ্যের সীমান্ত সুরক্ষা জোরদার করা সম্ভব হবে। তারা আরও জানিয়েছে, এই উদ্যোগ আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকার রক্ষা নিশ্চিত করে বাস্তবায়ন করা হবে।
এই পরিকল্পনার সফল বাস্তবায়নের জন্য যুক্তরাজ্য ও সংশ্লিষ্ট দেশগুলির মধ্যে সমন্বয় ও সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে। এছাড়া, এই উদ্যোগের কার্যকারিতা ও মানবিক দিক বিবেচনা করে ভবিষ্যতে এর পরিসর ও প্রভাব মূল্যায়ন করা হবে।