অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরে মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক হোসেন মিরুকে কুপিয়ে হত্যার দায় স্বীকার করে বৃহস্পতিবার দুই আসামি জবানবন্দী দিয়েছেন।
তারা হলেন ইমরান মোল্লা (২০) ও ইমান আলী (৩০)।
হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অপরাধে তিনজনকে গ্রেফতার করে দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়। ইমরান ও ইমান ছাড়া অন্যজন হলেন মোঃ সোহান মোল্লা (১৬)।
ইমরান ও ইমান অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমিনুল ইসলামের কাছে ১৬৪ ধারায় হত্যার কথা স্বীকার করে জবানবন্দী দিয়েছেন। তবে আরেক আসামি সোহান মোল্লা নাবালক হওয়ায় তাকে শিশু আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে হত্যার ঘটনায় পুলিশ এখনো মুল আসামিদের গ্রেফতার করতে পারেনি।
হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে হরিরামপুর উপজেলা ছাত্রলীগ। বৃহস্পতিবার দুপুরে হরিরামপুর উপজেলা চত্বর এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এসময় বক্তব্য দেন হরিরামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি রামকৃষ্ণ রায়, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মহিদুর রহমান, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. লুৎফর রহমান, সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান ফিরোজ প্রমুখ। বক্তারা মিরু হত্যার ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
সিংগাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুজ্জামান জানান, ফারুক হোসেন মিরুকে হত্যার ঘটনায় তার বড় ভাই রিয়াজুল করিম ১২ জনের নাম উল্লেখ করে সিংগাইর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। ইতোমধ্যে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে এজহারভুক্ত তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ সময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অটোরিকশা, একটি রামদা ও কয়েকটি লোহার রড উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে গ্রেফতারকৃতদের আদালতে পাঠানো হলে ইমরান ও ইমান হত্যার কথা স্বীকার করে জবানবন্দী দিয়েছে। তবে আরেক আসামি সোহান মোল্লা নাবালক হওয়ায় তাকে শিশু আদালতে পাঠানো হয়েছে।
হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে তিনি জানান।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জের ধরে সিংগাইর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক হোসেন মিরুকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডের সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত রয়েছে সিংগাইর সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মোল্লা মোহাম্মদ দুলাল ও তার বড় ভাই উপজেলা পরিবহন শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক জালাল উদ্দিন ওরফে আঙ্গুর ফারুক। এক মাস আগে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মারামারির ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছিল।
সোমবার রাতে উপজেলার জয়মণ্ডপ এলাকায় একটি গানের অনুষ্ঠান থেকে মোটরসাইকেলে করে বাড়ি ফিরছিলেন উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক হোসেন মিরু। রাত ১টার দিকে সিংগাইর পুরনো বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পৌঁছালে তাকে কুপিয়ে জখম করা হয়। পরে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে সিংগাইর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় সেখান থেকে তাকে পাঠানো হয় ঢাকার জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে। পরদিন মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে তিনি মারা যান।
সূত্র : ইউএনবি