অবশেষে অবসান হলো বাংলাদেশের জাতীয় দলের অলরাউন্ডার ক্রিকেটার নাসির হোসেন ও কেবিন ক্রু তামিমা সুলতানা তাম্মির বিয়ে নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা। বুধবার বনানীতে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এই নবদম্পতি আইনজীবীসহ তাদের বিয়ে নিয়ে উঠে আসা বির্তকের খোলাসা করেছেন।
তাদের পক্ষ থেকে আইনজীবী জানান, নাসির হোসেনের স্ত্রী তামিমা সুলতানার সাবেক স্বামী রাকিব হাসানের যাবতীয় দাবি মিথ্যা ও বানোয়াট। ’রাকিব হাসান ও তামিমা সুলতানার বিয়ে হয় ২০১১ সালে। তাদের সংসার জীবনে আট বছরের একটি মেয়ে আছে’ এটি ব্যতীত বাদি পক্ষের যাবতীয় অভিযোগ মিথ্যা। এ বিষয়ে তাদের কাছে উপযুক্ত তথ্য প্রমাণ রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তামিমা বলেন, রাকিব হাসানকে তিনি আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তালাক দিয়েছেন। তিনি তার সাবেক স্বামী রাকিব হাসানের কাছ থেকে তালাকের জন্য আবেদন করেন ২০১৬ সালে। তালাক প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয় ২০১৭ সালে। এ ছাড়া তালাকের বিষয়ে তাদের উভয়ের পরিবারই অবগত রয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন।
তামিমা আরো বলেন, ‘তিনি যা করেছেন তা কেন করেছেন আশা করি আপনাদের সবারই বোঝা হয়ে গেছে। তাকে আমি বিয়ে করেছিলাম। আমাদের একটি মেয়ে আছে তার এই দুটি কথা ছাড়া সকল অভিযোগ মিথ্যা। এ বিষয়ে যাবতীয় তথ্য প্রমাণ আমাদের কাছে আছে।’
ফেসবুকে তার নামে ভাইরাল হওয়া বিভিন্ন পোস্ট নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার নামে ফেইক ফেসবুক আইডি খুলে যেসব পোস্ট ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে সেটাও ভুয়া। আমার বর্তমানে কোনো সক্রিয় ফেসবুক অ্যাকাউন্ট নেই। আমার বা নাসিরের যদি জনগণকে কিছু জানানোর থাকে তবে আমরা সেটা গণমাধ্যম কর্মীদের মাধ্যমে বা আমাদের ভেরিফাইড পেইজ থেকে জানাবো। তাই আপনাদের কাছে অনুরোধ করবো কোনো কিছু না জেনে ভুল তথ্য ছড়ানো থেকে বিরত থাকুন।’
মেয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার মেয়ে জন্মের পর থেকে আমার কাছে ছিল। যেহেতু আমি ক্যাপাবল আমার বাচ্চার লালন-পালনের জন্য তাই আমার মেয়ে আমার কাছেই ছিল। তাকে আমার কাছ থেকে নিয়ে যাওয়া হয় ২০১৯ সালে। তার (রাকিব হাসান) মেয়ের সাথে দেখা করতে এসে কাউকে কিছু না জানিয়ে তাকে নিয়ে যায়। মেয়েকে খুঁজে না পেয়ে আমার মা একটি জিডি করেন। তখন আমি দেশের বাইরের একটি ফ্লাইটে ছিলাম।‘
এতো বড় মিথ্যা একজন কীভাবে দাবি করতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার যতটুকু মনে পড়ে ৯ মাস আগে নাসির তার ফেসবুক পেইজে আমার একটি ছবি পোস্ট করে আমাদের বিয়ের বিষয়টি জানায়। এরপর তিন মাস আগে ও আরেকটি গণমাধ্যমে আমাদের বিয়ের বিষয়ে কথা বলে। এরপর আমাদের ঘটা করে কাবিন হলো, সেই কাবিনের ছবিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করি আমরা। তাহলে তিনি কীভাবে হঠাৎ করে বিষয়টি জেনেছেন বলে দাবি করেন। যেহেতু নাসির গত এক বছর ধরে বিষয়টি জানিয়ে আসছে তাহলে তিনি হঠাৎ করে কীভাবে জানলেন? তিনি আমাদের অনুষ্ঠানের আগে ফেসবুকে সস্তা জনপ্রিয়তা পাওয়ার জন্য এসব মিথ্যা অভিযোগ করেছেন। আমাদের রিসেপসনে অনেক ভিআইপি ব্যক্তিদের সামনে আমাদের আলোচনায় ফেলা এবং আমাদের হেনস্তার করার জন্য তিনি অনুষ্ঠানের আগের দিন মিথ্যা অভিযোগ করেন। কিন্তু আমরা যেহেতু দোষী নই। আমাদের অবস্থানে স্বচ্ছ ছিলাম তাই আমাদের কোথাও কোনো ভয় কাজ করেনি যে আমি ভুল করেছি বা ফেঁসে যাবো। আর তিনি যে বলছেন আমাদের বাড়িতে আইনজীবী পাঠিয়েছেন ও পুলিশ গেছে এসব কথাও মিথ্যা। আর অভিযোগ মিথ্যা জন্যই আমরা আপনাদের সামনে বসে আইন মেনে আমাদের প্রমাণ প্রকাশ করছি।’
উল্লেখ্য, ১৪ ফেব্রুয়ারি পহেলা ফাল্গুন রাজধানীর উত্তরার একটি রেস্তোরাঁয় নাসির ও তামিমার বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। গত ২০ ফেব্রুয়ারি বিবাহোত্তর সংবর্ধনার আয়োজন করেন নাসিরের পরিবার। এর আগে ১৭ ফেব্রুয়ারি তারা যৌথভাবে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান করেন।