আটক সাংবাদিকদের মুক্তির দাবীতে বিবিসি অফিসের সামনে ইআরআইয়ের মানববন্ধন

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রথম আলোর প্রতিবেদক রোজিনা ইসলাম এর উপর মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও সাংবাদিক নেতা রহুল আমিন গাজীসহ কারাগারে বন্দি সাংবাদিকদের মুক্তির দাবিতে লন্ডনে মানববন্ধন করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন ইকুয়্যাল রাইটস ইন্টারন্যাশনাল (ইআরআই)। মানববন্ধনে বক্তারা অবিলম্বে রোজিনা ইসলামের উপর মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও সাত মাস ধরে কারাগারে বন্দি সাংবাদিক রহুল আমিন গাজীসহ হয়রানীমূলক মামলায় বন্দি অন্যান্য সাংবাদিকদের মুক্তির দাবী জানান।
২৪ শে মে সোমবার লন্ডনে বিশ্বের প্রভাবশালী গনমাধ্যম বিবিসি’র হেডকোয়াটার্সের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন ইআরআই‘র প্রেসিডেন্ট মাহবুব আলী খানশূর।সংগঠনের সেক্রেটারী নাওশিন মুস্তারি মিয়া সাহেবের পরিচালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ইআরআইয়ের উপদেষ্টা সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম জুয়েল, এসএ টিভির সিনিয়র রিপোর্টার রিয়াদ আহসান, সহ-সভাপতি আল আমিন, আজিজুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক জুবায়ের আহমেদ,অফিস সম্পাদক আবু জাফর আব্দুল্লাহ,অর্থ সম্পাদক মোহাম্মদ মাসুদুল হাসান,প্রচার সম্পাদক সায়েম আহমেদ,সহ-সম্পাদক আবু তালেব,সহ-সম্পাদক মোহাম্মদ হক, ওমর ফারুক, মোর্শেদ আহমেদ খান, শরীফ উদ্দিন, সহ-সম্পাদক মোহাম্মদ এমদাদুল হক, এমএস টিভি সম্পাদক মুসলিম খানসহ আরো অনেকে।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন,স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও মুক্ত গণমাধ্যম ও মানুষের বাক স্বাধীনতা রক্ষায় আন্দোলন করতে হবে তা ভাবতেই কষ্ট হয়। আর বাংলাদেশে মুক্ত গণমাধ্যম না থাকায় অনির্বাচিত সরকার দেশ শাসনের সাহস পায়। এতে গণতন্ত্র বাধাগ্রস্থ হয়ে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে।
শফিকুল ইসলাম জুয়েল বলেন,মাহমুদুর রহমান,আবুল আসাদ,রহুল আমিন গাজী, ওলিইল্লাহ নোমান, কাফি কামালের পর বর্তমান সরকারে রোষানলের শেষ স্বীকার হলেন রোজিনা ইসলাম। সরকারের অনিয়ম,দুর্নীতির খবর প্রকাশ করাই তার একমাত্র অপরাধ।
নওশীন মোস্তারি মিয়া সাহেব বলেন, ডিজিটাল সিকিউরিটি এক্ট মূলত মত প্রকাশের স্বাধীনিতাকে রুদ্ধ করতে এবং মুক্ত সাংবাদিকতাকে কোনঠাসা করতে করা হয়েছে। শুধু সাংবাদিক নয় সাধারণ মানুষ সহ ছাত্র-শিক্ষক, সামাজিক কর্মী , মানবাধিকার কর্মী এবং বিরোধী মতের নেতাকর্মীদের এই কালো আইনের মাধ্যমে গ্রেফতার নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে।
জুবায়ের আহমেদ বলেন, রোজিনা ইসলামের জামিন নিয়ে যে টাল বাহানা করা হয়েছে তা সত্যি উদ্বেগজনক।তাকে যেভাবে মানসিক ও শারিরীক নির্যাতন করা হয়েছে তা অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার প্রতি স্পষ্ট হুমকি।অবিলম্বে সাংবাদিক নেতা রহুল আমীন গাজীসহ মিথ্যা মামলায় আটককৃত সাংবাদিকদের মুক্তি দিতে হবে।
আবু জাফর আব্দুল্লাহ বলেন, ডিজিটাল সিকিউরিটি এক্ট এর মাধ্যমে সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদ বর্ণিত বাক স্বাধীনতা ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা আওয়ামী সরকার কেড়ে নিয়েছে। গত শনিবার মেহেরপুরের গাংনীতে এই কালো আইনে বিজনেস বাংলাদেশ পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি আল আমিনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা তার মুক্তি দাবী করছি।
মোহাম্মদ মাসউদুল হাসান বলেন, বর্তমানে দেশে দুর্নীতিবাজ,ঘুষখোর বিরুদ্ধে মানুষ কথা বলতে মানুষ ভয় পায়। কারণ তারা সরকারের সমর্থনপুষ্ট প্রভাবশালী হওয়ায় নানা ভাবে প্রতিবাদকারীদের মুখ বন্ধ করে দেয়ার চেষ্টা করে। সরকারের পালিত কিছু হলুদ সাংবাদিকদের কারণে আজ দুর্নীতিবাজরা অপকর্ম করার সাহস পাচ্ছে।
সায়েম আহমেদ বলেন, রোজিনা ইসলাম রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায়ে বসে রাষ্ট্রের টাকা চুরি করা রাঘব বোয়ালদের ধরতে রিপোর্ট করছিলেন। কিন্ত আজ উল্টো তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে মামলা দেয়া হয়েছে। অবিলম্বে সকল সাংবাদিক নেতাদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবী করছি।
মোর্শেদ আহমেদ খান বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান শেখ হাসিনা সরকার সংবাদ পত্রের স্বাধীনতা নষ্ট করেছে। অন্যায়ভাবে আটকে রাখা হয়েছে সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজীসহ অসংখ্য সাংবাদিকদের।
ওমর ফারুক বলেন, বাংলাদেশে সম্পাদক ও সাহসী সাংবাদিকদের যেভাবে ষড়যন্ত্র করে হেনন্থ করা হচ্ছে এবং মামলা দিয়ে জেলে পুরে নানা শর্তের জালে পরে জামিন দেয়া হয়েছে তা অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় হুমকি সৃষ্টি করেছে।
মানববন্ধনের সমাপনী বক্তব্যে মাহবুব আলী খানশূর বলেন, বিবিসির সামনে মানববন্ধনের মাধ্যমে আমরা বিশ্ববাসীর সামনে বাংলাদেশের গনমাধ্যমের করুণ অবস্থার কথা তোলে ধরেছি। আমারদেশ পত্রিকার সম্পাদককে যখন নির্যাতন করা হয়েছিল, ওই পত্রিকা অফিস যখন বন্ধ করা হলো, দৈনিক সংগ্রামের সম্পাদককে যখন আটক করে দীর্ঘদিন জেলে রাখা হলো তখন কোন সাংবাদিক নেতা প্রতিবাদ করেননি। যদি সাংবাদিক সমাজ তখন ওসবের প্রতিবাদ করতেন তাহলে আজ সাংবাদিকদের উপর সরকারের এমন নির্যাতনের খড়গ নেমে আসতো না।
মানববন্ধন আরো বক্ত্যব রাখেন,আইআরআই এর সদস্য মোহাম্মম তরিকুল ইসলাম, আলী শাহজাদা, আল আমিন, মাহবুবুর রহমান, এমদাদ আহমেদ, আশরাফুল হক নাসিম,মোঃ ফাহাদুজ্জামান,চৌধুরী তাহমিনা রহমান, মোঃ আব্দুল মোমিন, সামাদ শিকদার, মোঃ নাবিল ইসলাম চৌধুরী,আনোয়ারুল আমিন,শরীফ রানা, মোঃ বদরুজ্জামান,মির্জা সাইফুল, আলী হোসাইন,মোঃ আসাদুল হক,তাহমিদ খান, আব্দুল কাদের জিলানী, যুক্তরাজ্য বিএনপির সদস্য মোঃ ফারুক হোসাইন, বিএনপি সদস্য আনুওয়ার হোসাইন, মোঃ মজলু মিয়া, আজিজুর রহমান, মোহাম্মদ হক,সেবুল আহমেদ,ফারুক ইসলাম সানি,সাইদুল ইসলাম,লুটন যুবদল সদস্য মোঃ নুমান আহমেদ চৌধুরীসহ প্রমূখ।

error: