এসাইলেমপ্রার্থীদের আবাসন ব্যাবস্থা নিয়ে ওয়াচডগের অভিযোগ

যুক্তরাজ্যের ইমিগ্রেশন ওয়াচডগ বলেছে ওয়েদারসফিল্ড সাইটে আশ্রয়প্রার্থীদের ‘একঘেয়েমির কারণে সৃষ্ট হতাশাই’ অনিবার্যভাবে ক্ষতির দিকে পরিচালিত করবে।

যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এই বিষয়ে একটি সতর্কতা ইতোমধ্যে পেয়েছেন, আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য ব্যবহৃত যুক্তরাজ্যের বৃহত্তম আবাসন সাইটটি বিভিন্ন অপরাধ, অগ্নিসংযোগ এবং কর্মীদের উপর হামলার সম্ভাবনার ঝুঁকিতে রয়েছে।

ইমিগ্রেশন ওয়াচডগের ডেভিড নিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লিভারলিকে লিখেছেন, ওয়েদারসফিল্ড সাইটে একঘেয়েমি দ্বারা সৃষ্ট হতাশার কারণে শত শত যুবকদের মধ্যে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়তে পারে। ডিসেম্বর এবং ফেব্রুয়ারি মাসের দুইটি ভিজিট হতে এসেক্সের নিকটবর্তী সাইট সম্পর্কে এই নেতিবাচক ধারনা আসে বলে জানান চিফ ইন্সপেক্টর নিল।

খবরে জানা যায়, হোম অফিস এসেক্স এয়ারবেসে আশ্রয়প্রার্থী ৫৬৫ থেকে ৮০০ জনে উন্নিত করার পরিকল্পনা নিয়েছে। এসেক্স এয়ারবেস সাইটটি সিসিটিভি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। সাইটের আশেপাশের রাস্তায় কোনও ফুটপাথ নেই এবং কোনও পাবলিক ট্রান্সপোর্টও এই পথ ব্যবহার করে না।

ডিসেম্বরে জেমস ক্লিভারলিকে চিঠিতে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়, আশ্রয়প্রার্থীদের যে পরিস্থিতিতে রাখা হচ্ছে তা মানসিক চাপের সৃষ্টি করছে। আবাসনে কোনো ওয়াইফাই নেই। বিনোদনের ব্যবস্থা খুবই সীমিত বিধায় ক্রমবর্ধমান মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা আশ্রয়প্রার্থীদের সাথে সাইটের কর্মীদের সম্পর্ক একটি ভাঙ্গনের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে নীল আরো বলেন, ২০১৫ সালে কেমব্রিজের নিকটবর্তী বাসিংবার্ন ব্যারাকসে লিবিয়ান ক্যাডেটদের দ্বারা স্থানীয় বাসিন্দাদের উপর যেভাবে হামলা হয়েছিল একই ঘটনা ওয়েদারসফিল্ডে দেখা যেতে পারে।

নীল জানান, হোম অফিসের উচিত প্রিজন্স সার্ভিসের নিকট হতে পরামর্শ নেয়া, কিভাবে একটি কারাগারে শত শত লোককে কন্ট্রোল করা হয়। আমি বেশ কয়েকজন আশ্রয়প্রার্থীদের সাথে কথা বলেছি এবং এটি স্পষ্ট বুঝতে পেরেছি যে একঘেয়েমি দ্বারা সৃষ্ট হতাশার এক অপ্রতিরোধ্য অনুভূতি ছিল তাদের মধ্যে। যা আমার অভিজ্ঞতায় বলে সহিংসতার দিকে সাইটটি ধীরে ধীরে এগুচ্ছে।

চ্যারিটি কেয়ার ফোর ক্যালাইসের সিইও স্টিভ স্মিথ হোম অফিসের কাজের উপর মন্তব্য করতে গিয়ে বলেন, ওয়াচডগ পরিদর্শকের চিঠি হতে স্পষ্ট সতর্কীকরণ বার্তা পাওয়া যায়। তিনি পরিষ্কার বর্ণনা করেছেন জঘন্য পরিবেশের বিষয়ে। কিন্তু দুইমাস অতিবাহিত হবার পরও হোম অফিস কোনো ব্যবস্থাই গ্রহণ করে নাই। হোম অফিস ওয়েদারসফিল্ড সাইটের আশ্রয়প্রার্থীদের জীবনের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারে নাই।

হোম অফিসের এক মুখপাত্র বলেছেন, ওয়াচডগ পরিদর্শক নীলের মূল্যায়নের সাথে আমরা একমত নই। আমরা ওয়েদার্সফিল্ডে আশ্রয়প্রার্থীদের সুরক্ষা এবং তাদের কল্যাণকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করি। নিরাপত্তা ও অগ্রাধিকার দেওয়ার বিষয়ে আমরা আরো গুরুত্ব বাড়িয়ে দিবো। ওয়েদারসফিল্ডে পুরুষ আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত এবং কার্যকরী আবাসন সরবরাহের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। আমরা তাদের উপাসনা সুবিধা এবং একটি বৃহৎ জিমনেসিয়াম ব্যবস্থা গড়ে তোলার পরিকল্পনা করছি। যাতে তাদের বিনোদনের ব্যবস্থা করা যায় এবং মানসিক প্রশান্তি নিয়ে আসে।

সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান

error: