মানবিক করিডোর নিয়ে বিতর্ক

মিয়ানমারের রাখাইনে খাদ্য সহায়তা পৌঁছাতে বাংলাদেশ থেকে ‘মানবিক করিডোর’ দেয়ার বিষয়ে ব্যাপক বিতর্ক তৈরি হয়েছে। গত রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত ব্রিফিং-এ উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন রাখাইনের জন্য মানবিক করিডোর দিতে সরকার নীতিগত সম্মত হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানান। এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর রাজনৈতিক দল ও নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট পক্ষের মধ্যে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো এমন একটি সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে সব দলের সঙ্গে আলোচনার পরামর্শ দিয়েছে। দলগুলোর মধ্যে বিতর্ক চলার মধ্যেই গতকাল প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, এ বিষয়ে কোনো সংস্থার সঙ্গে সরকারের আলাপ-আলোচনা হয়নি। সাহায্য প্রদানের বিষয়ে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলেও তিনি জানিয়েছেন। রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা বিএসএসকে তিনি বলেন, আমাদের অবস্থান হলো, জাতিসংঘের নেতৃত্বে রাখাইনে যদি মানবিক সহায়তা প্রদান করা হয়, তবে বাংলাদেশ লজিস্টিক সহায়তা দিতে আগ্রহী থাকবে। শফিকুল আলম বলেন, জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) তথ্য অনুযায়ী রাখাইন রাজ্যে তীব্র মানবিক সংকট চলছে। দুর্যোগকালীন সময়ে বিভিন্ন দেশকে সহায়তার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উজ্জ্বল ইতিহাস রয়েছে। যার সামপ্রতিক উদাহরণ ভূমিকম্প-পরবর্তী সময়ে মিয়ানমারকে সহায়তা প্রদান করা। আমরা উদ্বিগ্ন যে এ ধরনের মানবিক সংকট দীর্ঘ হলে রাখাইন থেকে আরও মানুষের বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ ঘটতে পারে, যা আমরা সামাল দিতে পারবো না। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিশ্বাস করে যে জাতিসংঘ-সমর্থিত মানবিক সহায়তা রাখাইনকে স্থিতিশীল করতে এবং শরণার্থীদের মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরিতে সহায়তা করবে। প্রেস সচিব বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় রাখাইনে সহায়তা পাঠানোর বাস্তবসম্মত একমাত্র পথ হলো বাংলাদেশ। এই রুট ব্যবহার করে সহায়তা পৌঁছানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশ নীতিগতভাবে লজিস্টিক সহায়তা প্রদানে সম্মত রয়েছে। তিনি বলেন, রাখাইনে সহায়তা প্রদানের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। এ বিষয়ে আমরা সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। যথাসময়ে আমরা বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে পরামর্শ করবো। বাংলাদেশের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বিশ্বের বড় কোনো শক্তি এই করিডোরের সঙ্গে জড়িত রয়েছে বলে যে প্রতিবেদন করা হয়েছে, সেগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা ও  প্রোপাগান্ডা বলে তিনি দাবি করেন। প্রেস সচিব বলেন, বিগত কয়েক মাস ধরে বাংলাদেশকে লক্ষ্য করে একের পর এক বিদ্বেষপূর্ণ বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াতে আমরা দেখেছি, যা এখনো চলছে। এ ধরনের প্রচারণাও তার ব্যতিক্রম নয়।

সূত্র: মানবজমিন।

error: