‘করোনা টিকা নিলেও সতর্কতা অবলম্বন বন্ধ করা যাবে না’

দুবাই স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের (ডিএইচএ) হেলথ প্রমোশন অ্যান্ড এডুকেশনের প্রধান ডা. হিন্দ আল আওয়াদি বলেছেন, করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে টিকা নিলেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা মেনে চলার প্রয়োজন শেষ হয়ে যায় না। কোভিড-১৯রটিকা নেয়ার সাথে সাথে সংক্রমণ রোধে সকলের সর্বোচ্চ সামাজিক দায়িত্ববোধের অনুশীলন করা এবং সতর্কতামূলক সব পদক্ষেপ কঠোরভাবে মেনে চলা উচিত।
সংযুক্ত আরব আমিরাতভিত্তিক দৈনিক পত্রিকা গালফ নিউজের কাছে এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, ‘মানুষ চিন্তা করে টিকা দিলেই সব ঠিক হয়ে যাবে। তা গেলেও এর জন্য সময়ের প্রয়োজন- যদি আমরা জনসংখ্যার বেশিরভাগকে টিকার আওতায় নিয়ে আসতে পারি। ততদিন পর্যন্ত সবার নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা, মাস্ক পরা, হাত ধোয়া ও অন্য সব সতর্কতামূলক ব্যবস্থা মেনে চলা প্রয়োজন।’

ডা. হিন্দ বলেন, ২০২০ সালের ২৯ জানুয়ারি যখন প্রথম আমিরাতে কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়, মানুষ উদ্বিগ্ন হয়েছিল।
তিনি বলেন, ‘এক বছর পার হওয়ার পর সবাই কোভিড-১৯ বিষয়ে পরিশ্রান্ত। কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে, আমাদের সতর্কতায় আমরা ঢিল দেবো। কেননা, বৈশ্বিক মহামারী এখনো চলমান এবং আমাদের উচিত প্রস্তুত অবস্থায় থাকা।’

তিনি বলেন, ‘আমরা সবাইকে টিকা দিচ্ছি। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে,সতর্কতামূলক ব্যবস্থা সবাই অবজ্ঞা করতে পারে।’

ডা. হিন্দ বলেন, সতর্কতামূলক ব্যবস্থা না মানার কোনো যুক্তি নেই। মানুষ কিছু সাধারণ ভুল এখনো করছে।
তিনি বলেন, ‘সঠিকভাবে মাস্ক না পরা তার মধ্যে প্রধানতম। যেভাবে পরা উচিত, সেভাবে সবাই মাস্ক পরছে না। প্রায়ই, মাস্ক সঠিক স্থানে থাকছে না।’

ডা. হিন্দ আরো বলেন, সাক্ষাতের সময় লোকের অপর একটি সাধারণ অভ্যাস পরিবর্তন হওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, ‘আমি এখনো লক্ষ্য করছি লোকেরা সাক্ষাতের সময় কোলাকুলি করছে ও চুমু খাচ্ছে। এই ধরনের অনুশীলন আবশ্যিকভাবে এড়ানো প্রয়োজন।’

ডা. হিন্দ বলেন, কিছু কিছু লোক তৃতীয় যে ভুলটি করে, তা হলো কোভিড-১৯ সংক্রমণের সন্দেহ থাকলেও হোম কোয়ারেন্টিনের নিয়ম লঙ্ঘন করে অপর ব্যক্তির সাহচর্যে আসে।

তিনি পরামর্শ দেন, ‘নিয়ম খুবই স্পষ্ট। লোকের উচিত তা শুধু অনুসরণ করা।’

কোভিড-১৯ সংক্রমণের লক্ষণ দেখা দিলে পরীক্ষার জন্য পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ‘যদি আপনি অসুস্থবোধ করেন, আপনার উচিত ঘরেই থাকা।’

হাত ধোয়ার জন্য বিপুল সচেতনতামূলক প্রচারণা সত্ত্বেও অনেকেরই এখনো নিয়মিত হাত ধোয়ার অভ্যাস হয়নি বলে মন্তব্য করেন ডা. হিন্দ।

দুই বা ততোধিক ব্যক্তির মাঝে নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব রক্ষায় ব্যর্থতা অপর একটি সাধারণ নিয়ম ভঙ্গ বলে মন্তব্য করেন ডা. হিন্দ আল আওয়াদি।

তিনি বলেন, ‘লোক সমাগম কখনোই ১০ জনের বেশি হওয়া উচিত নয়। সুতরাং, কোনো কিছু আয়োজন করা বা কোথাও যাওয়ার আগে দুই বার চিন্তা করুন।’

ডিএইচএ-এর এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের এক মুহূর্তের জন্য ভোলা উচিত নয়, আমরা বৈশ্বিক মহামারী অতিক্রমের চেষ্টা করছি। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা অনুসরণ আমাদের নিজেদের ও অন্যদের কোভিড-১৯ সংক্রমণ থেকে সুরক্ষায় বেশি কার্যকর, বিশেষ করে কর্মক্ষেত্রে ও লোক সমাবেশে। এর নিশ্চয়তায় প্রমাণও রয়েছে।

তিনি বলেন, সবশেষে ‘প্রত্যেকেরই নিজেকে ও সমাজকে রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা মেনে চলার সামাজিক দায়িত্ব রয়েছে।’

সূত্র : গালফ নিউজ

error: