বিএনপির নেতা–কর্মীদের পদ্মা সেতুতে না ওঠার আহ্বান জানালেন শাজাহান খান

সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী ও সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরী কমিটির সভাপতি সাংসদ শাজাহান খান বলেছেন, ‘খালেদা জিয়া বলেছিলেন পদ্মা সেতু তৈরি করতে পারব না। জোড়াতালি দিয়ে পদ্মা সেতু করা হচ্ছে। আপনারা কেউ পদ্মা সেতুতে উঠবেন না। এই সেতু ভেঙে পড়বে। তাই নেত্রীর কথা যদি রাখেন, তাহলে বিএনপির নেতা–কর্মীরা পদ্মা সেতুতে উঠবেন না।

আজ মঙ্গলবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মুক্ত দিবস উপলক্ষে স্থানীয় শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষা চত্বরে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথি শাজাহান খান বিএনপির নেতা–কর্মীদের পদ্মা সেতুতে না ওঠার আহ্বান জানিয়ে এসব কথা বলেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া মুক্ত দিবস উদ্‌যাপন পরিষদ এ কর্মসূচির আয়োজন করে।

সমাবেশে সাংসদ বলেন, ‘যেদিন খালেদা জিয়া পদ্মা সেতু পার হবেন, জিজ্ঞাসা করব আপনি আপনার ওয়াদা রক্ষা করছেন না কেন?  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ করেছেন। আগামী বছর সেতু দিয়ে যান চলাচল করবে।’

খালেদা জিয়ার সমালোচনা করে তিনি আরও বলেন, খালেদা জিয়া বলেছেন, এই সরকার কী উন্নয়ন করছে, মানুষ তা চোখে দেখে না। ছানি পড়লে যেমন মানুষ চোখে দেখে না। খালেদা জিয়ার চোখেও ছানি পড়েছে। তাই তিনি সরকারের উন্নয়ন চোখে দেখেন না। এখন ঘরে বসে হায় হায় করেন।’বিজ্ঞাপন

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নির্মাণের বিরোধিতা প্রসঙ্গে শাজাহান খান বলেন, ভাস্কর্য একটা শিল্প। এটি শুধুই বাংলাদেশেই নয়, পৃথিবীর অন্য মুসলিম দেশেও ভাস্কর্য রয়েছে। এ সময় তিনি ইরান, মিসর, সৌদি আরব, আরব আমিরাত, পাকিস্তানসহ বেশ কয়েকটি মুসলিম দেশে থাকা ভাস্কর্যের উদাহরণ দেন।

সম্প্রতি কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুরে জড়িত ব্যক্তিদের উদ্দেশ করে শাজাহান খান বলেন, ‘আপনারা ধর্মকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ও নিজের স্বার্থে ব্যবহার করেছেন। ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করবেন না।’

শাজাহান খান আলেম সমাজকে উদ্দেশ করে বলেন, চট্টগ্রামের সাবেক সার্কিট হাউসে জিয়াউর রহমানের ভাস্কর্য আছে। খালেদা জিয়া বিরোধী দলের নেতা থাকাকালে মিন্টো রোডের সরকারি বাসভবনে জিয়াউর রহমানের ভাস্কর্য ছিল। তখন কেউ জিহাদ ঘোষণা করেনি। আর আলেম সমাজ কোনো দিন বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচার চাননি।
অনুষ্ঠানে স্থানীয় সাংসদ র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেন, ‘আলেমদের আমি চ্যালেঞ্জ করেছি। ইসলামের কোথায় ভাস্কর্য নিষিদ্ধ আছে দেখানোর জন্য। কারণ, ইসলাম ভাস্কর্যের ব্যাপারে নীরব ছিল। আলেম সমাজ ও ভাস্কর্যের বিরোধিতাকারীদের মূর্তি ও ভাস্কর্যের মধ্যকার পার্থক্য বুঝতে হবে।’

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল-মামুন সরকারের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন স্থানীয় সাংসদ র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, জেলা প্রশাসক হায়াত উদ দৌলা খান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান ও পৌরসভার মেয়র নায়ার কবির, মুক্তিযুদ্ধের গবেষক ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাহিত্য একাডেমির সভাপতি কবি জয়দুল হোসেন প্রমুখ।

error: