আজ টিকার প্রয়োগ, প্রথম নেবেন রুনু বেরুনিকা কস্তা

আজ বুধবার বাংলাদেশের মানুষ প্রথম করোনার টিকা পাবেন। রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে একজন নার্সসহ ২৫ জনকে টিকা দেওয়ার মধ্য দিয়ে বহুকাক্সিক্ষত করোনার টিকাদান কার্যক্রম শুরু হচ্ছে দেশে। এর মধ্য দিয়ে করোনা নিয়ন্ত্রণে বিশ্বের কয়েকটি দেশের মতো বাংলাদেশও ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ে করোনার টিকা কর্মসূচিতে প্রবেশ করল। এমনকি ভারতের পর দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশই এগিয়ে থাকল টিকাদানে। করোনা নিয়ন্ত্রণে নানা উদ্যোগের পাশাপাশি টিকা কর্মসূচির মতো সাহসী পদপেক্ষ নিল বাংলাদেশ।

আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিকেল সাড়ে ৩টায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে টিকাদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন। তিনি ভিডিও কনফারেন্সেই প্রথম পাঁচজনের ওপর টিকার প্রয়োগ সরাসরি প্রত্যক্ষ করবেন। পরে এই হাসপাতালেই জাতীয় তালিকা অনুযায়ী অগ্রাধিকার প্রত্যেক শ্রেণির একজন করে বিভিন্ন পেশার আরও পাঁচজনকে টিকা দেওয়া হবে। এরপরই টিকার নিবন্ধন করতে সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হবে অ্যাপ ‘সুরক্ষা’। সেখানে টিকা নিতে ইচ্ছুক সরকারি তালিকাভুক্ত শ্রেণির মানুষ নিবন্ধন করতে পারবে। এরপর আগামীকাল বৃহস্পতিবার টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ও টিকাদানের সার্বিক অভিজ্ঞতা যাচাই করতে পরীক্ষামূলক টিকা প্রয়োগ করা হবে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালসহ রাজধানীর পাঁচ হাসপাতালে। এসব হাসপাতালের ৪০০-৫০০ স্বাস্থ্যকর্মীকে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত টিকা দেওয়া হবে। পরে তাদের সাত দিন পর্যবেক্ষণ করবে সরকার। সে পর্যবেক্ষণের ফল অনুযায়ী সারা দেশে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হবে।

গতকাল কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল পরিদর্শন করতে এসে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, দেশব্যাপী ভ্যাকসিন প্রদানের জন্য আমরা নানা ব্যবস্থা নিয়েছি। আশা করি, ৭ ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী ব্যাপক হারে আমরা ভ্যাকসিন কার্যক্রম শুরু করতে পারব।

ইতিমধ্যেই কুর্মিটোলাসহ পাঁচ হাসপাতালে পরীক্ষামূলক টিকাদানের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অবশিষ্ট চার হাসপাতাল হলো ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল। এসব হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তারা চিকিৎসক, নার্স, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও প্রশাসনের লোকজনসহ ১০০ জনের মতো স্বাস্থ্যকর্মীর তালিকা চূড়ান্ত করেছেন। তবে কাউকে জোর করে টিকা দেওয়া হবে না। যারা স্বেচ্ছায় টিকা নিতে চান, কেবল তারাই টিকা পাবেন।

এর আগে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনার টিকা ‘কভিশিল্ড’ বাংলাদেশে আনার ক্ষেত্রেও সফল হয় সরকার। নানা আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে ভারতের উপহারের ২০ লাখ টিকা পাঁচ দিন আগে দেশে আসে। দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশসহ দুটি দেশেই প্রথম এই টিকা পাঠায় ভারত। এতে দেশের মানুষের মধ্যে টিকার ব্যাপারে ব্যাপক স্বস্তি আসে। সর্বশেষ গত সোমবার আসে সরকারের কেনা তিন কোটি টিকার মধ্যে প্রথম চালানের ৫০ লাখ টিকা। শুরু থেকেই চুক্তি অনুযায়ী সময়মতো টিকা আসবেসরকার ও বেক্সিমকোর এমন বক্তব্য সত্য হয়। টিকাদান কর্মসূচি শুরুর ব্যাপারে আর কোনো দ্বিধা থাকে না। বেক্সিমকো চুক্তির তিন কোটি টিকার মধ্যে অবশিষ্ট ২ কোটি ৫০ লাখ টিকা প্রতি মাসে ৫০ লাখ করে এনে সরকারকে দেবে। পাশাপাশি কোভ্যাক্স থেকে দেশের ২০ শতাংশ মানুষের জন্য টিকা আসার সম্ভাবনা রয়েছে। কোভ্যাক্স থেকে ফাইজারের ৮ লাখ টিকা পেতে ইতিমধ্যেই সবুজ সংকেত পেয়েছে সরকার। সে প্রস্তুতিও শেষ। এর বাইরে প্রয়োজনে আরও টিকা কেনার পরিকল্পনা আছে সরকারের।

অবশ্য টিকাদান শুরুর ও টিকা পাওয়ার পর মানুষের করণীয় ব্যাপারে সরকারকে ও জনগণকে বেশকিছু পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেছেন, সরকারকে স্বচ্ছতার ভিত্তিতে টিকা দিতে হবে। কোনোভাবেই টিকা নিয়ে যেন কারও মধ্যে কোনো ধরনের সংশয় না থাকে, সে জন্য সরকারকে টিকাদান কর্মসূচির ওপরে সার্ভিলেন্স করতে হবে। সেখান থেকে যে তথ্য আসবে, তা মানুষকে জানাতে হবে। পাশাপাশি বিশেষজ্ঞরা এমনও বলেছেন, টিকা নিলেও মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতেই হবে। বিশেষ করে মাস্ক ব্যবহার ছাড়া যাবে না। কারণ নতুন এই টিকার ব্যাপারে বিশ্বের কারোরই সঠিক কোনো তথ্য জানা নেই। সে কারণে টিকার পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মানতে পারলে করোনা নির্মূল সম্ভব হবে।

বিশেষ করে দেশের মানুষকে টিকা নিতে উদ্বুদ্ধ করতে বিশেষজ্ঞরা বড় ব্যক্তি যারা আছেন, তাদের টিকা নিতে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।

টিকাদান শুরুর ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম দেশ রূপান্তরকে বলেন, আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে। এখন টিকাদান শুরু করতে পারলে বোঝা যাবে নতুন কোনো প্রস্তুতি লাগে কি না। তবে সার্বিকভাবে প্রস্তুতি চলছে।

এই কর্মকর্তা আরও বলেন, দেশজুড়ে টিকাদান শুরুর ব্যাপারে আমরা আরও কিছুদিন সময় পাব। পাঁচ হাসপাতালে টিকার প্রয়োগ থেকেও অভিজ্ঞতা হবে। ৩০ জানুয়ারির মধ্যেই টিকাদানের সব ধরনের প্রশিক্ষণ শেষ হবে। আশা করছি ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহের শেষে আমরা গণ টিকাদান শুরু করতে পারব।

টিকা ব্যবহারের উপযোগিতা সনদ দিল ঔষধ অধিদপ্তর : গতকাল ভারত থেকে আসা অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনার টিকা ব্যবহারের উপযোগিতা সনদ দিয়েছে সরকারের ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। এর ফলে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে দেশে আসা ৫০ লাখ টিকা প্রয়োগে আর কোনো বাধা রইল না। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। এই কর্মকর্তা জানান, ভারত থেকে আসা টিকার প্রতিটি লটের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। বুধবার রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে এই টিকা দিয়েই বাংলাদেশে শুরু হবে কভিড-১৯-এর টিকাদান প্রক্রিয়া।

প্রস্তুত কুর্মিটোলাসহ পাঁচ হাসপাতাল : গতকাল দুপুরে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে আজকের টিকাদান কর্মসূচি উদ্বোধনের জোর প্রস্তুতি চলছে। হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জামিল আহমেদ বলেন, ‘উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে করার জন্য আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি।

পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালেও করোনার টিকাদানের প্রস্তুতি নিতে দেখা গেছে। এই পাঁচ হাসপাতালেই আগামীকাল বৃহস্পতিবার সম্মুখসারির স্বাস্থ্যকর্মীদের টিকা দেওয়া হবে। এই পাঁচ হাসপাতালের পাঁচ পরিচালক দেশ রূপান্তরকে বলেন, তারা ভ্যাকসিন কর্মসূচি চালু করতে প্রস্তুতি নিয়েছেন, তারা প্রস্তুত। তবে তাদের কেউ কেউ বলছেন, জাতীয়ভাবে কর্মসূচি চালু হওয়ার পর কিছুটা সমস্যা হতে পারেযেটা চ্যালেঞ্জ মনে হচ্ছে। তবে সেসব কিছু মাথায় নিয়েই কাজ করছেন তারা। প্রথম দিন যদি সবকিছু ঠিক ভাবে করা যায়, তাহলে মানুষের আস্থা আসবে, ধীরে ধীরে ভ্যাকসিন নিতে মানুষ উদ্বুদ্ধ হবে।

টিকা নিয়ে সংশয় নেই : কভিশিল্ড টিকা নিয়ে কোনো সংশয় নেই বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, টিকা আনা হয়েছে বাংলাদেশের মানুষকে রক্ষা করতে, শরীরে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে। এজন্য গত ৯ মাস ধরে কাজ করে যাচ্ছে সরকার। কাজেই করোনাভাইরাসের টিকা সরকারের কাছে কোনো রাজনীতি নয়। এটা মানুষের জীবনরক্ষা করতে আনা হয়েছে। যারা এই টিকা নিয়ে বিরূপ প্রচার চালাচ্ছেন, তারা ভালো কাজ করছেন না। তারা এদেশের মানুষের মঙ্গল কামনা করলে এটা নিয়ে বিরূপ প্রচার চালাবেন না।

এর আগে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালকও এই টিকায় কোনো সমস্যা নেই বলে জানান। তিনি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এই ভ্যাকসিন অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি। যুক্তরাজ্যের সর্বোচ্চ সংস্থা এই টিকা ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে এবং সে দেশে এটি প্রয়োগ করা হচ্ছে। ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার মানদণ্ড অনুযায়ী বিশ্বামানের টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। গত ১৬ জানুয়ারি থেকে ভারত এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করছে। ভারতের সেসব কাগজও পরীক্ষা করা হয়েছে।

আজ উদ্বোধনের পর নিবন্ধন : আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধনের পরই নিবন্ধনের জন্য অনলাইন ‘সুরক্ষা’ প্ল্যাটফর্ম খুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। গতকাল বিকেলে রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভ্যাকসিন কার্যক্রম উদ্বোধনের প্রস্তুতি পরিদর্শন শেষে তিনি একথা জানান। তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পরে নিবন্ধন শুরু হবে। তবে সেটা ওইদিনই হবে, নাকি তারপরের দিন হবে, সেটা এখনো জানা যায়নি। 

৭ ফেব্রুয়ারি থেকে সারা দেশে টিকাদান : গতকাল স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, সরকার আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে সারা দেশে টিকাদান কর্মসূচি শুরু করতে চায়। এ জন্য তিন কোটি করোনা টিকার প্রয়োগ পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হয়েছে। এ পরিকল্পনা অনুযায়ী আগামী ২৭ জানুয়ারি থেকে টিকার জন্য সরকারি তালিকাভুক্ত শ্রেণির নির্দিষ্ট পেশার ও বয়সের মানুষ নিবন্ধন করতে পারবেন। সুরক্ষা নামে একটি মোবাইল অ্যাপ ডাউনলোড করে নিবন্ধন করা যাবে। নিবন্ধনের জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্মসনদ লাগবে। নিবন্ধনের পর তথ্য যাচাইবাছাই করে নির্দিষ্ট ব্যক্তির মোবাইলে খুদেবার্তার মাধ্যমে টিকা নেওয়ার দিন, সময় ও কেন্দ্রের নাম জানিয়ে দেওয়া হবে।

পরিকল্পনা অনুযায়ী অগ্রাধিকারভিত্তিতে ২৩ শ্রেণির মানুষকে প্রথম দফায় আসা তিন কোটি টিকা দেবে সরকার। দুই ডোজ করে দেড় কোটি মানুষ এই টিকা পাবে। এই টিকায় মোট জনসংখ্যার ৮ দশমিক ৬৮ শতাংশ পূরণ হবে।

এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম জানান, সব কিছু ঠিক থাকলে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহের শেষ দিন থেকে মাঠ পর্যায়ে করোনাভাইরাসের টিকা দিতে শুরু করবে সরকার।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, কভিড-১৯ ভ্যাকসিন প্রয়োগ পরিকল্পনা অনুযায়ী, অন্তঃসত্ত্বা নারী ও ৩৭ শতাংশ জনগোষ্ঠী যারা ১৮ বছরের কম বয়সী, তাদেরও টিকা দেওয়া হবে না। কারণ, তাদের কোনো ট্রায়াল হয়নি। দেশের সব জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোতে ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য আলাদা টিম গঠন করা হয়েছে। এছাড়া, কয়েকটি বিশেষায়িত হাসপাতালে ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে। টিকা ব্যবস্থাপনার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও কাজ করবেন।

বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ : গতকাল টিকা নেওয়ার ব্যাপারে এক জরিপ প্রকাশ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউট। সেখানে ৫২ শতাংশ মানুষ টিকাদান শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই টিকা নিতে চান বলে জানানো হয়েছে। তবে টিকা নেওয়ার ক্ষেত্রে পরামর্শ দিয়েছেন এই ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক সৈয়দ আব্দুল হামিদ। তিনি গতকাল দেশ রূপান্তরকে বলেন, টিকা শুরু হওয়ার পর একটা সার্ভিলেন্স করতে হবে সরকারকে। সার্ভিলেন্সের কাঠামো এখনই তৈরি করে ফেলতে হবে। এটা থেকে যে ফল আসবে, সেটার প্রেক্ষিতে স্বচ্ছতার ভিত্তিতে সরকারকে টিকা দিতে হবে। মানুষ যখন সঠিক ও সব তথ্য পাবে, তখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোনো গুজবে কেউ কান দেবে না। যারা টিকা নেবেন, তাদের সব তথ্য নিবন্ধনে থাকবে।

এই গবেষক আরও বলেন, টিকা নেওয়ার পর আধ ঘণ্টা হাসপাতালে থাকবে। কিন্তু বাসায় যাওয়ার পর যদি কোনো ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়, সেটা জানতে যোগাযোগ রাখতে হবে। বড় ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হওয়ার আশঙ্কা নেই। কিন্তু যেহেতু মানুষের আতঙ্ক আছে, তাই সামান্য কিছু হলেই লোকজন মনে করবে বড় ক্ষতি হয়ে গেল। সেই জায়গাগুলোর ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। কভিডের সময় যেভাবে ফোন করে খবর নেওয়া হতো, এখানেও তাই করতে হবে।

এই শিক্ষক আরও বলেন, টিকা নিতে উৎসাহিত করার জন্য আমাদের বড় ব্যক্তি যারা আছেন, মন্ত্রী, আমলা, গবেষক অর্থাৎ বিভিন্ন সেক্টরে যত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি আছেন, টিকা নিতে তাদের এগিয়ে আসা উচিত। তারা যদি নেয়, তাহলে সমাজের অন্যদের মধ্যে যদি কোনো আশঙ্কা থেকে থাকে, তাহলে সেটা দূরীভূত হয়ে যাবে।

error: