পুর্ব ইউরোপে আরও ৪০ হাজার সৈন্য পাঠাচ্ছে ন্যাটো

ছবি: সংগৃহীত

স্লোভাকিয়া, হাঙ্গেরি, বুলগেরিয়া ও রোমানিয়ায় অতিরিক্ত ৪০ হাজার সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটো।

নেটো রেসপঞ্জ ফোর্সের কিছু সাজ-সরঞ্জাম মোতায়েনসহ পূর্বাঞ্চলে ৪০ হাজার সেনা পাঠিয়ে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করা হচ্ছে।

ইউক্রেইনে রাশিয়ার আগ্রাসনের জবাবে পশ্চিমা সামরিক জোট নেটোর নেতারা পূর্ব ইউরোপে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে একমত হয়েছেন।

ব্রাসেলসে ইউক্রেইন যুদ্ধ নিয়ে বৃহস্পতিবারের জরুরি বৈঠকের পর এক যৌথ বিবৃতিতে নেতারা বলেছেন, আমরা নেটোর প্রতিরক্ষা পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সক্রিয় পদক্ষেপ নিয়েছি বলে বিবৃতিতে জানিয়েছেন নেতারা। খবর বিবিসির।

সিএনএন জানিয়েছে, ইউক্রেইনে রাশিয়ার আগ্রাসনের জবাবে এই প্রথম প্রতিরক্ষার খাতিরে নেটো রেসপঞ্জ ফোর্সকে (এনআরএফ) কাজে লাগানো হচ্ছে।

বহুজাতিক এই বাহিনী স্থলপথ, আকাশ এবং সমুদ্র তিন বাহিনী নিয়ে গঠিত এবং এতে আছে বিশেষ অভিযান পরিচালনাকারী বাহিনীও। প্রয়োজনমতো এই বাহিনীকে দ্রুত কোনও স্থানে মোতায়েন করা যায়।

নেটোর সুপ্রিম এলায়েড কমান্ডার জেনারেল টড ওয়াল্টার বলেছেন, এ এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত। এবারই প্রথম উচ্চ-প্রস্তুতিস্পন্ন এবং প্রযুক্তিগত দিক থেকে উন্নত এই বাহিনীকে প্রতিরক্ষার জন্য নিয়োজিত করা হচ্ছে।

 এর আগে নেটো মহাসচিব ইয়েন্স স্টলটেনবার্গ এক সংবাদ সম্মেলনে হাঙ্গেরি, স্লোভাকিয়া, বুলগেরিয়া এবং রোমানিয়ায় আরও সেনা মোতায়েনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।

বৃহস্পতিবার জরুরি বৈঠকের পর তিনি এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ইউক্রেইনকে আরও সাহায্য করার জন্য নেতারা কী কী বিষয়ে একমত হয়েছেন সেগুলোও উল্লেখ করেছেন স্টলটেনবার্গ।

তিনি জানান, বর্তমানে নিরাপত্তায় নতুন বাস্তবিক পরিস্থিতিতে পূর্ব ইউরোপ অংশের স্থলভাগে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে আরও বেশি বাহিনীর উপস্থিতি থাকবে। এবং তারা উচ্চ পর্যায়ের প্রস্তুতি নিয়ে রাখবে।

তাছাড়া, আকাশপথের সুরক্ষার জন্য আরও জঙ্গি বিমান মোতায়েন করা হবে এবং সমুদ্রে ক্যারিয়ার স্ট্রাইক গ্রুপ, সাবমেরিন ও যুদ্ধজাহাজের অবিরাম উপস্থিতি থাকবে।

স্টলটেনবার্গ বলেন, ইউক্রেনে রুশ হামলার এক মাস পূর্ণ হলো। এই হামলার ফলে আসলে আমাদের নিরাপত্তা পরিস্থিতি দীর্ঘমেয়াদী পরিবর্তন ঘটে গেছে এবং ন্যাটো মনে করছে, অনাগত ভবিষ্যতের জন্য আমাদের প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন। সেই প্রস্তুতির অংশ হিসেবেই পূর্ব ইউরোপের চার দেশে আরও ৪০ হাজার সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

রাশিয়া ও ইউক্রেনের দ্বিপাক্ষিক তিক্ত সম্পর্কের একদম গোড়ায় আছে ন্যাটো। পশ্চিমা দেশগুলোর এই সামরিক জোটকে কেন্দ্র করে ২০০৮ সাল থেকে দ্বন্দ্ব চলছে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে। ওই বছরই ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য আবেদন করেছিল ইউক্রেন। সম্প্রতি ন্যাটো ইউক্রেনকে পূর্ণ সদস্যপদ না দিলেও ‘সহযোগী সদস্য’ মনোনীত করার পর আরও বাড়ে এই দ্বন্দ্ব।

এর পাশাপাশি আরও বেশি সামরিক সাজ-সরঞ্জাম সরবরাহ করাসহ সাইবার সুরক্ষাও জোরদার করা হচ্ছে এবং রাসায়নিক ও জীবাণু অস্ত্রর হুমকি থেকেও ইউক্রেইনকে সুরক্ষিত রাখতে নেটো সহায়তা করবে বলে জানান মহাসচিব স্টলটেনবার্গ।

তিনি বলেন, ইউক্রেইনে রাশিয়ার আগ্রাসন এ প্রজন্মের সবচেয়ে বড় নিরাপত্তা সংকট তৈরি করেছে এবং আমরা আমাদের জোট শক্তিশালী করা এবং আমাদের জনগণকে নিরাপদ রাখতে একাট্টা হয়েছি।

error: