লন্ডন মেয়র পদে পুনঃনির্বাচিত সাদিক খান

লেবার পার্টির বর্তমান মেয়র সাদিক খানের মেয়র পদ ধরে রাখার আগাম জরিপে স্পষ্ট এগিয়ে থাকলেও নির্বাচনে কম ভোটার উপস্থিতি চাপে ফেলে দিয়েছিলো সাদিক খানকে। তবে কনজারভেটিভ পার্টির প্রতিদ্বন্দ্বী শাউন বেইলির সাথে লড়াইটা হয়েছে বেশ হাড্ডাহাড্ডি।

সাদিক খানের মোট প্রাপ্ত ভোট ১২ লক্ষ ৬ হাজার ৩৪ আর দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা শাউন বেইলি পেয়েছেন ৯ লক্ষ ৭৭ হাজার ৬০১ ভোট। মোট ভোটে শতকরা হিসেবে সাদিক পেয়েছেন ৫৫.২ ভাগ আর শাউন বেইলি ৪৪.৮ ভাগ। তৃতীয় অবস্থানে রয়েছেন গ্রীন পার্টির সেইন বেরী। তার প্রাপ্ত মোট ভোট ১ লক্ষ ৯৭ হাজার ৯৭৬। লন্ডনে মোট ভোটার উপস্থিতি ছিলো ৪২.২ ভাগ।

লন্ডনে লেবার পার্টি বরাবর শক্তিশালী হওয়ায় এবং অভিবাসী ভোটারদের সমর্থন সাদিক খান বেশী পাওয়ায় তার জয় অনেকটা সহজ ও নিশ্চিত বলে ধরে নেয়া হয়েছিলো। তবে শেষ পর্যন্ত শাউন বেইলি শক্ত প্রতিপক্ষ হিসেবেই আত্মপ্রকাশ করলেন।

যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টি এবারের সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোটের ব্যবধানে বিরোধী দল লেবার পার্টি থেকে ব্যাপক এগিয়ে রয়েছে। লেবার পার্টির বেশকিছু হাতের আসন এবার দখলে নিয়েছে কনজারভেটিভ।

এর আগে ২০১৬ সালের মেয়র নির্বাচনে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির প্রার্থী জ্যাক গোল্ডস্মিথকে ৯ শতাংশ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে প্রথম মুসলিম হিসেবে লন্ডনের মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন বর্তমান বিরোধী দল লেবার পার্টির প্রার্থী সাদিক খান। পাকিস্তানী বংশদ্ভুত সাদিক এবার ইতিহাস গড়ে মেয়র পদে পুনঃনির্বাচিত হয়ে ফিরলেন।

বিগত পাঁচ বছরের সাদিক খানের কর্মকান্ডে সামাজিক মাধ্যমে নির্বাচন পূর্বে তীব্র রোষানলে পড়েছিলেন সাদিক খান। তবে লন্ডনে লেবারের বরাবরের ভালো অবস্থান তাকে জিততে সাহায্য করেছে। প্রতিশ্রুতিকৃত কাউন্সিল ঘর বৃদ্ধি করতে না পারা, লন্ডন শহরের ট্যাক্সি/ড্রাইভিং আলাদা কনজেশন খরচ বৃদ্ধি. সাথে লন্ডনে প্রচুর পরিমাণে নাইফ ক্রাইম বৃদ্ধি পাওয়াসহ নানা ক্ষোভ, অভিযোগ ছিলো তার বিরুদ্ধে। দ্বিতীয় দফায় নির্বাচত হওয়ার পরে এটি তার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে আগের ব্যার্থতাগুলো কাটিয়ে উঠতে।

এবারের লন্ডন মেয়র নির্বাচনে প্রার্থীদের বড় চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে ছিলো লন্ডনে বৃদ্ধি পাওয়া নাইফ ক্রাইম রোধ, হাউজিং, পরিবেশ, এবং করোনা ভাইরাস পরবর্তী সময়ে চাকরি/কর্মসংস্থান বৃদ্ধি উল্লেখযোগ্য। তবে করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক চাপ মোকাবেলা এবং নতুন চাকরি সৃষ্টিই বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দেয়। অর্থনৈতিক চাপ মোকাবিলা আর নতুন চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সাদিক খান। এবার দেখার পালা দ্বিতীয় দফায় সাদিক খান লন্ডনবাসীর আস্থা রাখতে পারেন না।

error: