মেজর (অ:) সিনহা হত্যাকাণ্ড পরিকল্পিত: র‍্যাব

আজ এক প্রেস ব্রিফিং এ র‍্যাব জানিয়েছে,ইয়াবা পাচারের সঙ্গে ওসি প্রদীপের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়ায় পরিকল্পিতভাবে সিনহাকে হত্যা করা হয় ।

রোববার (১৩ ডিসেম্বর) এই ব্রিফিংয়ের র‍্যাব জানায়, জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময়ে ইয়াবা পাচারের বিষয়ে প্রদীপের বক্তব্য নিতে চান সিনহা, পরে টেকনাফ থানাতে প্রদীপের নেতৃত্বে একটি মিটিং এ লিয়াকতকে সিনহা হত্যার দায়িত্ব দেওয়া হয়। 

এর আগে রোববার (১৩ ডিসেম্বর) অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার চার্জশিট দাখিল করে র‍্যাব। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ১২ জন দোষ স্বীকার করে আদালতের অনুকম্পা চেয়ে জবানবন্দী দিয়েছেন বলে ব্রিফিংয়ে জানিয়েছেন র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ। 

ব্রিফিংয়ে আরো জানানো হয়, ইয়াবা ব্যবসা নিয়ে মেজর (অব) সিনহা ওসি প্রদীপের বক্তব্য নিতে চাইলে তিনি আগে সিনহাকে হুমকি দেয় ও পরে তাকে হত্যা করে। ‘যাস্ট গো’এর জন্য ভ্রমণ বিষয়ক তথ্যচিত্র ধারণের এক পর্যায়ে স্থানীয় মানুষের সাথে কথা বলে ইয়াবা কারবারে প্রদীপের সংশ্লিষ্টতার তথ্য পান সিনহা। সঙ্গে প্রদীপের বহুমুখী নির্যাতনের তথ্যও পান তিনি। এ নিয়ে টেকনাফ থানাতেই প্রদীপ সিনহাকে হুমকি দেন।

সিনহা সামান্য ক’দিনেই প্রদীপের ত্রাসের রাজত্বের সন্ধান পেলেও আইন শৃঙ্খলাবাহিনী কেন তা জানতো না এটা ব্যর্থতা কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে র‍্যাব এর দাবি আইন শৃঙ্খলাবাহিনী ব্যর্থ তা তারা মনে করেন না।

এর আগে রোববার (১৩ ডিসেম্বর) সকালে কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আসেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ র‌্যাবের সদস্যরা। এরপর সাড়ে ১০টার দিকে বিচারক তামান্না ফারাহ’র আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়।

মামলাটির তদন্ত সংস্থা জানায়, সিনহা হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী টেকনাফ থানার বরখাস্তকৃত ওসি প্রদীপ। তার নির্দেশেই এসআই লিয়াকত সিনহাকে গুলি করে। প্রদীপসহ ১৫ জনকে হত্যা মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে। আসামিদের ১৪ জনই গ্রেফতার আছে। একমাত্র পলাতক আসামি এএসআই সাগর।

কক্সবাজারের পিপি অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম বলেন, চার্জশিটে ১৫ জন আসামির নাম দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১৪ জন কারাগারে আছেন। একজন পলাতক।

গত ৩১ জুলাই টেকনাফে মেরিন ড্রাইভে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর অবসরপ্রাপ্ত সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ। এ ঘটনায় ৫ আগস্ট সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ নয়জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয় বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই লিয়াকত আলীকে।

এরপর অভিযুক্ত সাত পুলিশ সদস্য আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পরে তদন্তে নেমে র‌্যাব হত্যার ঘটনায় স্থানীয় তিনজন ছাড়াও এপিবিএন এবং প্রদীপের দেহরক্ষীসহ মোট ১৪ জনকে গ্রেফতার করে।

error: